ঢাকা, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

দেশে সোনা পাচার চক্রে জড়িত ১৩৭৫ জন

২০২৪ জুন ১৩ ০৯:১৮:৪২
দেশে সোনা পাচার চক্রে জড়িত ১৩৭৫ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ মূলত আন্তর্জাতিক সোনা চোরাচালান চক্রের ট্রানজিট রুট। সোনা আসে দুবাই, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর থেকে। সেই সোনার ৯০ শতাংশই সাত জেলার সীমান্ত দিয়ে পাচার হচ্ছে ভারতে। এই পাচারের সঙ্গে জড়িত আছেন ১ হাজার ৩৭৫ জন। তাঁদের কেউ কারবারি, কেউ পৃষ্ঠপোষক, কেউবা বাহক। একাধিক বাহিনীর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সোনা চোরাচালানে জড়িতদের এই তালিকা করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

সোনা ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) ধারণা, আকাশপথ, সমুদ্রপথ ও স্থলপথে দেশে প্রতিদিন চোরাচালানের মাধ্যমে কমপক্ষে ২৫০ কোটি টাকার সোনার অলংকার ও বার ঢুকছে। এ হিসাবে বছরে প্রায় ৯১ হাজার ২৫০ কোটি টাকার বা তারও বেশি সোনা অবৈধভাবে দেশে ঢুকছে।

দেশে বৈধ-অবৈধ সোনা প্রবেশের মূল পথ ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। কিছু আসে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে। এই দুই বিমানবন্দরের কাস্টমস সূত্র বলছে, ২০২২ সালে বৈধভাবে দেশে ৪৬ লাখ ভরি সোনা এসেছে। তবে তাঁদের ধারণা, এই সময় অবৈধভাবে এসেছে প্রায় ৯৮ লাখ ভরি সোনা।

গত ১০ বছরে বিমানবন্দরের শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), পুলিশ এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ২ হাজার ৫৮৩ কেজি সোনা জব্দ করেছে। বিজিবির তথ্য অনুযায়ী, ভারতের সঙ্গে সীমান্ত এলাকায় চোরাই সোনার চালান জব্দের ঘটনা বাড়ছে। গত পাঁচ বছরে সীমান্ত এলাকায় বিজিবি আটক করেছে ৫৪৫ কেজি সোনা।

তবে বিমানবন্দর ও সীমান্ত এলাকায় যে পরিমাণ সোনা ধরা পড়ছে, পাচার হচ্ছে তার কয়েক গুণ বেশি। বিমানবন্দর থেকে অবৈধ সোনার চালান বের করতে অর্থের বিনিময়ে সহযোগিতা করেন অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। যাঁরা সোনাসহ ধরা পড়েন, তাঁরা প্রায় সবাই বাহক। কারবারি ও চক্রের পৃষ্ঠপোষকদের নাম প্রকাশ পায় না। হোতারা ধরা না পড়ায় সোনা চোরাচালানও বন্ধ হয় না।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র বলছে, সারা দেশে সোনা চোরাচালানের ৬৩১টি মামলার তদন্ত চলছে। এ ছাড়া সোনা পাচারের গডফাদারদের বিরুদ্ধে ২১টি মানি লন্ডারিং মামলার তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তবে বছরের পর বছর পার হলেও এসব মামলার তদন্তে অগ্রগতি তেমন একটা দেখা যায় না।

দেশে স্বর্ণের বার, অলংকার ও তরল সোনা প্রবেশ করছে। কখনও প্রবাসী যাত্রীদের মাধ্যমে স্বর্ণ পাঠায় গ্যাংরা, আবার কখনও বিমানের সিটের নিচে বা অন্য কোথাও সোনা রেখে দেয়। শাহজালাল বিমানবন্দরের একাধিক সংস্থা ও কাস্টম কর্মকর্তাদের সূত্র বলছে, বিদেশ থেকে আসা উড়োজাহাজ যাত্রী নামানোর পর ১১ ও ১২ নম্বর পার্কিংয়ে চলে যায়। সেখানে রোস্টার অনুযায়ী থাকা চোরাচালানি চক্রের লোক উড়োজাহাজে উঠে ওই সোনা নিয়ে আসে। তারা বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং বিভাগের কর্মী।

দীর্ঘদিন বিমানবন্দরে দায়িত্ব পালন করা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, সোনা চোরাচালানের তথ্য বিমানবন্দরের কিছু অসাধু কর্মকর্তা আগে থেকেই জানেন। তাঁরা কমিশন নিয়ে চালান পার করে দেন। বিমানবন্দর থেকে তাঁদের কেউ অন্যত্র বদলি হলেও নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত মাসোয়ারা পান তিনি। তবে এই অসাধু কর্মকর্তাদের নজর এড়িয়েও সোনার চালান বের হয়। অবশ্য তাঁদেরই কেউ পুরো টাকা একা নিতে এই কাজ করেন।

শেয়ারনিউজ, ১৩ জুন ২০২৪

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে