ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

মাতাল হাওয়ায় উড়ছে ইমাম বাটনের শেয়ার

২০২৩ অক্টোবর ২৪ ২২:০৫:৫৫
মাতাল হাওয়ায় উড়ছে ইমাম বাটনের শেয়ার

নিজস্ব প্রতিবেদক : ৩০ জুন ২০২৩ পর্যন্ত সমাপ্ত অর্থবছরের লোকসানের অজুহাতে ডিভিডেন্ড দিতে ব্যর্থ হয়েছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি ইমাম বাটন। কিন্তু নো ডিভিডেন্ড ঘোষণার পরও অদৃশ্য কারণে মাতাল হাওয়ায় কোম্পানিটির শেয়ারদর বাড়ছে। বিষয়টি স্বাভাবিকভাবেভাবে মেনে নিতে পারছেন না বাজার সংশ্লিষ্টরা।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যেখানে ডিভিডেন্ড দেয়ার পরও কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর কমছে, সেখানে এমন একটি লোকসানী ও বছরের পর বছর ভিডিডেন্ড দিতে ব্যর্থ হওয়া কোম্পানির শেয়ারদর কিভাবে বাড়ে? এর মধ্যে অবশ্যই রহস্য রয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার দাবিও জানান তারা।

জানা যায়, চলতি মাসের ২১ তারিখে অনুষ্ঠিত কোম্পানিটির বোর্ড সভায় বিনিয়োগকারীদের কোনো ডিভিডেন্ড না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ। ২০১০ সাল থেকে বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড থেকে বঞ্চিতরাখলোকোম্পানিটি।

এক বছরের দরচিত্র

সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১ টাকা ৭ পয়সা। আগের বছর একই সময় যার পরিমাণ ছিল ৪৯ পয়সা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসানের পরিমাণ বেড়েছে ৫৮ পয়সা।

আলোচ্য অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ৪ টাকা ২৫ পয়সা। আগের অর্থবছরে একই সময় যার পরিমাণ ছিল ৫ টাকা ৩২ পয়সা। এক বছরের ব্যবধানে শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য কমেছে ৭ পয়সা।

অথচ ৬ মাসের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৮৩ টাকা ৫০ পয়সা। গত ১ মার্চ ২০২৩ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ৮২ টাকা ৪০ পয়সা। যা গত ২৩ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে দাঁড়িয়েছে ১৬৫ টাকা ৯০ পয়সায়।

ডিভিডেন্ড ঘোষণার আগের কর্মদিবসে কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ১৪৪ টাকা ৮০ পয়সা। যা গত ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত মাত্র ২ কর্মদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার ১৬৫ টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন হয়। অর্থাৎ ২ কর্মদিবসের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ২১ টাকা ১০ পয়সা।

১৯৯৬ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানিটির অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধন যথাক্রমে ১০ কোটি টাকা ও ৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা। বর্তমানে পুঁঞ্জিভুত লোকসানের পরিমাণ ৩ কোটি ২২ লাখ টাকা। লোকসানের কারণে কোম্পানিটির পিই রেশিও নেগেটিভ।

বর্তমান নেতিবাচক বাজার পরিস্থিতিতে ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর যেখানে তলানিতে অবস্থান করছে, সেখানে এমন একটি লোকসানি ও ঝুঁকিপূর্ণ কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধি পাওয়াটা প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

ডিএসইর তথ্যানুযায়ী গত ২০২২ সালের ১ মার্চ থেকে কোন আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি কোম্পানিটি। তবে অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির কারণে এই পর্যন্ত কোম্পানিটিকে ৮বার শোকজ করা হয়েছে।

দুই বছরের দরচিত্র

গত এক বছরের মধ্যে কোম্পানিটির সর্বনিম্ন শেয়ারদর ছিল ৮১ টাকা ৬০ পয়সা। যা সর্বশেষ ২৩ অক্টোবর দাঁড়িয়েছে ১৬৫ টাকা ৯০ পয়সায়। ৩০ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ২৩ টাকা ৭০ পয়সা। যা গত বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। মাত্র এক বছর ৯ মাসের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ১৪২ টাকা ২০ পয়সা।

সবকিছু পর্যালোচনা করে এটাই স্পষ্টভাবে বোঝা যায়, এই কোম্পানির শেয়ারদর স্বাভাবিকভাবে বাড়ছে না। একটি চক্র কৌশলে শেয়ারটি নিয়ে গেম করছে। শুধুমাত্র শোকজের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে এর বিরুদ্ধে কার্যকরি ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা ও বিশেষজ্ঞরা।

শেয়ারনিউজ, ২৪ অক্টোবর ২০২৩

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে