ঢাকা, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
Sharenews24

৫৯তম বিবাহবার্ষিকীর দিনই শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়!

২০২৫ নভেম্বর ১৭ ১৬:৫৮:১২
৫৯তম বিবাহবার্ষিকীর দিনই শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়!

নিজস্ব প্রতিবেদক: জুলাই–আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পলাতক ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১। সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হয়। উল্লেখ্য, কাকতালীয়ভাবে এদিনটি ছিল শেখ হাসিনা ও প্রয়াত পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম. এ. ওয়াজেদ মিয়ার ৫৯তম বিবাহবার্ষিকী।

রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনালের প্রধান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ। ৪৫৩ পৃষ্ঠার বিশদ রায়ে ছয়টি পৃথক অংশ রয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে—শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। দুটি অভিযোগে শেখ হাসিনাকে ফাঁসির দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। একটি অভিযোগে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। আর রাজসাক্ষী হওয়ায় সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।

রায়ে বিচারকাজ চলাকালে উপস্থাপিত বিভিন্ন অডিও, ভিডিও এবং নথিপত্র বিশ্লেষণ করে আন্দোলন চলাকালে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড, নিপীড়ন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হয়। বিশেষ করে কোটা সংস্কার আন্দোলন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা, এবং পরবর্তী সময়ে যাত্রাবাড়ী, রামপুরা, বাড্ডা, সাভার, আশুলিয়া, রংপুরসহ বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী গুলিবর্ষণের তথ্য–প্রমাণ রায়ে গুরুত্বসহকারে উল্লেখ করা হয়। ট্রাইব্যুনালে কয়েকটি টেলিফোন আলাপও উপস্থাপন করা হয়, যা রায় ঘোষণার সময় আদালতে শোনানো হয়। আন্দোলন–সম্পর্কিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর রিপোর্টও রায়ে উদ্ধৃত হয়।

রায়ের পুরো কার্যক্রম বাংলাদেশ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। এতে বিচার প্রক্রিয়ার বিভিন্ন অংশ—সাক্ষ্য, দলিল, ভিডিও–প্রমাণ উপস্থাপন এবং অভিযোগগুলোর পর্যালোচনার অংশ—জনগণের সামনে উন্মুক্তভাবে তুলে ধরা হয়।

একই দিনে ব্যক্তিজীবনের স্মৃতি: বিবাহবার্ষিকী সম্পন্ন হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর কারাবাসে

১৭ নভেম্বর ছিল শেখ হাসিনা ও বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম. এ. ওয়াজেদ মিয়ার বিয়ের দিন। ১৯৬৭ সালের এই দিনে তাদের বিবাহ সম্পন্ন হয়, যখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কারাগারে ছিলেন। রাজনৈতিক টানাপোড়েন ও সংগ্রামে জড়ানো এ পরিবারটির দাম্পত্য জীবন বাংলাদেশের ইতিহাসে বিশেষভাবে স্মরণীয়।

ড. এম. এ. ওয়াজেদ মিয়া ১৯৪২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি রংপুরের পীরগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর এবং পরবর্তী সময়ে যুক্তরাজ্যের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি অর্জন করেন। তিনি বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তাদের দুই সন্তান—সজীব ওয়াজেদ জয় এবং সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। ২০০৯ সালের ৯ মে ওয়াজেদ মিয়া মৃত্যুবরণ করেন।

মুসআব/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে