ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর ২০২৫
Sharenews24

জমি দখল নিয়ে অপসোনিন গ্রুপকে ঘিরে অভিযোগের পাহাড়

২০২৫ নভেম্বর ০৬ ০৯:০৪:০৭
জমি দখল নিয়ে অপসোনিন গ্রুপকে ঘিরে অভিযোগের পাহাড়

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া এলাকায়, ব্যক্তি মালিকানাধীন ১০ একরের বেশি জমি দখল করেছে ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান অপসোনিন গ্রুপ। এটি নলছিটি উপজেলার তিমিরকাঠি ইউনিয়নের শতাধিক বাসিন্দার পৈতৃক সম্পত্তি বলে জানা গেছে। এছাড়া, কীর্তনখোলা নদী ভরাট করে জমি দখল করার অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। স্থানীয়দের দাবি, গত কয়েক বছর ধরে এই জমিগুলি অপসোনিন গ্রুপের দখলে রয়েছে।

তিমিরকাঠি এলাকার নদী ভাঙনের পর জেগে ওঠা জমিগুলিকে সিকস্তি জমি বলা হয়, অর্থাৎ নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়া জমি। এই জমি যদি ৩০ বছরের মধ্যে নতুন চর হিসেবে উঠে আসে, তবে এটি সরকারের অধীনে খাস জমি হিসেবে চলে আসে। কিন্তু, স্থানীয়রা দাবি করছেন, অপসোনিন গ্রুপ সিকস্তি জমির অধিকারী স্থানীয়দের জমি দখল করে নিয়ে ব্লক ফেলেছে, এমনকি নদীও দখল করেছে।

একাধিক স্থানীয় ভূমিহারা, যেমন রমজান আকন এবং মো. হাসান, জানিয়েছেন যে তাদের জমি একসময় নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু পরে ওই জমি জেগে উঠলে অপসোনিন কোম্পানির লোকজন তা দখল করে। তারা অভিযোগ করেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সহযোগিতায় তাদের আন্দোলন দমন করা হয় এবং অনেক সময় হামলার শিকার হন।

সেই সময়ের ক্ষতিগ্রস্তরা আবারও জমি উদ্ধারের জন্য আন্দোলন শুরু করেছেন। তাদের প্রথম দাবি হল, প্রকৃত মালিকদের জমি ফিরিয়ে দেওয়া, দ্বিতীয়ত জমির খাজনা প্রদানের ব্যবস্থা করা এবং তৃতীয়ত, অতীতে তাদের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িতদের বিচার করা।

অপসোনিন গ্রুপের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তাদের দাবি, তারা কেবলমাত্র নদী সংলগ্ন জমি কিনে তা দখল করেছেন। তাদের এক কর্মকর্তা জানান, “আমাদের কোম্পানি নদী বা কারও ব্যক্তিগত জমি দখল করেনি। তবে নদী গর্ভে বিলীন হওয়া জমি থেকে চর জেগে উঠেছে এবং সেগুলোর মালিকানা পূর্ববর্তী মালিকদের কাছ থেকে ক্রয় করা হয়েছে।”

নদী গবেষক রফিকুল আলম জানিয়েছেন, কীর্তনখোলা নদী দখলদারদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে এবং অপসোনিন গ্রুপ এই দখলে শীর্ষে রয়েছে। তিনি বলেন, "তিমিরকাঠি এলাকার জমি আগে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু এখন সেই জমি পুনরায় জেগে উঠেছে এবং অপসোনিন গ্রুপ তা দখল করেছে।"

এ বিষয়ে বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল জানান, “কীর্তনখোলা নদীর পাড়ে পিলার বসানো হয়েছে, এবং যে জমি দখল হয়ে গেছে তা মুক্ত করার জন্য জেলা প্রশাসন, বিআইডব্লিউটিএ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড একযোগে কাজ করবে। কিন্তু এটি একটি যৌথ উদ্যোগ এবং শুধু প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিলে এর সমাধান সম্ভব নয়।”

এই পরিস্থিতিতে নদী দখল, জমি পুনরুদ্ধার এবং ক্ষমতার অপব্যবহার—এমন একাধিক বিষয়ের মধ্যে দেশীয় রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক শক্তির সংঘর্ষের বিষয়টি নতুন করে আলোচিত হচ্ছে। স্থানীয়দের আন্দোলন এখনো চলমান এবং তারা উচ্ছেদ অভিযানের আশায় রয়েছেন।

মুসআব/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে