নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক, তুলি সম্প্রতি এক বক্তৃতায় দলের গুম হওয়া নেতাকর্মীদের অধিকার আদায়ের প্রতি তার দৃঢ় সংকল্প এবং অঙ্গীকার প্রকাশ করেছেন। তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন, "আমার মতো হাজারো ভাইয়ের জন্য, যারা গুম হয়ে গেছেন এবং যাদের পরিবার দীর্ঘ ১২ বছর ধরে তাদের ফিরে আসার আশায় আন্দোলন করছেন, তাদের অধিকার আদায়ের জন্য রাজপথে থাকতে হবে।" তুলি আরও বলেন, "আমরা কিছু গুম হওয়া ভাইকে ফিরে পেয়েছি, কিন্তু অনেকেই এখনো নিখোঁজ।"

এ সময় আবেগাপ্লুত হয়ে তিনি আরও বলেন, "আমি সেই ভাইদের ব্যথা অনুভব করি, যাদের হয়তো 'আয়না ঘরের' মতো গোপন স্থানে নির্যাতন করা হয়েছে অথবা হত্যা করা হয়েছে, আর যাদের পরিবার এখনো জানে না তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে।" তার মতে, গুম হওয়া নেতাকর্মীদের নিখোঁজ থাকার ঘটনাটি এক গভীর মানবিক সংকট এবং প্রতিটি পরিবারের হৃদয়ে এক অবর্ণনীয় বেদনা তৈরি করেছে।

তুলি বলেন, "আমার মায়ের মতো হাজারো পরিবার আজও জানে না তাদের প্রিয়জনের কী হয়েছে।" তিনি এও বলেন যে, গুম হওয়া নেতাকর্মীদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে তিনি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন এবং বলেন, "আমাদের এই যাত্রা একটি মানবিক বাংলাদেশের জন্য, যেখানে গণতান্ত্রিক উপায়ে বেগম খালেদা জিয়ার স্বপ্ন পূর্ণ হবে।"

তিনি আরও বলেন, "আমার লক্ষ্য সেই বাংলাদেশ উপহার দেওয়া, যেখানে কেউ আর কখনো এমন অবিচার ও নির্যাতনের শিকার হবে না।" তুলি ঢাকা-১৪ আসনের জন্য প্রার্থী হিসেবে তার পরিকল্পনাও তুলে ধরেন। তিনি জানান, "মানুষের চাওয়া এবং তাদের যে বঞ্চনা ও প্রতিকূলতার সম্মুখীন হচ্ছে, সেই সব বিষয়গুলো আমার ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।"

তুলি আরও বলেন, "যদি আমি এই আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে না পারি, তবে আসলে আমি তাদের জন্য কিছুই করতে পারব না।" তিনি বলেন, "আমি অনেক কিছু বলতে পারি, কিন্তু আমি কাজ করে প্রমাণ করতে চাই যে, আমি সামাজিক অধিকারের জন্য লড়াই করছি।"

তুলি তার বক্তৃতায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আরমানের প্রতি তার হৃদয়স্পর্শী মন্তব্যও করেন, যেখানে তিনি আরমানের বিরুদ্ধে সহানুভূতি ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেন। তুলি আরমানকে এক ‘সহযাত্রী’ হিসেবে চিহ্নিত করেন, যিনি রাজনৈতিক যুদ্ধে বিশ্বাসী। যদিও তারা দলের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী, তবুও তুলি মনে করেন, আরমানের প্রতি প্রেরণা ও সাহসের প্রশংসা করার প্রয়োজন রয়েছে।

এ ধরনের মন্তব্য ও দৃঢ় অঙ্গীকার তুলি'র রাজনৈতিক নেতৃত্বে মানবিকতা ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতার এক মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে।

মুসআব/