ঢাকা, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫
Sharenews24

সাব-জেলে যেমন আছেন গ্রেফতার সেনা কর্মকর্তারা

২০২৫ অক্টোবর ২৪ ১১:১৫:২৯
সাব-জেলে যেমন আছেন গ্রেফতার সেনা কর্মকর্তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক: গত সরকারের সময় সেনাবাহিনীতে তাঁরা ছিলেন প্রভাবশালী কর্মকর্তা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটে দায়িত্ব পালন করেছেন দাপটের সঙ্গে। কেউ কেউ ছিলেন গোয়েন্দা সংস্থারও নিয়ন্ত্রক। যাদের নির্দেশে অনেকেই কারাগারে গিয়েছিলেন—দিন বদলে এখন তারাই গুম, খুনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বন্দি।

তিনটি মামলায় গ্রেফতার হওয়া ১৫ জন শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা বর্তমানে সেনানিবাসের ভেতরে অবস্থিত সাব-জেলে রয়েছেন। বুধবার (২২ অক্টোবর) ছিল তাদের প্রথম দিন। সেদিনই স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পান তারা। সাক্ষাতের সময় সাব-জেল এলাকায় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

কারা সূত্র জানিয়েছে, সাক্ষাতের সময় প্রত্যেক আসামির পরিবারের সদস্য উপস্থিত ছিলেন। কেউ কেউ বাসা থেকে রান্না করা খাবার নিয়ে এলেও সেগুলো ভেতরে নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। আসামিদের কারা কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত খাবার সরবরাহ করা হয়।

প্রথম দিনের সাক্ষাতের জন্য নির্ধারিত ছিল আধা ঘণ্টা, তবে স্বজনদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় প্রত্যেকে প্রায় ২০ মিনিট করে সাক্ষাতের সুযোগ পান। সাক্ষাতের সময় উপস্থিত ছিলেন দুইজন এআইজি (প্রিজন্স), তিনজন ডেপুটি জেলারসহ জ্যেষ্ঠ কারা কর্মকর্তা।

কারা কর্তৃপক্ষ ধারণা করেছিল, সাক্ষাতের সময় কেউ আবেগপ্রবণ হতে পারেন, তাই আগেই বাড়তি নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত সাক্ষাৎ নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়।

কারাবিধি অনুযায়ী, প্রথম সাক্ষাতের ১৫ দিন পর পুনরায় দেখা করার সুযোগ পাবেন তারা। বুধবারের সাক্ষাতে কেবল স্ত্রী ও সন্তানরা দেখা করতে পেরেছেন। পরবর্তী সাক্ষাৎ হবে ৫ নভেম্বর, যেদিন কিছু আসামিকে আদালতে হাজির করা হবে।

এক কারা কর্মকর্তা জানান, সকালে আসামিরা রুটি ও সবজি খেয়েছেন। দুপুরে ছিল ভাত, ডাল, সবজি এবং পছন্দ অনুযায়ী মাছ বা মাংস। রাতের মেন্যুও ছিল দুপুরের মতো।

সূত্র জানিয়েছে, সাব-জেলে তাদের সময় কাটছে শান্ত পরিবেশে। বেশির ভাগ সময় তারা শুয়ে-বসে বা বই-পত্রিকা পড়ে কাটাচ্ছেন। কেউ কেউ টেলিভিশন দেখছেন, আবার কেউ নামাজ-কালাম পড়ছেন। তাদের সহায়তায় কয়েকজন সেবকও নিযুক্ত আছেন।

গ্রেফতার সেনা কর্মকর্তাদের আদালতে হাজির করার জন্য প্রসিকিউশন পক্ষ সেনাবাহিনীর কাছে গাড়ি চাইলেও ‘বিতর্কের আশঙ্কায়’ তারা তা দেয়নি। পরে কারা কর্তৃপক্ষ আধুনিক শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সবুজ প্রিজন ভ্যান প্রস্তুত করে, এবং সেই গাড়িতেই তাদের আদালতে আনা-নেওয়া করা হয়।

প্রত্যেক সেনা কর্মকর্তাকে সাব-জেলে পৃথক কক্ষে রাখা হয়েছে। মোট ১৬টি কক্ষ থাকলেও নতুন আসামি এলে এক কক্ষে একাধিকজনকে রাখা হতে পারে।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার জানান, সাব-জেলটি কেন্দ্রীয় কারাগারের অধীনে হলেও সব নিয়ম-কানুন অন্যান্য কারাগারের মতোই মানা হচ্ছে।

তিনি বলেন, “বুধবার আমি সাব-জেলে গিয়েছিলাম। আসামিদের কিছুটা বিমর্ষ মনে হয়েছে। তারা কী করবে বুঝে উঠতে পারছে না, তবে কেউ অস্বাভাবিক আচরণ করেনি। আমি তাদের জানিয়েছি— কারাবিধি মেনে চলতেই হবে।”

তিনি আরও জানান, আসামিরা নিয়ম মেনে চলবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

মুয়াজ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে