ঢাকা, রবিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৫
Sharenews24

এস আলমের অবৈধ নিয়োগে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ইসলামী ব্যাংক

২০২৫ অক্টোবর ০৫ ১৬:৪৫:১৪
এস আলমের অবৈধ নিয়োগে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ইসলামী ব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক : সাত বছর ধরে এস আলম গ্রুপ-সংশ্লিষ্ট পূর্ববর্তী ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রায় ৮ হাজার ৩৪০ জন অদক্ষ ও অর্ধশিক্ষিত কর্মীর জন্য দেশের বৃহত্তম বেসরকারি ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি (আইবিবিএল), প্রতি বছর ১৫০০ কোটি টাকারও বেশি আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে।

তদন্তে জানা গেছে, কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বা আনুষ্ঠানিক পরীক্ষা ছাড়াই মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে পানের দোকানদার, গৃহকর্মী, অটোরিকশা চালক, রাজমিস্ত্রির সহকারী ও রংমিস্ত্রীসহ বিভিন্ন পেশার ব্যক্তিদের এই বিশাল সংখ্যক নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। এ কারণে গত সাত বছরে ব্যাংকটির মোট ক্ষতি ১০ হাজার কোটি টাকারও বেশি হয়েছে।

ব্যাংক থেকে এক লাখ কোটি টাকারও বেশি লোপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে, যা ব্যাংকের ভবিষ্যৎ আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য গুরুতর হুমকি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ব্যাংকিং বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন, ইসলামী ব্যাংকের এই অবৈধ নিয়োগ ও অর্থ আত্মসাত পুরো ব্যাংকিং খাতকেও ধ্বংসের পথে নিয়ে যেতে পারে।

বর্তমান ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পরিচালিত পেশাগত দক্ষতা যাচাই পরীক্ষায় প্রায় ৯০ শতাংশ অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অংশ নেননি, যা তাদের অবাধ্যতা প্রমাণ করে। এসব কর্মকর্তারা ব্যাংকের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছেন এবং হুমকিস্বরূপ কার্যক্রমে লিপ্ত রয়েছেন। ব্যাংকের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ হ্যাক হওয়ার ঘটনাও এই সংঘাতের অংশ বলে মনে করা হচ্ছে।

ইসলামী ব্যাংকের এক সাবেক পরিচালক জানিয়েছেন, এই বিদ্রোহী কর্মীদের কারণে গ্রাহকের টাকা নিরাপদ নয় এবং দ্রুত পদক্ষেপ নিলে ব্যাংকটি সংকট থেকে উত্তরণ পেতে পারে।

গ্রাহক সেবার মানও নিম্নমানের হয়েছে। অধিকাংশ কর্মীরা চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে, যার ফলে অন্যান্য অঞ্চলের গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগে সমস্যা হচ্ছে এবং সেবার মানেরও ক্ষতি ঘটছে।

ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা জানান, এস আলম গ্রুপের সমর্থিত পূর্ববর্তী ব্যবস্থাপনার অধীনে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা পেশাগত অদক্ষতার পাশাপাশি সহকর্মীদের প্রতি দুর্ব্যবহার করতেন এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অমান্য করতেন। তারা নিজেদের পছন্দের এলাকায় বদলি হওয়ায় জোর প্রয়োগ করতেন এবং ম্যানেজারদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে তাদের চাকরির নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলতেন।

সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন এক অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেছেন, “এস আলম একাই পুরো ব্যাংক খাত ধ্বংস করেছেন।”

গ্রাহক আমিনুল ইসলাম ব্যক্তিগত ফেসবুকে প্রশ্ন তুলেছেন, “অবৈধ ব্যাংকাররা চাকরি রক্ষার আন্দোলন করছেন, কিন্তু ১ লাখ কোটি টাকা পাচারকারী এস আলম ব্যাংক থেকে অর্থ ফিরিয়ে আনার জন্য কেউ আন্দোলন করছেন না কেন?”

মুসআব/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে