ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Sharenews24

নিউইয়র্কে ‘গুরুত্বহীন’ কেন মির্জা ফখরুল?

২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৬ ০৯:২৩:৫৬
নিউইয়র্কে ‘গুরুত্বহীন’ কেন মির্জা ফখরুল?

নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ অধিবেশনে অংশ নিতে বাংলাদেশ থেকে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রস্তাবিত প্রতিনিধি দল যুক্তরাষ্ট্রে সফর করে। এই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর সফরসঙ্গী হিসেবে ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। এই দুই নেতার উপস্থিতি নিয়ে দেশ-বিদেশে শুরু হয় আলোচনার ঝড়।

নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি (জেএফকে) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রতিনিধি দলটি পৌঁছালে স্থানীয় আওয়ামী লীগপন্থী প্রবাসী একদল বিক্ষোভ শুরু করে। বিক্ষোভকারীরা ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আক্তার হোসেনের দিকে ডিম ছুঁড়ে মারেন, যা নিয়ে মুহূর্তেই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথার লড়াই শুরু হয়।

বিক্ষোভের সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিমানবন্দরে উপস্থিত থাকলেও, তাকে স্বাগত জানাতে বিএনপির কোনো নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন না—এমন দাবি ভিডিও ফুটেজে উঠে আসে। তবে পরে জানা যায়, বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়ার পর কিছু বিএনপি ও জামায়াতপন্থী কর্মী “স্বাগত র‌্যালি” আয়োজন করেন।

সূত্রমতে, মির্জা ফখরুল, ডা. তাহের, হুমায়ুন কবির, এনসিপির আক্তার হোসেন, তাসনিম জারা সহ আরও কিছু রাজনৈতিক নেতা একই ফ্লাইটে নিউইয়র্কে পৌঁছান।তবে পুরো ঘটনাক্রমে বিএনপির সাংগঠনিক দুর্বলতা ও অভ্যন্তরীণ সমন্বয়ের অভাব স্পষ্ট হয় বলে মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

আক্তার হোসেনের ওপর হামলার ঘটনায় মির্জা ফখরুল তীব্র নিন্দা জানান। এক ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন,"এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করে যে, আওয়ামী লীগ তাদের অন্যায়ের জন্য বিন্দুমাত্র অনুশোচনা করে না।"

জামায়াত নেতা ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের এই ঘটনাকে “দেশের জন্য লজ্জাজনক” আখ্যা দেন। তিনি বলেন,"যারা এই ডিম নিক্ষেপ করেছে, তারা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে।"

এ ঘটনায় নিউইয়র্ক পুলিশ এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে, যার পরিচয় জানা গেছে—আওয়ামী লীগ কর্মী মিজানুর রহমান চৌধুরী।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বিমানবন্দরে মির্জা ফখরুল একা হাঁটছেন, তার চারপাশে কেউ নেই। এ দৃশ্যকে অনেকেই বিএনপির সাংগঠনিক দুর্বলতার প্রতিফলন হিসেবে দেখছেন।প্রবাসে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে একযোগে কাজ করার চেষ্টার মাঝেও পৃথক আচরণ ও স্বাগত জানানোয় বিভক্তির ইঙ্গিত স্পষ্ট।

জানা গেছে, জামায়াতের স্থানীয় কর্মীরা ডা. তাহেরকে জোরালোভাবে স্বাগত জানান, স্লোগান দেন এবং ছবি তোলেন, কিন্তু মির্জা ফখরুলের ক্ষেত্রে তেমন কিছু হয়নি।

প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন,“জামায়াতের নেতাকে সসম্মানে সংবর্ধনা দেওয়া হলেও বিএনপির শীর্ষ নেতার জন্য তেমন কিছু দেখা যায়নি।”এই মন্তব্য ঘিরেও শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তর্ক-বিতর্ক।

বিএনপি ও জামায়াতের নেতাদের একসঙ্গে সফরে থাকা নিয়ে জোট রাজনীতির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার ইঙ্গিত রয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

তবে অভ্যন্তরীণ সমন্বয়ের অভাব এবং প্রবাসী রাজনীতির বাস্তবতা আবারও দলগুলোর মধ্যে বিভেদকে সামনে নিয়ে এসেছে।

মুসআব/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে