ঢাকা, সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Sharenews24

ভারতে পালিয়ে 'অস্তিত্বহীন' বিশ্ববিদ্যালয় চালাচ্ছেন হানিফ

২০২৫ সেপ্টেম্বর ০১ ১৭:০৪:৪৬
ভারতে পালিয়ে 'অস্তিত্বহীন' বিশ্ববিদ্যালয় চালাচ্ছেন হানিফ

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা উন্মোচিত হয়েছে, যেখানে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফের বিরুদ্ধে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কুষ্টিয়ায় অনুমোদিত ‘লালন বিজ্ঞান ও কলা বিশ্ববিদ্যালয়’ বাস্তবে অস্তিত্বহীন হলেও, গণঅভ্যুত্থানের পর হানিফ ভারতে পালিয়ে গিয়ে সেখানেই নতুন কৌশলে এর কার্যক্রম চালু করেছেন বলে অভিযোগ করা হচ্ছে।

জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কুষ্টিয়া হাউজিং এস্টেটের ৬ ও ৭ নম্বর প্লটের ঠিকানায় লালন বিজ্ঞান ও কলা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের অনুমতি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে, অভিযোগ অনুযায়ী, বাস্তবে ওই ঠিকানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো অস্তিত্ব ছিল না, কেবল একটি নির্মাণাধীন বাড়ি ছিল। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ বিষয়ে মামলা করার পর একসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের নামফলকও সরিয়ে ফেলা হয়।

গণঅভ্যুত্থানের পর যখন মাহবুবুল আলম হানিফ ভারতে পালিয়ে যান, তখন তিনি নতুন কৌশলে সেখানেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করেন। ২০২৪ সালের নভেম্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম চালু হয়। বর্তমানে পাঁচ বিভাগে ভর্তির অনুমতি নিয়ে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত ১০১ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন বলে ভিডিওতে দেখা যায়।

প্রাথমিকভাবে হানিফের স্ত্রী ফৌজিয়া আলম এই বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান ছিলেন। পরবর্তীতে ট্রাস্টি বোর্ড পরিবর্তন করে হালিমুজ্জামানকে বোর্ডের চেয়ারম্যানের আসনে বসানো হয়। ভিডিওতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে হালিমুজ্জামানকে চেয়ারম্যান এবং তারিক হাসানকে সেক্রেটারি হিসেবে দেখানো হয়েছে, যেখানে অনুষদের শিক্ষকদের ছবিও রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, আওয়ামী লীগপন্থী কয়েকজন বাদ গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় এখনও হানিফের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন থেকে শুরু করে ভবন ভাড়া সবকিছুতেই রয়েছে অনিয়মের অভিযোগ। এই বিষয়গুলো দুদকের তদন্তাধীন ছিল।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হালিমুজ্জামান বলেন যে, প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর হানিফ ও তার স্ত্রী ট্রাস্টি বোর্ড থেকে পদত্যাগ করেছেন এবং বর্তমানে হানিফসহ আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি আরও জানান যে, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিএনপিপন্থী এক শিক্ষকের নেতৃত্বে উপাচার্য নিয়োগের চেষ্টা করছে এবং তিনজনের নামের একটি প্যানেল কমিশনে পাঠানো হয়েছে।

এই ঘটনা দেশের উচ্চশিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতির নতুন মাত্রা যোগ করেছে এবং রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহারের একটি বড় দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই বিতর্কিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ এবং এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ভূমিকা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।

মুসআব/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে