ঢাকা, সোমবার, ৪ আগস্ট ২০২৫
Sharenews24

বিমান বাহিনীর অভ্যন্তরে 'র' নেটওয়ার্ক ফাঁস

২০২৫ আগস্ট ০৪ ০৯:১৮:৩৫
বিমান বাহিনীর অভ্যন্তরে 'র' নেটওয়ার্ক ফাঁস

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের ভিডিও ভাইরালের সূত্র ধরে চালানো এক অনুসন্ধানে বিমান বাহিনীর অভ্যন্তরে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা 'র' (রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং) এর একটি নেটওয়ার্ক উন্মোচিত হয়েছে বলে একটি সংবাদ প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। এই ঘটনার জেরে বিমান বাহিনীর একজন কর্মকর্তাকে কোর্ট মার্শালে দণ্ড দেওয়া হয়েছে এবং বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।

আরমান মুজাহিদ কর্তৃক উপস্থাপিত এক ভিডিও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা কুর্মিটোলা বিমানবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যান। তার এই পলায়নের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যা পরবর্তীতে তদন্তের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।

প্রতিবেদন অনুসারে, এই ভিডিও ধারণ ও প্রকাশের সঙ্গে কারা জড়িত, তা অনুসন্ধান করতে গিয়েই বিমান বাহিনীর অভ্যন্তরে 'র'-এর নেটওয়ার্কটি ফাঁস হয়।

এই নেটওয়ার্কের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বিমান বাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার আব্দুল্লাহ ইবনে আলতাফকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং কোর্ট মার্শালের মাধ্যমে তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তিনি বর্তমানে কাশিমপুর কারাগারের হাই-সিকিউরিটি সেলে বন্দী আছেন বলে জানানো হয়।

এছাড়াও, এই ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে বিমান বাহিনীর আরও ছয়জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন:

এয়ার ভাইস মার্শাল এম এ আউয়াল হোসেন

এয়ার ভাইস মার্শাল জাহিদুল সাঈদ

এয়ার কমোডোর মোহাম্মদ আমিনুল হক

গ্রুপ ক্যাপ্টেন আব্দুল্লাহ আল ফারুক

গ্রুপ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ শামীম

উইং কমান্ডার সাইয়েদ মোহাম্মদ

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এয়ার ইন্টেলিজেন্সের তদন্তে বেরিয়ে আসে যে, কুর্মিটোলা এয়ারবেসের অফিসার্স মেসের জানালা থেকে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট রিফাত আশরাফী শেখ হাসিনার পলায়নের দৃশ্যটি ধারণ করেন। পরবর্তীতে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তাহসিফ সুরি সেই ভিডিওটি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেন। অভিযুক্ত দুজনকেই বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।

রিফাত আশরাফীর মোবাইল ফোন ফরেনসিক পরীক্ষার পর স্কোয়াড্রন লিডার আব্দুল্লাহ ইবনে আলতাফের সঙ্গে তার যোগাযোগের তথ্য পাওয়া যায়, যিনি 'র'-এর একজন সক্রিয় এজেন্ট হিসেবে কাজ করছিলেন বলে অভিযোগ। ২০২৪ সালের ১৪ই আগস্ট প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) হাতে আলতাফ গ্রেপ্তার হন। তার গাড়ি থেকে ভারতীয় প্যারা কমান্ডোদের ব্যবহৃত অস্ত্র, নগদ টাকা এবং বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস উদ্ধারের দাবি করা হয়েছে।

তদন্তে আরও জানা যায়, শেখ হাসিনার পলায়নের আসল গতিপথ গোপন রাখতে একটি ভিন্ন ন্যারেটিভ তৈরির চেষ্টা করা হয়েছিল। ভিডিওটি ছড়িয়ে দিয়ে এমন একটি ধারণা দেওয়া হয় যে তিনি হেলিকপ্টারে করে ত্রিপুরা যাচ্ছেন, যদিও তিনি মূলত সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে একটি সি-১৩০জে বিমানে কলকাতা হয়ে দিল্লি পালিয়ে যান বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এই নেটওয়ার্কের জাল পুলিশ বিভাগেও বিস্তৃত ছিল বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয় এবং এর মূল নিয়ন্ত্রক হিসেবে একজন প্রভাবশালী সেনা কর্মকর্তা, লেফটেন্যান্ট জেনারেল মুজিবুর রহমানের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

যদিও আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে যে, উল্লেখিত বিমান বাহিনীর কর্মকর্তারা স্বাভাবিকভাবেই অবসরে গেছেন। তবে, আমার দেশ তাদের নিজস্ব অনুসন্ধানের মাধ্যমে 'র' নেটওয়ার্ক ফাঁসের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বলে দাবি করেছে। কাশিমপুর কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন স্কোয়াড্রন লিডার আলতাফের কারাবাসের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মুসআব/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে