ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫
Sharenews24

পুরনো ছবি দিয়ে নতুন ষড়যন্ত্র যা বলছে প্রেস উইং

২০২৫ জুলাই ১৭ ১০:১৫:৫৭
পুরনো ছবি দিয়ে নতুন ষড়যন্ত্র যা বলছে প্রেস উইং

নিজস্ব প্রতিবেদক: গোপালগঞ্জে সাম্প্রতিক সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে ‘ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর তথ্য’ ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। বুধবার (১৬ জুলাই) প্রেস উইংয়ের ফ্যাক্ট চেক ইউনিট তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে জানায়, নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অনলাইন অ্যাকাউন্ট থেকে সংঘর্ষের ঘটনায় মিথ্যা ও মনগড়া তথ্য ছড়ানো হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, একটি সংঘবদ্ধ প্রচারণার অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগপন্থিরা সংঘর্ষের সঙ্গে সম্পর্কহীন ও পুরনো বেশ কিছু ছবি সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেছেন যা ঘটনাটিকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করছে। এর মাধ্যমে ১৬ জুলাইয়ের সহিংসতা নিয়ে একটি কৃত্রিম বয়ান তৈরি করার চেষ্টা করা হয়েছে।

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এস এম জাকির হোসেন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকনসহ কয়েকজন ব্যক্তি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে দাবি করেন, 'ইউনূস গ্যাং' ও বিরোধীদলীয় কর্মীরা সাধারণ মানুষকে আক্রমণ করেছে।

একটি ছবিতে দেখা যায়, পেছনে আগুন জ্বলছে, সামনে একজন কিশোরকে আহত অবস্থায় বহন করা হচ্ছে। ছবিটি গোপালগঞ্জের সংঘর্ষের বলে উপস্থাপন করা হলেও প্রকৃতপক্ষে এটি ১০ আগস্ট ২০২৪ সালের অন্য এক ঘটনার ছবি।

অন্য একটি পোস্টে দেখা যায়, ডিবি পুলিশের এক কর্মকর্তা গুলি ছুড়ছেন—এটিও গোপালগঞ্জের ঘটনা হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। তবে বাস্তবে ছবিটি ৮ ডিসেম্বর ২০২২ সালের নারায়ণগঞ্জে বিএনপির সমাবেশ চলাকালীন তোলা হয়, যেখানে ডিবি কর্মকর্তা কনককে গুলি ছুঁড়তে দেখা গিয়েছিল।

আরও একটি ছবি ব্যবহার করে দাবি করা হয়, গোপালগঞ্জে আহতদের হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। অথচ প্রেস উইং জানায়, এটি ২০ মার্চ ২০২৩ সালের এক ভিন্ন ঘটনার ছবি।

এক শিশুকে লাঠি হাতে দেখানো একটি ছবিও ছড়ানো হয়, দাবি করা হয় এটি ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে তোলা। কিন্তু প্রেস উইংয়ের ভাষ্যমতে, ছবিটি আসলে গাজীপুরের সফিপুরে ধারণ করা একটি পুরনো ভিডিওর স্ক্রিনশট, যা ২০২৩ সালের আগস্টে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়েছিল। ছবিটির একটি ডিজিটালি সম্পাদিত সংস্করণ (সম্ভবত AI-নির্মিত) শেয়ার করেন আওয়ামী লীগঘনিষ্ঠ প্রোপাগান্ডিস্ট নিঝুম মজুমদার।

প্রেস উইং অভিযোগ করে, এসব ভুয়া প্রচারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগপন্থি অ্যাকাউন্টগুলো ভিত্তিহীনভাবে দাবি করেছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বেসামরিক মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। এটি জনমতকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার উদ্দেশ্যে ছড়ানো হয়েছে বলে মন্তব্য করা হয়।

প্রেস উইংয়ের তথ্যমতে, গোপালগঞ্জ শহরে ১৬ জুলাই এনসিপির (জাতীয় নাগরিক পার্টি) কেন্দ্রীয় নেতাদের একটি সমাবেশ শেষে তাদের বহরকে আক্রমণ করে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সমর্থকরা। মুহূর্তেই তা সহিংসতায় রূপ নেয় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আ.লীগপন্থি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।

সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ সময় পুলিশের গাড়ি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৬ জুলাই রাত ৮টা থেকে ১৭ জুলাই সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গোপালগঞ্জে কারফিউ জারি করে প্রশাসন।

প্রেস উইং দাবি করে, মাঠের বাস্তবতা আড়াল করতে আওয়ামী লীগঘনিষ্ঠ চক্র পরিকল্পিতভাবে ভুয়া ও প্রাসঙ্গিকতাবর্জিত ছবি ও তথ্য সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে যা জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে।

মুয়াজ/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে