ঢাকা, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫
Sharenews24

ভেজাল ঔষধ তৈরীর অভিযোগ নিয়ে যা বললেন পিনাকী ভট্টাচার্য

২০২৫ জুলাই ০৮ ১৯:০৯:২৪
ভেজাল ঔষধ তৈরীর অভিযোগ নিয়ে যা বললেন পিনাকী ভট্টাচার্য

নিজস্ব প্রতিবেদক : আলোচিত রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ব্লগার পিনাকি ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে একটি গুরুতর অভিযোগ ঘুরে বেড়াচ্ছে—যেখানে দাবি করা হয়, তার সঙ্গে জড়িত এক ঔষধ কেলেঙ্কারিতে প্রায় ১০০ শিশুর মৃত্যু হয়েছিল। বাংলাদেশে থাকাকালীন সময় এই অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। তবে এবার এ বিষয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন পিনাকি ভট্টাচার্য নিজেই।

সম্প্রতি নিজের এক ভিডিওবার্তায় তিনি এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও প্রমাণহীন বলে দাবি করেছেন। তার ভাষায়, “এই ঘটনার কোনো আদালত মামলা নেই, কোনো থানায় জিডি নেই, এমনকি কোনো সংবাদপত্রে নির্দিষ্টভাবে বলা হয়নি—এতজন শিশু মারা গেছে। ঔষধ প্রশাসনের কাছেও এমন কোনো রেকর্ড নেই। তাহলে এই প্রচারণা কোথা থেকে আসে?”

পিনাকি জানান, ২০০৭ সালের ওয়ান ইলেভেন সরকারের সময় কালাজ্বরের জন্য একটি সরকারি ঔষধ সরবরাহে সংশ্লিষ্ট ছিল পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস। তখন তিনি প্রতিষ্ঠানটির মার্কেটিং বিভাগে কর্মরত ছিলেন।

ওই সময় সরকার ও বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে সরবরাহকৃত ঔষধ প্রত্যাশিত কার্যকারিতা না দেখানোয় মাঠ পর্যায়ে তদন্ত শুরু হয়। পিনাকি বলেন, “আমরা দেখতে পাই ৯০ শতাংশ ভালো হওয়ার কথা থাকলেও ৬০-৭০ শতাংশ রোগী সাড়া দিচ্ছে। আমি তখন অফিসে বিষয়টি জানাই এবং রিকল করার প্রস্তাব দিই।”

তদন্ত শেষে প্রতিষ্ঠান নিজে থেকেই ঔষধ রিকল করে ও রিপ্লেস করার চিঠি দেয়। বিষয়টি বিশ্বব্যাংককেও জানানো হয় এবং শেষপর্যন্ত তারা রিকল ও পুনরায় সরবরাহের অনুমোদন দেয়। অর্থাৎ এটি ছিল একটি আন্তর্জাতিক মানের রেগুলেটরি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সমাধান করা একটি ‘কোয়ালিটি ফেইলিউর’।

পিনাকি বলেন, “এই ঘটনা কোনো অপরাধ ছিল না, বরং একটি স্বাভাবিক শিল্পগত ত্রুটি। আমি প্রোডাকশন বা ঔষধ তৈরির সঙ্গে যুক্তই ছিলাম না। আমার চাকরি গিয়েছিল—এই কথাও ঠিক না। বরং আমাকে ইনসেন্টিভ দেওয়া হয়েছিল।”

পিনাকি ভট্টাচার্যের দাবি, তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ছড়ানো হয়েছে। “আগের সরকার নানা মানুষকে ‘মুক্তিযুদ্ধবিরোধী’, ‘রাজাকার’, ‘পাকিস্তানের দালাল’ ইত্যাদি ট্যাগ দিত। যেকোনো মতভিন্নতা হলেই এই অপবাদ দেওয়া হতো,” বলেন তিনি।

সাংস্কৃতিক অঙ্গনের কিছু ব্যক্তির দ্বিচারিতার দিকেও ইঙ্গিত করে পিনাকি বলেন, “এক সময় যারা মুক্তিযুদ্ধের নাম করে অন্য মতকে গাল দিত, পরে দেখা গেছে তারা রাজনৈতিকভাবে অবস্থান বদলেছে।”

সোশ্যাল মিডিয়ায় তার বক্তব্য ও মতামতকে অনেকেই ‘ইসলামিক পপুলারিজম’ বলে অভিযোগ করে থাকেন। এ বিষয়ে পিনাকি বলেন, “আমি ভিডিও বানাই কিছু বলার জন্য, ঠিক যেমন একজন কবি কবিতা লেখে। আমি স্বপ্ন দেখি এমন একটি দেশের, যেখানে কেউ ক্ষুধার্ত থাকবে না, কেউ অপমানিত হবে না। এই স্বপ্ন যদি সবাইকে ছুঁয়ে যায়, সেটাই রাজনীতি।”

তার ভাষায়, “মানুষ ভালোবাসা ও স্বপ্ন শুনতে চায়। আমি যদি সেই স্বপ্ন বলি, সেটা পপুলিজম কেন হবে? আমি এমন একটা দেশ চাই, যেখানে কথা বলার স্বাধীনতা থাকবে, বুক চিড়ে নিজের কথা বলা যাবে।”

মুসআব/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে