ঢাকা, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫
Sharenews24

'বিদেশি বউ কেনা' নিয়ে সতর্ক করল ঢাকার চীনা দূতাবাস

২০২৫ মে ২৭ ১৪:২৮:২৪
'বিদেশি বউ কেনা' নিয়ে সতর্ক করল ঢাকার চীনা দূতাবাস

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে অবস্থানরত চীনা নাগরিকদের উদ্দেশে ‘বিদেশি বউ’ কেনার নামে চলা অনলাইন প্রতারণা থেকে দূরে থাকতে কড়া সতর্কতা জারি করেছে ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাস। গত রোববার (২৫ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে দূতাবাস জানায়, কিছু অবৈধ এজেন্সি আন্তসীমান্ত ডেটিং ও বিয়ের ব্যবস্থা করার নামে প্রতারণামূলক কার্যক্রম চালাচ্ছে। এই ধরনের প্রতারণায় অর্থনৈতিক ক্ষতির পাশাপাশি আইনি ঝুঁকিও রয়েছে বলে জানায় দূতাবাস।

চীনা আইন অনুযায়ী, বিদেশে বিয়ের ব্যবস্থা করা কোনো সংস্থা বৈধ নয়। এই ধরনের চেষ্টায় জড়িত থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি মানবপাচার আইনে গ্রেপ্তার ও বিচারের মুখোমুখি হতে পারেন বলেও সতর্ক করে দিয়েছে দূতাবাস।

দূতাবাস আরও জানায়, কিছু প্রতারক সংস্থা অনলাইনে আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে চীনা নাগরিকদের বিদেশি নারী বিয়ের প্রলোভন দেখায়। এর পেছনে রয়েছে চীনে দীর্ঘদিনের লিঙ্গ বৈষম্য ও বিয়ের হার হ্রাসের বাস্তবতা। ২০২3 সালে চীনে মাত্র ৬১ লাখ বিয়ের নিবন্ধন হয়েছে, যা ১৯৮০ সালের পর সর্বনিম্ন। একই সঙ্গে দেশটিতে পুরুষের সংখ্যা নারীর তুলনায় প্রায় ৩ কোটি বেশি, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে সমস্যা আরও প্রকট।

এই পরিস্থিতিকে পুঁজি করে কিছু অসাধু চক্র চীনা পুরুষদের ভিয়েতনাম, লাওস, বাংলাদেশ ও নেপালের মতো দেশ থেকে টাকার বিনিময়ে স্ত্রী সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণা করছে। তবে বাস্তবে এসব বিজ্ঞাপনের বেশিরভাগই স্ক্যাম বা প্রতারণামূলক।

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ‘লিগ্যাল ডেইলি’ এক প্রতিবেদনে জানায়, একজন চীনা নাগরিক পাকিস্তানে গিয়ে এক লাখ ইউয়ান প্রতারণার শিকার হন। আরেকটি ঘটনায় এক পাকিস্তানি নারীকে জোরপূর্বক এক চীনা নাগরিকের কাছে বিক্রি করা হয়। পরে ওই নারী পুলিশকে বিস্তারিত জানান, এবং দালালসহ সংশ্লিষ্টদের মানবপাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়।

এমনকি ২০২৩ সালের অক্টোবরে জিয়ামেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক বিদেশি বধূ আনার পক্ষে মত দেওয়ায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। মানবাধিকার কর্মীদের মতে, এই ধরনের প্রস্তাব মানবপাচার ও নারীর প্রতি সহিংসতাকে উৎসাহিত করে।

ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাস আরও জানিয়েছে, বাংলাদেশে মানবপাচার প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী এই ধরনের অপরাধের জন্য সাত বছর থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। সেই সঙ্গে রয়েছে মোটা অঙ্কের জরিমানার বিধান। যারা মানবপাচারে প্ররোচনা বা সহায়তা করেন, তাদেরও তিন থেকে সাত বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

দূতাবাস চীনা নাগরিকদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, বাংলাদেশের বিচারিক প্রক্রিয়া দীর্ঘ সময় নিতে পারে। মানবপাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার হলে একজন ব্যক্তি মাসের পর মাস বা বছরের পর বছর কারাগারে থাকতে পারেন।

চীনা নাগরিকদের এই ধরনের প্রতারণামূলক এজেন্সি থেকে দূরে থাকতে এবং কোনো সন্দেহজনক প্রস্তাব পেলে দূতাবাসকে অবহিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে। তথ্যসূত্র: গ্লোবাল টাইমস ও সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট

মারুফ/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে