ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫
Sharenews24

সংস্কার ও প্রণোদনা: সম্ভাবনার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে দেশের শেয়ারবাজার

২০২৫ মে ১২ ১৪:৫১:৩৬
সংস্কার ও প্রণোদনা: সম্ভাবনার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে দেশের শেয়ারবাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের শেয়ারবাজারে নতুন করে আশাবাদের হাওয়া যেন বইতে শুরু করেছে। সরকারের উচ্চপর্যায়ের সংস্কারমূলক সিদ্ধান্ত, বাজেটে নীতি সহায়তা প্রদান এবং ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির মতো গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক অগ্রগতির প্রভাবে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ছে। যদিও এখনো কিছু বড় বিনিয়োগকারী ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সেল প্রেসার দিয়ে বাজারকে চাপে রাখতে চাইছে।

গতকাল রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে শেয়ারবাজারে দীর্ঘমেয়াদি সংস্কারের জন্য পাঁচটি নির্দেশনা দেওয়া হয়। বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদসহ সংশ্লিষ্ট শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সংস্কার উদ্যোগের মূল দিকনির্দেশনা

১. সরকার-মালিকানাধীন বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির উদ্যোগ।২. সম্ভাবনাময় বড় দেশীয় কোম্পানিগুলোকে কর-প্রণোদনা দিয়ে বাজারমুখী করা।৩. বিদেশি বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে তিন মাসে কার্যকর সংস্কার সম্পন্ন করা।৪. দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া।৫. বড় কোম্পানিগুলোকে ব্যাংক ঋণের বদলে পুঁজিবাজার থেকে তহবিল সংগ্রহে উৎসাহিত করা।

বৈঠকে ইউনিলিভার ও মোবাইল কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করার প্রস্তাবও আসে, যাতে বাজারের গভীরতা বাড়ে এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধার হয়। এর পাশাপাশি তালিকাভুক্ত ও অনালিকাভুক্ত কোম্পানির করহারে ১০ শতাংশ ব্যবধান পুনর্বহালের কথাও গুরুত্ব পায়, যা অতীতে বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর বাজারমুখীতায় সহায়ক ছিল।

বাজেট সহায়তা ও নীতিগত প্রণোদনাআসন্ন বাজেটে শেয়ারবাজারবান্ধব পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার। বিনিয়োগে কর রেয়াত বাড়ানো, নতুন কোম্পানির জন্য করছাড়, তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের করহার কমানো এবং বড় মোবাইল অপারেটরদের বাজারমুখী করতে কর কাঠামোয় পরিবর্তন—এসব উদ্যোগ বিনিয়োগের পরিবেশকে আরও গতিশীল করবে।

আঞ্চলিক শান্তি ও বিনিয়োগ-আস্থা

দক্ষিণ এশিয়ার দুই পরমাণু শক্তিধর দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির চুক্তি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার বড় পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এতে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা কমে আসবে এবং বাংলাদেশসহ অঞ্চলের অন্যান্য দেশের বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সম্ভাবনার দ্বারপ্রান্তে শেয়ারবাজার

সরকারের বাস্তবভিত্তিক সংস্কার পদক্ষেপ, সামগ্রিক কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং বাজেটে সম্ভাব্য নীতিগত সহায়তা মিলিয়ে বাংলাদেশের শেয়ারবাজার এখন একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। এটি বিনিয়োগকারীদের আস্থার একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে।

সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ

আজ (১২ মে) ডিএসইর প্রধান সূচক ১৯.২৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৯২১ পয়েন্টে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরীয়াহ সূচক ১.৬২ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৭৫ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৪.৯৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৮১৫ পয়েন্টে। আগের দিন ডিএসইর প্রধান সূচক বেড়েছিল ৮৮.৮৫ পয়েন্ট।

ডিএসইতে আজ ৩৬৪ কোটি ০৯ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৩৬৬ কোটি ০৬ লাখ টাকার।

এদিন লেনদেন হওয়া ৩৯৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ১৮৯টির, কমেছে ১৬০টির এবং পরিবর্তন হয়নি ৪৬টির।

সোমবার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ

সিএসইতে আজ ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২১ কোটি ৬১ লাখ টাকার।

এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১৮২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ৯১টির, কমেছে ৭১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২০টির।

আজ সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৯.১৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৭২৩ পয়েন্টে। আগেরদিন সিএএসপিআই বেড়েছিল ১১৩.৬৮ পয়েন্ট।

মিজান/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে