ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫
Sharenews24

কেমিক্যাল খাতে টেকসই মুনাফার রোডম্যাপ

২০২৫ এপ্রিল ২৪ ১০:৩০:৫১
কেমিক্যাল খাতে টেকসই মুনাফার রোডম্যাপ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্ব অর্থনীতির অন্যতম শক্তিশালী খাত হলো কেমিক্যাল সেক্টর। এই বিশাল শিল্পে যদি বাংলাদেশ মাত্র ২% বাজার শেয়ার দখল করতে পারে, তাহলে বছরে আয় হতে পারে প্রায় ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এজন্য প্রয়োজন একটি সুপরিকল্পিত মাস্টার প্ল্যান, যাতে প্রযুক্তি, দক্ষ মানবসম্পদ, নিরাপদ অবকাঠামো, পরিবেশবান্ধব উৎপাদন এবং বিনিয়োগ আকর্ষণের কৌশল অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

আমাদের প্রতিদিনের জীবনেই কেমিক্যালের ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে—দাঁত ব্রাশ থেকে শুরু করে রাতের শেষ পযর্ন্ত আমরা এর সংস্পর্শে থাকি। এই অবিচ্ছেদ্য ব্যবহারই কেমিক্যাল খাতকে লাভজনক বিনিয়োগ ক্ষেত্রে পরিণত করেছে।

২০২৩ সালে বিশ্বের কেমিক্যাল বাজারের আকার ছিল ৫ ট্রিলিয়ন ডলার, যা ২০৩০ সালের মধ্যে ৭ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। চীন এই বাজারে শীর্ষে রয়েছে (৪০% সরবরাহ), আর ভারত ২০২৩ সালে রপ্তানি করেছে ৬৬ বিলিয়ন ডলার মূল্যের কেমিক্যাল পণ্য।

এই শিল্পের প্রধান সাবসেক্টরগুলো:

পেট্রোকেমিক্যালস

অ্যাগ্রোকেমিক্যালস

স্পেশালটি কেমিক্যালস

কনজ্যুমার কেমিক্যালস

বিশ্বজুড়ে গ্রিন ও টেকসই কেমিক্যালে বিনিয়োগ বেড়েই চলেছে, যা ভবিষ্যতের নেতৃত্ব নির্ধারণ করবে।

বাংলাদেশে কেমিক্যাল শিল্পের অভ্যন্তরীণ বাজার বর্তমানে প্রায় ১৮.৫ বিলিয়ন ডলার। সরকার এই খাতে বিনিয়োগে উৎসাহ দিতে শুল্ক ছাড়, ট্যাক্স হলিডে এবং সহায়ক শিল্পনীতি প্রণয়ন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো দক্ষ জনবল তৈরি ও গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

বিশাল কর্মক্ষম জনবল

সমুদ্রবন্দর ও ইকোনমিক জোন

আশপাশের বড় বাজারে সহজ প্রবেশাধিকার

এই উপাদানগুলো বাংলাদেশকে আঞ্চলিক কেমিক্যাল হাবে পরিণত করতে পারে।

বিনিয়োগে অনীহা ও উচ্চ সুদের হার

অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ

ভারত ও চীনের মতো শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী

টিকে থাকতে হলে শিল্পকে আরও প্রযুক্তিনির্ভর, গবেষণাভিত্তিক এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করে তুলতে হবে।

গ্যাস ও বিদ্যুতের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও, প্রযুক্তির উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশে এমন কেমিক্যাল প্ল্যান্ট নির্মাণ সম্ভব, যেগুলো নিজের শক্তি নিজেই উৎপন্ন করতে সক্ষম। যেমন:

সালফিউরিক অ্যাসিড প্ল্যান্ট: প্রক্রিয়াজাতকরণের তাপ স্টিমে রূপান্তর করে পুনঃব্যবহার।

ক্লোর-আলকালি প্ল্যান্ট: নতুন প্রযুক্তিতে বিদ্যুৎ ব্যবহার ১০–২০% পর্যন্ত সাশ্রয়ী।

উন্নত দেশগুলোর মতো, বাংলাদেশেও কেমিক্যাল শিল্পে এনার্জি শেয়ারিং মডেল চালু করা গেলে উৎপাদন খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো যাবে। এই মডেলে এক শিল্পপ্রক্রিয়ার উৎপাদিত তাপ বা শক্তি অন্য প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করে সর্বোচ্চ দক্ষতা নিশ্চিত করা যায়।

সঠিক নীতি, প্রযুক্তি এবং মানবসম্পদের সমন্বয়ে কেমিক্যাল শিল্প হতে পারে বাংলাদেশের পরবর্তী বড় রপ্তানি খাত। এখনই সময় এই খাতে বিনিয়োগ ও পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশকে একটি কেমিক্যাল পাওয়ারহাউজে রূপান্তর করার।

মুসআব/

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে