ঢাকা, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫
Sharenews24

ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর ভয়ংকর চক্রান্ত ফাঁস

২০২৫ এপ্রিল ১৭ ০৯:৩৫:৪৪
ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর ভয়ংকর চক্রান্ত ফাঁস

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসেফ আলদুহাইনের কাছ থেকে ৫ মিলিয়ন ডলার আদায়ের চেষ্টা করতে গিয়ে ধরা পড়েছে একটি হানিট্র্যাপ চক্র।

এই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া মডেল মেঘনা আলমের সহযোগী দেওয়ান সামি রিমান্ডে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

রিমান্ডে দেওয়া জবানবন্দিতে তিনি স্বীকার করেছেন—তারা শুধু সৌদি রাষ্ট্রদূতই নয়, আরও কয়েকজন রাষ্ট্রদূতের বিরুদ্ধেও ‘সুন্দরী নারী’ দিয়ে ফাঁদ পেতে ব্ল্যাকমেইল করার পরিকল্পনা করেছিলেন।

সূত্র জানিয়েছে, সামি স্পষ্টভাবে কিছু রাষ্ট্রদূতের নামও বলেছেন, যাদের টার্গেট করা হয়েছিল। এই চক্রের পেছনে রয়েছে একটি আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক, যার সঙ্গে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘RAW’-এর সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়ায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, RAW-এর হয়ে কাজ করছেন এমন কিছু এজেন্ট বাংলাদেশে সক্রিয়, যারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কিছু আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের মাধ্যমে মডেলদের (যেমন মেঘনা আলম) ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ফাঁদে ফেলার চেষ্টায় লিপ্ত।

এই চক্রের লক্ষ্য শুধু ব্যক্তিগত ব্ল্যাকমেইল নয়, বরং তাদের উদ্দেশ্য ছিল—

বিদেশে বাংলাদেশের শ্রমবাজারকে দুর্বল করা

সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা

বর্তমান সরকারের রেমিট্যান্স-নির্ভর অর্থনীতিতে ধস নামানো

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই চক্র যদি সফল হতো তবে বিদেশে কর্মসংস্থান ও রেমিট্যান্সে বিপর্যয় নেমে আসতে পারত। বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স দেশে আসছে যা দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে রেখেছে। RAW-এর এই চক্রান্ত সেই ধারাকে বিপর্যস্ত করতেই সাজানো হয়েছিল।

তদন্তে আরও জানা গেছে মডেল মেঘনা আলমের সঙ্গে ভারতীয় হাই কমিশনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তিনি একাধিকবার ভারত সফরে গেছেন এবং ভারতের স্বাধীনতা দিবসে হাই কমিশনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেছেন।

এইসব তথ্য মিলিয়ে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ধারণা করছে RAW মেঘনাকে ‘টোপ’ হিসেবে ব্যবহার করেছে যাতে বিদেশি কূটনীতিকদের ব্ল্যাকমেইল করে বাংলাদেশ সরকারের ওপর চাপ তৈরি করা যায়।

গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মতে, এই চক্রটি শুধু সৌদি রাষ্ট্রদূত নয় আরও কয়েকজন কূটনীতিক, উপদেষ্টা এবং উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের টার্গেট করেছিল। এদের অনেকেই হয়তো এখনো ফাঁদে পড়েননি তবে চক্রটির কার্যক্রম থেমে থাকলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারত।

তদন্ত এখনও চলমান এবং সামনে আরও বড় চক্রান্তের চিত্র উন্মোচিত হতে পারে বলে শঙ্কা করছেন গোয়েন্দারা।

একটি সুপরিকল্পিত হানিট্র্যাপ চক্র মডেল, সাংবাদিক, সরকারি কর্মকর্তা এবং আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বয়ে বাংলাদেশের কূটনৈতিক নিরাপত্তা ও অর্থনীতিকে টার্গেট করে এক ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র চালিয়েছিল। সৌদি রাষ্ট্রদূতের ঘটনাই তার কেবলমাত্র এক খণ্ডচিত্র।

কেএইচ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে