শেয়ারবাজারের সাত গ্রুপের প্রায় পৌনে দুই লাখ কোটি টাকার বেনামি ঋণ

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের ব্যাংক খাতে সাতটি বড় শিল্প গ্রুপের বিরুদ্ধে প্রায় পৌনে দুই লাখ কোটি টাকার বেনামি ঋণ নেওয়ার তথ্য উঠে এসেছে। এসব ঋণ ভুয়া নাম-ঠিকানা ও অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে নেওয়া হয়েছে, যাদের প্রকৃত মালিক বা সুবিধাভোগী ছিল অন্য কেউ।
তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি বেনামি ঋণের অভিযোগ রয়েছে এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে। গ্রুপটির চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম মাসুদের নেতৃত্বে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তারা মোট ২ লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ ৩২ হাজার কোটি টাকাই নেওয়া হয়েছে ভুয়া বা বেনামি প্রতিষ্ঠানের নামে। এসব ঋণের বড় অংশই অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট ও বিভিন্ন ব্যাংকিং উপকরণ (এলসি, ব্যাংক গ্যারান্টি ইত্যাদি) ব্যবহার করে আদায় করা হয়েছে, যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বিদেশে পাচার হয়ে গেছে বলে তদন্তে উঠে এসেছে।
দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন বেক্সিমকো গ্রুপ। তারা এখন পর্যন্ত ৬০ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়েছে, যার মধ্যে ২২ হাজার কোটি টাকা বেনামি প্রতিষ্ঠানের নামে। মোট ঋণের ৩৭ শতাংশই বেনামি। তারা শুধুমাত্র নিজস্ব কোম্পানির মাধ্যমে নয়, বরং অন্য গ্রুপ বা ব্যক্তির নামে কোম্পানি খুলে ঋণ আদায় করেছে। তদন্তে এমন উদাহরণও পাওয়া গেছে, যেখানে ঋণের টাকা তোলার পর ব্যাংক হিসাব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
নাবিল গ্রুপ নিয়েছে প্রায় ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকার ঋণ, যার মধ্যে ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বেশি বেনামি ঋণ। গ্রুপটি বেশিরভাগ ঋণ নিয়েছে এস আলম গ্রুপ নিয়ন্ত্রিত ব্যাংকগুলো থেকে। তাদের মোট ঋণের প্রায় ৭০ শতাংশই বেনামে নেওয়া হয়েছে।
আরামিট গ্রুপ, যার মালিক সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, তারা নিয়েছে ২ হাজার কোটি টাকার বেশি বেনামি ঋণ। এই ঋণগুলো ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে, যার মালিকানাও ছিল চৌধুরী পরিবারের। এসব ঋণের প্রকৃত সুবিধাভোগীও সাইফুজ্জামান চৌধুরী নিজেই বলে দাবি করেছে তদন্ত সংস্থাগুলো।
নাসা গ্রুপের নামে পাওয়া গেছে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বেনামি ঋণ, যার বেশিরভাগই ভুয়া কোম্পানির নামে। আর সিকদার গ্রুপ নিয়েছে ২ হাজার ২০০ কোটি টাকার বেনামি ঋণ, যার একটি বড় অংশ তাদেরই মালিকানাধীন ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে নেওয়া হয়েছে। এই অর্থের একটি অংশ মাইশা গ্রুপ নামক আরেকটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আদায় করা হলেও, প্রকৃত সুবিধাভোগী ছিল সিকদার পরিবার।
সিকদার গ্রুপ এখন পর্যন্ত ২,২০০ কোটি টাকার বেনামি ঋণ গ্রহণ করেছে। এসব ঋণের বড় অংশই তারা নিজেদের মালিকানাধীন ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে নিয়েছে।
তদন্তে আরও দেখা গেছে, এই বেনামি ঋণের একটি বড় অংশ দেওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগের প্রয়াত সংসদ সদস্য আসলামুল হক-এর মালিকানাধীন মাইশা গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে। যদিও ঋণের কাগজপত্রে ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম থাকলেও, মূলত এর প্রকৃত সুবিধাভোগী ছিল সিকদার পরিবার।
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন পর্ষদ গঠন করা হয়েছে। নতুন ব্যবস্থাপনায় এসব বেনামি ঋণের তথ্য সামনে আসতে শুরু করেছে।
তদন্তকারীরা আরও একটি নাম না জানা বা প্রকাশ না করা ব্যবসায়িক গ্রুপের বিরুদ্ধে ৬০০ কোটি টাকার বেনামি ঋণ নেওয়ার তথ্য পেয়েছেন।
এই গ্রুপটির নাম এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি, তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বিএফআইইউ-র পক্ষ থেকে বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে এটাও জানা গেছে যে, এই গ্রুপটি সরকারের ঘনিষ্ঠ কোনো ব্যবসায়িক মহলের সঙ্গে যুক্ত।
তদন্তের অগ্রগতির ভিত্তিতে শিগগিরই এ গ্রুপের পরিচয়, ঋণের ধরন এবং কীভাবে ঋণ আদায় করা হয়েছে— তা প্রকাশ করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এসব অনিয়ম উদ্ঘাটনের জন্য ব্যাংকের লেনদেন, নথিপত্র ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে। তারা বেনামি ঋণের প্রকৃত সুবিধাভোগীদের চিহ্নিত করে এসব ঋণের দায় তাদের নামেই দেখানোর জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে।
২০০২ সালে দেশে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন চালু হলেও, দুর্নীতিবাজ ব্যাংক কর্মকর্তাদের সহায়তায় এখনও বেনামি হিসাব খুলে ঋণ আদায়ের ঘটনা ঘটছে। অনেক সময় ঋণের অর্থ ছাড় করার পর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করে বৈধতার আবরণ দেওয়া হচ্ছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এই ধরণের বিশাল অঙ্কের বেনামি ঋণ কেবল ব্যাংক খাত নয়, পুরো দেশের আর্থিক ব্যবস্থার জন্য হুমকিস্বরূপ। দ্রুত ও কঠোর আইনগত ব্যবস্থা না নিলে জনগণের আমানতের নিরাপত্তাও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠবে।
গ্রুপের নাম | বেনামি ঋণের পরিমাণ (কোটি টাকা) |
---|---|
এস আলম গ্রুপ | ১,৩২,০০০ কোটি |
বেক্সিমকো গ্রুপ | ২২,০০০ কোটি |
নাবিল গ্রুপ | ৯,৫০০ কোটি |
আরামিট গ্রুপ | ২,০০০ কোটি |
নাসা গ্রুপ | ১,৫০০ কোটি |
সিকদার গ্রুপ | ২,২০০ কোটি |
আরও একটি গ্রুপ (তদন্তাধীন) | ৬০০ কোটি |
মোট বেনামি ঋণের পরিমাণ মোট = ১,৩২,০০০ + ২২,০০০ + ৯,৫০০ + ২,০০০ + ১,৫০০ + ২,২০০ + ৬০০ = ১,৬৯,৮০০ কোটি টাকা
পাঠকের মতামত:
- হাসিনার বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছে ভারতীয়রা
- টাকা লুটের মেশিন বন্ধ থাকায় দিশেহারা 'সাড়ে হাজারের' জয়
- পরীমনির সাথে সাবেক আইজিপির সংশ্লিষ্টতা নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস
- ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করলো ভারত
- প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- ১৬ তারকাকে আসামি করলেন সেই পুলিশ সদস্য
- রাতে যেসব অঞ্চলে ঝড়ের আভাস
- রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে উভয় সংকটে বাংলাদেশ
- আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ
- বিএনপি ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রী হবেন যিনি
- ইউনূস সরকারের মেয়াদ বৃদ্ধির দাবিতে আমরণ অনশন
- ইসরাইলের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে যা বলল হামাস
- ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ওসির বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ
- হজ ব্যবস্থাপনায় বড় ঘোষণা ধর্ম উপদেষ্টার
- সপ্তাহের ব্লক মার্কেটে ঝলক দেখালো তিন কোম্পানি
- ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াবে এই দুটি ফেসপ্যাক
- ভিসা অফিসারের মাত্র ৩ প্রশ্নেই ধরা খেলেন ভারতীয়
- নির্বাচন নিয়ে জামায়াত আমিরের সতর্ক বার্তা
- বাংলাদেশকে যে আহ্বান জানাল ভারত
- যে কারণে ইউরোপে বাংলাদেশিদের আশ্রয়ের সুযোগ কমছে
- সন্তান নয়, শখই বড় : সন্তান বিক্রির অভিযোগে তোলপাড়
- হাসনাতের শিষ্টাচার মন্তব্যে এনসিপি নেতা মুশফিকের প্রতিক্রিয়া
- ফু-ওয়াং ফুডসের সাবেক এমডি ও তার দুই মেয়ের বিরুদ্ধে মামলা
- চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি নিয়ে আইএমএফের নতুন সিদ্ধান্ত
- ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’র নাম পরিবর্তনে ইউনেস্কোর সতর্কতা
- শিক্ষকদের জন্য সুখবর
- ১৮ এপ্রিল বাংলাদেশি টাকায় বিভিন্ন দেশের আজকের টাকার রেট
- আমেরিকার ভিসা নিয়ে দুঃসংবাদ
- স্বর্ণের দামে নতুন রেকর্ড, রুপার দাম অপরিবর্তিত
- আধুনিক ভবন উদ্বোধনের দিনেই হতাশ করলো বিনিয়োগকারীদের!
- সাপ্তাহিক দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০ কোম্পানি
- সাপ্তাহিক দর পতনের শীর্ষ ১০ কোম্পানি
- সাপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানি
- পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
- সপ্তাহজুড়ে বাজার মূলধন কমেছে ১,১০৭ কোটি টাকা
- পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিবের সফর নিয়ে ভারতের মন্তব্য
- যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি সুবিধা পাওয়ার চেষ্টা করছে সরকার
- ডিভিডেন্ড ঘোষণার তারিখ জানাল তিন কোম্পানি
- ইপিএস ঘোষণার তারিখ জানাল চার কোম্পানি
- আইডিএলসি ফাইন্যান্সের ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- ভারতের সুর নরম, ঢাকাকে নিয়ে চাপে দিল্লি
- ওয়াকফ আইন নিয়ে নতুন মোড়
- কুড়িল-বসুন্ধরা সড়ক বন্ধ থাকবে ২৯ ঘণ্টা
- বিডি ফাইন্যান্সের ‘নো ডিভিডেন্ড’ ঘোষণা
- ওয়ান ব্যাংকের জন্য ৪০০ কোটি টাকা তুলল ইউসিবি ইনভেস্টমেন্ট
- সেনা ইন্স্যুরেন্সের প্রথম প্রান্তিক প্রকাশ
- খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সঙ্গে জামায়াত আমিরের বৈঠক
- শিক্ষার্থীদের কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি
- এনবিআরের দুই শীর্ষ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর
- রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানসহ ৬ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
- বাংলাদেশের কর্মসূচি নিয়ে যা বললো ইসরায়েলি গণমাধ্যম
- ১২ কর্মকর্তাকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশত্যাগের নির্দেশ
- ক্ষমা চেয়ে ৩ নেতার পদত্যাগ
- ড. ইউনূসকে ৫ বছর ক্ষমতায় চেয়ে চিঠি
- সবকিছুর জন্য শেখ হাসিনাই দায়ী: ভারতীয় মিডিয়া
- ওবায়দুল কাদেরের নতুন সদর দপ্তরে না যাওয়ার রহস্য ফাঁস
- তিন বছরে সর্বনিম্নে ডলারের মান
- ৪ দেয়ালে বন্দি হাসিনার মনে কালবৈশাখি ঝড়
- শেয়ারবাজারে ডিভিডেন্ড অর্থ ব্যবহারে চালু হচ্ছে নতুন নিয়ম
- ৫২ সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে ৯ শেয়ার, বিপাকে বিনিয়োগকারীরা
- তিতাস গ্যাসের নাম পরিবর্তন
- প্রিমিয়ার ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা সরিয়ে নিলেন ইকবাল
- বিএসএমএমইউর নাম পরিবর্তন করে প্রজ্ঞাপন জারি
- ‘জি এম কাদের অচিরেই তার কৃতকর্মের প্রায়শ্চিত্ত করবেন’
- ডিভিডেন্ড ঘোষণার তারিখ জানিয়েছে দুই কোম্পানি