ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
Sharenews24

ট্রেজারি বিল-বন্ডে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগে নতুন রেকর্ড

২০২৫ এপ্রিল ০৭ ১১:০৯:৩৭
ট্রেজারি বিল-বন্ডে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগে নতুন রেকর্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক: নিরাপদ বিনিয়োগের অন্যতম উৎস হিসেবে ট্রেজারি বিল ও বন্ডের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। সঞ্চয়পত্রের মতো এই বন্ড ও বিলগুলো দিয়ে সরকার ঋণ নেয় এবং ব্যাংকের সুদহার বাড়তে থাকার কারণে বর্তমানে ট্রেজারি বিল ও বন্ডের সুদহারও বেড়েছে। ব্যাংকের সুদের চেয়ে বেশি সুদ পাওয়া যাচ্ছে এই পণ্যে, যার ফলে গত অর্থবছরে এসব পণ্যে বিনিয়োগ বেড়েছে প্রায় ৫১ হাজার ৫১৪ কোটি টাকা বা ১০ দশমিক ৫১ শতাংশ। এ সময় ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ট্রেজারি বিল ও বন্ডে মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৫ লাখ ৪১ হাজার ২৭৭ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরের বিনিয়োগ ছিল ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৭৬৩ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা, যা মোট বিনিয়োগের শূন্য দশমিক ৭৩ শতাংশ। আগের অর্থবছরে এই পরিমাণ ছিল এক হাজার ১০২ কোটি টাকা, যা ছিল মোট বিনিয়োগের শূন্য দশমিক ২৩ শতাংশ।

বেসরকারি ব্যাংকগুলোর একজন এমডি জানান, সাধারণত ট্রেজারি বিল-বন্ডের সুদ হার ব্যাংক আমানতের চেয়ে ৫০ পয়সা বা এক টাকা কম থাকে। তবে বর্তমানে ট্রেজারি বিল-বন্ডের সুদ বেড়ে যাওয়ায় ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগের প্রবণতা বেড়েছে। যদিও এখনো সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ হচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে।

প্রাইমারি ডিলার (পিডি) ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ ছিল ৩৮ দশমিক ৬৫ শতাংশ, এবং নন-প্রাইমারি ডিলার (নন-পিডি) ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ ছিল ২৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিনিয়োগ ছিল ১৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ, যা আগের অর্থবছরে ছিল ২৬ দশমিক ৬৩ শতাংশ।

এছাড়া, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ স্থিতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৩৫৩ কোটি টাকায়, যা মোট বিনিয়োগের শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ। আমানত বিমা ট্রাস্টের বিনিয়োগ রয়েছে দুই দশমিক ৮৭ শতাংশ, সাধারণ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বিনিয়োগ রয়েছে শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ, এবং লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বিনিয়োগ রয়েছে পাঁচ দশমিক ৫০ শতাংশ।

গত অর্থবছরে সরকারের ঋণ চাহিদা বেশি থাকায় ট্রেজারি বিল-বন্ডের সুদহার সর্বোচ্চ ছিল, প্রায় ১২ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের ঋণের চাহিদা কিছুটা কমে যাওয়ায় এবং ব্যাংকগুলোর আগ্রহ বেড়ে যাওয়ায় সুদহার কমে ১০ শতাংশ পর্যন্ত নেমে এসেছে।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে সরকার ঋণ নিয়েছিল এক লাখ ৭৩৮ কোটি টাকা, তবে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণের পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ৯৪ হাজার ২৮২ কোটি টাকা।

ট্রেজারি বিল ও বন্ড হলো এক ধরনের স্বল্পমেয়াদি আর্থিক ঋণপত্র, যা সাধারণত এক বছর বা এর কম মেয়াদী হয়ে থাকে। এটি একটি নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে পরিচিত, কারণ এর ওপর সুদপ্রাপ্তির নিশ্চয়তা থাকে এবং এটি সরকারের পক্ষ থেকে ইস্যু করা হয়। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো অতিরিক্ত তারল্য বিনিয়োগের জন্য এই ট্রেজারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগ করছে, যার ফলে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি কমে যাচ্ছে।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে বেশিরভাগ সময় বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি কমেছে এবং বর্তমান অর্থবছরেও সেই ধারা বজায় রয়েছে। এর ফলে, ব্যাংকগুলো তাদের অতিরিক্ত তারল্য ঝুঁকিবিহীন নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে ট্রেজারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগ করছে।

আরিফ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে