ঢাকা, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

এক্সক্লুসিভ: শেখ হাসিনার আমলের গোপন নথি প্রকাশ

২০২৫ ফেব্রুয়ারি ২৩ ১৫:৪৮:১৩
এক্সক্লুসিভ: শেখ হাসিনার আমলের গোপন নথি প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: পতিত সরকারের আমলে অনেক গণমাধ্যম ও নির্দিষ্ট সাংবাদিকের প্রবেশ বন্ধ ছিলো হাসিনার গণভবনে। তবে সরকার পতনের পর সেই বাধা কাটিয়ে একাধিক গণমাধ্যম আবারও গণভবনে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছে। সম্প্রতি, একটি গণমাধ্যম গণভবনের ভিতরে প্রবেশ করে এবং সেখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র উদ্ধার করেছে যা হাসিনার শাসনামলের অজানা দিকগুলো উন্মোচন করেছে।

গণভবনে পাওয়া একটি নথিতে দেখা গেছে, হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে নানা সন্দেহ ও গোপন কর্মকাণ্ডের বিষয়। বিশেষভাবে, একটি নথিতে 'ধর্মে মানুষ খুন' সম্পর্কে উল্লেখ ছিল। এই নথিটি হাসিনার বেডরুমে পাওয়া গেছে, যা অত্যন্ত বিস্ময়কর। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ১৪০০ মানুষ শহীদ হন এবং হাজার হাজার মানুষ আহত হন। এই আন্দোলনকে দমনে গুম, খুন ও নির্যাতনও ঘটেছিল।

গণভবনে পাওয়া অন্য একটি নথিতে, হাসিনা সরকার কীভাবে দেশব্যাপী নাশকতা বা বিরোধী কর্মকাণ্ড মোকাবিলা করার জন্য নজরদারি চালাচ্ছিল তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা ছিল। বিশেষ করে, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ এবং ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে গোপনীয়ভাবে অভ্যন্তরীণ তদন্ত চালানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। এই নথিতে আরো ছিল ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল উত্তরা শাখার নাম, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে তারা বিনামূল্যে আন্দোলনকারীদের চিকিৎসা প্রদান করছে।

একই সাথে, গণভবনে পাওয়া আরও কিছু দস্তাবেজে বিভিন্ন ঘরের নির্দিষ্ট কাগজপত্র পাওয়া গেছে। যেমন, পুতুলের ঘরে অটিজম সংক্রান্ত কাগজপত্র ছিল এবং জয়ের ঘরে ছিল শার্টসহ ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট সংক্রান্ত নথি। এই দস্তাবেজগুলো আন্দোলনের সময় হাসিনা সরকারের কিছু পরিকল্পনা এবং কর্মসূচি সম্পর্কে ইঙ্গিত দিচ্ছে।

গণভবনে পাওয়া নথি থেকে আরও জানা গেছে, হাসিনা সরকারের পরিকল্পনায় ছিল, ২০১৮ সালের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনকে দমন করতে তিনি ডিবি হেফাজতে থাকা ছয় শিক্ষার্থীকে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের আওতায় নিয়ে আসতে চেয়েছিলেন। এসব শিক্ষার্থীকে জোরপূর্বক আটক করা হয়েছিল। সেই সময় হাসিনাকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, গণগ্রেফতার হওয়া সকল শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার ব্যবস্থা গ্রহণ করার।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে যে, অবসরপ্রাপ্ত লেফটেনেন্ট জেনারেল আকবর হোসেন, যিনি ডিজিএফআই-এর প্রাক্তন ডিরেক্টর জেনারেল, তাকে আন্দোলন দমনের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। সম্প্রতি, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আকবরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।

এছাড়া, নথিতে উল্লেখ ছিল যে, ফেসবুকে নজরদারি বাড়ানোর জন্য সরকার পরিকল্পনা নিয়েছিল এবং আপত্তিকর কন্টেন্ট মুছে ফেলার জন্য ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। হুন্ডি ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করা এবং তাদের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের জন্য অর্থ পাঠানো নিয়েও আলোচনা ছিল।

গণভবনের নথিপত্রে আওয়ামী লীগ পার্টির অর্থ সংগ্রহের বিস্তারিত হিসাবও পাওয়া গেছে। যেমন, প্রাক্তন রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম ৫০ লক্ষ টাকা, এমপি কামরুল ইসলাম ২০ লক্ষ টাকা, এবং সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ১ লক্ষ ৪২ হাজার টাকা প্রদান করেছেন পার্টি ফান্ডে। এছাড়া, ২৮ জন সংরক্ষিত মহিলা এমপি আড়াই কোটি টাকা দিয়েছেন।

এই নথিপত্রগুলো হাসিনার আমলের নানা অজানা তথ্য উন্মোচন করছে, যা দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন আলো ফেলেছে।

এনামুল/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে