ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

সমন্বয়কদের প্রশ্নে ক্ষেপে গেলেন শিক্ষা সচিব, সৃষ্টি তুঘলকি কাণ্ড

২০২৫ ফেব্রুয়ারি ০৩ ১০:৪২:৪৭
সমন্বয়কদের প্রশ্নে ক্ষেপে গেলেন শিক্ষা সচিব, সৃষ্টি তুঘলকি কাণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক : শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষা প্রশাসনের শীর্ষ দুটি পদে মহাপরিচালক নিয়োগ দিয়েছে। মাউশির মহাপরিচালক হয়েছেন পটুয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যাপক ও ১৪তম বিসিএস কর্মকর্তা ড. এহতেসাম উল হক। জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির (নায়েম) মহাপরিচালক পদে নিয়োগ পেয়েছেন এনসিটিবির ঊর্ধ্বতন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. মো. জুলফিকার হায়দার।

অভিযোগ উঠেছে, তারা দুজনই বিগত সরকারের মতাদর্শের সুবিধাভোগী।

রোববার (০২ ফেব্রুয়ারি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও নাগরিক কমিটির সদস্যরা তাদের পদায়নে ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়েরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের অর্ডার বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় সোমবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) মাউশি অধিদপ্তর ও নায়েম ঘেরাও করবেন বলেও হুমকি দিয়েছেন তারা।

এসময় সচিবের সঙ্গে তাদের বাগবিতাণ্ডা হয়। উত্তেজিত হয়ে চুক্তিভিত্তিতে আসা সচিব বলেন, এমন হলে আমি চলে যাব।

সমন্বয়কদের একজন বলেন, মাউশির নতুন মহাপরিচালক ড. এহতেসাম উল হক ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে গুণগান করেছিলেন। তিনি স্বৈরাচারী হাসিনার ফুফাতো ভাই ও বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর অনুগত ছিলেন। এছাড়া, জুলাই আন্দোলনের সময় তিনি ছাত্রদের মুভমেন্ট ও তথ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সরবরাহ করতেন। এ সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্তও সচিবের কাছে জমা দিয়েছেন সমন্বয়করা।

তারা বলেন, এমন ব্যক্তিকে মাউশির ডিজি করা মানে ছাত্রদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি। তাকে দ্রুত সময়ের মধ্যে অপসারণ করতে হবে। তখন সচিব বলেন, পুরো বিষয়টি আমি উপদেষ্টাকে জানাব। তিনিই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।

একজন সমন্বয়ক সচিবকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনি হয়েছেন ছাত্রদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে সচিব হয়েছেন। অথচ সাবেক বিদ্যুৎ জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নজরুল হামিদ বিপুর হাতে ধরে যুগ্মসচিব, অতিরিক্ত সচিব হয়েছেন। এই অভিযোগ আমরা তুলতে চাই না, কিন্তু আপনার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন হলে ছাত্ররা তা মেনে নেবে না।

এ সময় সচিব উত্তেজিত হয়ে জবাব দেন, আমাকে এসবের ভয় দেখাবেন না। আমি আছি বলেই এখনও কিছু ভালো পদায়ন হচ্ছে, না হলে এখানে আরও অনেক কিছু ঘটে যেত। আমি বিপুর লোক হলে অনেক আগেই সচিব হয়ে যেতাম।

এর আগে রোববার আলাদা প্রজ্ঞাপনে দুইজন মহাপরিচালককে পদায়ন করা হয়। এ দুজনের নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গোপনীয়তা রক্ষা করে মন্ত্রণালয়। ৩০ জানুয়ারি প্রজ্ঞাপন হলেও মাউশির ডিজির প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয় রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার পর। তার আগেই তাকে মন্ত্রণালয়ে যোগদান করান সচিব। সকাল ১০টায় সচিবের রুমে যোগদান করেন নতুন মহাপরিচালক ড. এহতেসাম উল হক।

জানা যায়, সচিবের কাছে যোগদানের পর মন্ত্রণালয়ের ডেস্ক অফিসার উপসচিব (সরকারি কলেজ-২) মো. মাহবুব আলম মাউশির কর্মকর্তাকে ফোন করে জানান, নতুন মহাপরিচালক হিসেবে ওমুক যোগদান করেছেন। তিনি একটু পর মাউশিতে আসবেন। তার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। এটা শোনার পর মাউশির কর্মকর্তা দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন। ততক্ষণ পর্যন্ত জানেন না, কে নতুন ডিজি হিসেবে পদায়ন পেয়েছেন।

নায়েমের ডিজি হিসেবে পদায়ন পাওয়া জুলফিকার হায়দারের বিরুদ্ধে দীপু মনির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা এবং বাতিল হওয়া বিতর্কিত কারিকুলামের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে