ঢাকা, বুধবার, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

সংবিধান সংস্কার: যেভাবে গঠিত হবে সংসদের উচ্চ ও নিম্নকক্ষ

২০২৫ জানুয়ারি ১৫ ২০:৫৩:১৮
সংবিধান সংস্কার: যেভাবে গঠিত হবে সংসদের উচ্চ ও নিম্নকক্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক: সংবিধান সংস্কার কমিশন দ্বিকক্ষ-বিশিষ্ট আইনসভা গঠনের প্রস্তাব করেছে, যার মধ্যে একটি নিম্নকক্ষ (জাতীয় সংসদ) এবং একটি উচ্চকক্ষ (সিনেট) থাকবে। উভয় কক্ষের মেয়াদ হবে চার বছর।

আজ বুধবার (১৫ জানুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার কাছে কমিশন তাদের সুপারিশগুলো জমা দিয়েছে। নিচে কমিশনের সুপারিশগুলো উল্লেখ করা হলো:

নিম্নকক্ষ১। নিম্নকক্ষ গঠিত হবে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে সরাসরি নির্বাচিত সদস্যদের সমন্বয়ে, মোট আসন সংখ্যা হবে ৪০০। এর মধ্যে ৩০০ জন সদস্য একক আঞ্চলিক নির্বাচনী এলাকা থেকে সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হবে এবং ১০০ জন নারী সদস্য নির্ধারিত ১০০ নির্বাচনী এলাকা থেকে ভোটে নির্বাচিত হবে।

২। রাজনৈতিক দলগুলো নিম্নকক্ষের মোট আসনের অন্তত ১০% তরুণ-তরুণীদের মধ্যে থেকে প্রার্থী মনোনীত করবে।

৩। সংসদীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ন্যূনতম বয়স ২১ বছর নির্ধারণ করা হবে।

৪। দুইজন ডেপুটি স্পিকার থাকবেন, তাদের মধ্যে একজন বিরোধী দলের সদস্য হিসেবে মনোনীত হবেন।

৫। একজন সংসদ সদস্য একই সাথে প্রধানমন্ত্রী, সংসদনেতা, এবং রাজনৈতিক দলের প্রধানের পদে অধিষ্ঠিত হতে পারবেন না।

৬। অর্থবিল ব্যতীত, নিম্নকক্ষের সদস্যরা তাদের মনোনয়নকারী দলের বিপক্ষে ভোট দিতে পারবেন।

৭। আইনসভার স্থায়ী কমিটিগুলোর সভাপতি সবসময় বিরোধীদলীয় সদস্যদের মধ্যে থেকে মনোনীত হবে।

উচ্চকক্ষ১। উচ্চকক্ষ হবে মোট ১০৫ সদস্যবিশিষ্ট; এর মধ্যে ১০০ জন সদস্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রদত্ত মোট ভোটের সংখ্যানুপাতে নির্ধারিত হবে। এই ১০০ জন প্রার্থীর মধ্যে অন্তত ৫ জন সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে অনগ্রসর সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করবে। অবশিষ্ট ৫টি আসন পূরণের জন্য রাষ্ট্রপতি নাগরিকদের মধ্যে থেকে প্রার্থী মনোনীত করবেন।

২। কোনো রাজনৈতিক দলকে উচ্চকক্ষে প্রতিনিধিত্বের জন্য অন্তত ১% ভোট পেতে হবে।

৩। উচ্চকক্ষের স্পিকার সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে নির্বাচিত হবে।

৪। এক ডেপুটি স্পিকার থাকবেন, যিনি সরকারের বাইরে থাকা সদস্যদের মধ্যে থেকে নির্বাচিত হবেন।

সংবিধান সংশোধনী১। সংবিধানের যেকোনো সংশোধনী উভয় কক্ষের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার অনুমোদন প্রয়োজন এবং প্রস্তাবিত সংশোধনী উভয় কক্ষে পাস হলেই এটি গণভোটে উপস্থাপন করা হবে।

আন্তর্জাতিক চুক্তি১। জাতীয় স্বার্থ বা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা প্রভাবিত করে— এমন কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তি সম্পাদনের আগে উভয় কক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে অনুমোদন নিতে হবে।

অভিশংসনরাষ্ট্রদ্রোহ, গুরুতর অসদাচরণ বা সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগে রাষ্ট্রপতিকে অভিশংসিত করা যাবে। নিম্নকক্ষে অভিশংসন প্রস্তাব পাস হলে, তা উচ্চকক্ষে যাবে এবং সেখানে শুনানির মাধ্যমে প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।

নির্বাহী বিভাগ১। আইনসভার নিম্নকক্ষে যে সদস্যের প্রতি সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থন থাকবে, তিনিইรัฐบาล গঠন করবেন। নির্বাহী কর্তৃত্ব প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার নেতৃত্বে কার্যকর হবে।

২। কমিশন রাষ্ট্রপতির কিছু নির্দিষ্ট দায়িত্ব সুপারিশ করেছে; রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে কাজ করবেন।

৩। রাষ্ট্রীয় কার্যাবলীতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার জন্য একটি জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে।

মিজান/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে