ঢাকা, সোমবার, ৬ জানুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

রাজস্ব খাতে বড় পরিবর্তন: কাস্টমস ও ট্যাক্স ক্যাডারদের জন্য নতুন দিশা

২০২৫ জানুয়ারি ০৫ ১০:৩০:২৩
রাজস্ব খাতে বড় পরিবর্তন: কাস্টমস ও ট্যাক্স ক্যাডারদের জন্য নতুন দিশা

নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে পলিসি উইং (রাজস্ব নীতি) পৃথক করার সুপারিশ করেছে রাজস্ব বোর্ড সংস্কার বিষয়ক পরামর্শক কমিটি।

‘রাজস্ব কমিশন’ নামে একটি স্বাধীন সংস্থা রাজস্ব নীতি প্রণয়নের কাজ করবে, যার প্রধান হিসেবে নিয়োগ পাবেন আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডারের শীর্ষ কর্মকর্তারা। এই কমিশন অর্থমন্ত্রীর অধীনে কাজ করবে। কমিশন অর্থনীতির কৌশল ও শুল্ক-কর সম্পর্কিত আইন-নীতি নির্ধারণে কার্যক্রম চালাবে, যা সরকারের বিভাগ পদমর্যাদায় হবে। পাশাপাশি, রাজস্ব আদায়ের কাজে এনবিআর’র পুনর্গঠন এবং শীর্ষ নির্বাহী পদে আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডার কর্মকর্তাদের নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে।

কমিটি ২২ ডিসেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে, যেখানে এসব বিষয় বিস্তারিতভাবে উল্লেখ রয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এনবিআরের রাজস্ব নীতি এবং কর আদায়ের কাজ একসাথে থাকা কারণে দুর্নীতি, স্বার্থের সংঘাত এবং অনিয়মের ঘটনা ঘটছে। ফলে, এসব সমস্যার সমাধানে এনবিআর ও আইআরডি (অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বিভাগ) পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। একে স্বচ্ছ এবং উন্নয়নবান্ধব রাজস্ব নীতি প্রণয়নের জন্য পৃথক করা হবে।

এনবিআর পুনর্গঠনের পর আয়কর (প্রত্যক্ষ কর) এবং কাস্টমস ও ভ্যাট (পরোক্ষ কর) বিভাগ আলাদা হবে, যাতে সরকারে শীর্ষ পদমর্যাদায় অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা নিয়োগ পায়। এনবিআরের নতুন চেয়ারম্যান সরাসরি অর্থমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট করবেন।

রাজস্ব কমিশন সরকারিভাবে কর সংক্রান্ত নীতি প্রণয়ন করবে, এবং আয়কর, ভ্যাট, শুল্ক, নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক, সম্পূরক শুল্কসহ অন্যান্য কর হার নির্ধারণ করবে। এটি প্রয়োজনে শুল্ক-করসংক্রান্ত বিধিবিধান প্রণয়ন, সংশোধন ও পরিবর্তন করবে। কমিশনে দক্ষ এবং সৎ কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হবে, যারা রাজস্ব নীতি সম্পর্কে বিশদ জ্ঞান রাখেন।

এছাড়া, রাজস্ব কমিশনে বৈশ্বিক উত্তম চর্চা, ব্যবসায়িক পরামর্শক, অর্থনীতিবিদ, ও অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে নতুন রাজস্ব নীতি প্রণয়নে সহায়তা করবে।

এনবিআরের কাঠামো পরিবর্তন এবং কমিশন গঠনের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে, এবং দেশের রাজস্ববান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সাবেক এনবিআর সদস্য ড. শহিদুল ইসলাম বলেন, "এটি বাস্তবভিত্তিক এবং প্রস্তাবিত সংস্কারের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় বাড়ানো সম্ভব। আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডারের কর্মকর্তাদের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা রয়েছে, এবং তারা নতুন নীতি প্রণয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারবে।"

এদিকে, শ্বেতপত্রে এনবিআরের কাঠামোগত সীমাবদ্ধতা এবং নীতি প্রণয়নের দুর্বলতা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়, এনবিআরে নিয়মিত নেতৃত্ব পরিবর্তন এবং অভিজ্ঞতা না থাকলে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা কঠিন হয়ে পড়ে।

কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী, এনবিআরের চেয়ারম্যান হিসাবে অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের নিয়োগ এবং তাদের মেয়াদ অন্তত তিন বছর করার সুপারিশ করা হয়েছে।

কেএইচ

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে