ঢাকা, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
Sharenews24

সিমটেক্সে কর্ণধার সিদ্দিকসহ ৭ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ

২০২৪ ডিসেম্বর ২৫ ০০:১৯:২৬
সিমটেক্সে কর্ণধার সিদ্দিকসহ ৭ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কর্ণধার সিদ্দিকুর রহমান ও তার স্ত্রী মাহফুজা রহমান বেবীসহ তিন আত্মীয়ের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

অন্য দু’জন হচ্ছেন সিদ্দিকর রহমানের বড় ভাই ইনসান আলী শেখ এবং সিদ্দিকুর রহমানের স্ত্রীর বড়বোন হাফিজা খানম। তারা দু’জনই সিমটেক্সের পরিচালক ছিলেন। অন্যদিকে মাহফুজা রহমান বেবী এক সময় কোম্পানিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের অবকাশকালীন বিচারক মো. ইব্রাহিম মিয়া এই নির্দেশ দেন।

একই সঙ্গে আদালত আরও তিন ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এরা হচ্ছেন- ক্রস রোড করপোরেশন লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক অমল কৃষ্ণ দাস, মশিউর রহমান ও সাব্বির আহমেদ।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, আলোচিত সাত ব্যক্তির নামে থাকা ৩১টি ব্যাংক হিসাব জব্দ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড থেকে ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা চলছে।

যে সাত ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব জব্দ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তারা সবাই এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান ও আর্থিক খাতের বড় লুটেরা পি কে হালদারের সহযোগী ছিলেন।

দুদকের আবেদনে বলা হয়, পি কে হালদারের প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল করপোরেশন লিমিটেড অর্থ পাচার সংক্রান্ত অভিযোগ তদন্তকালে জানা যায় ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকে দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে ক্রসরোড করপোরেশন লিমিটেডকে ৬০ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। ক্রস রোড করপোরেশন লিমিটেডের পরিচালক অমল কৃষ্ণ দাস মশিউর রহমান ও সাব্বির আহমেদ দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে এই অর্থ আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের সঙ্গে জড়িত।

অন্যদিকে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকে সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও সিমটেক্স টেক্সটাইল লিমিটেডকে ১২১ কোটি ৩০ লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। এই দুটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক সিদ্দিকুর রহমান, মাহফুজা রহমান বেবী, ইনসান আলী শেখ ও হাফিজা খানম পরস্পর যোগসাজশে দুর্নীতি ও অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে এই ঋণ গ্রহণ করে তা আত্মসাৎ ও পাচার করেছেন।

দুদকের আবেদনে আরও বলা হয়েছে, আত্মসাৎ করা ও পাচার করা অর্থ উদ্ধার এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসাব এবং তাদের প্রতিষ্ঠানের নামে ঢাকা ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন। অভিযুক্ত এবং তাদের প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ না করলে আত্মসাৎ করা অর্থ উদ্ধার করা সম্ভব হবে না এবং অভিযোগ অনুসন্ধান প্রক্রিয়াও সম্ভব হবে না।

২০২০ সালে দুদক পিকে হালদার ও তার কিছু সহযোগী বিরুদ্ধে মামলা করলে সিমটেক্সের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সিদ্দিকুর রহমান, তার ছেলে ও কোম্পানির পরিচালক নিয়াজ রহমান সাকিব পালিয়ে পর্তুগাল চলে যান।

পরবর্তীতে সাকিবকে দেশে পাঠিয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ করা হয়। এই চক্র কোম্পানিটির তৎকালীন চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) আনিসুর রহমানকে জোর করে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয় বলে তিনি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কাছে দেওয়া এক অভিযোগে দাবি করেন।

অন্যদিকে ২০২২ সালে সিদ্দিকের বড় ভাই ও ইনসান আলী শেখ এবং সিদ্দিকের স্ত্রীর বড়বোন হাফিজা খানম স্টক এক্সচেঞ্জকে না জানিয়ে গোপনে তাদের কাছে থাকা সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের সব শেযার বিক্রি করে দেন।

মিজান/

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে