ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

ব্যাংকখাত সংস্কারে ১৭৫ কোটি ডলার দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক-এডিবি

২০২৪ সেপ্টেম্বর ১১ ১২:৩৫:২৫
ব্যাংকখাত সংস্কারে ১৭৫ কোটি ডলার দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক-এডিবি

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের ব্যাংকখাত সংস্কারে বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ১৭৫ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকেও সহায়তার আশ্বাস মিলেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে বিশ্বব্যাংক থেকে ৪০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণের বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। বর্তমান পরিস্থিতিতে ঋণের পরিমাণ বাড়িয়ে ৪৫ কোটি ডলার করা নিয়ে এখন আলোচনা চলছে।

পাশাপাশি এডিবি দেশের ব্যাংক খাত সংস্কারে ১৩০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে। এই ঋণ দুর্বল হয়ে পড়া ব্যাংকগুলোকে পুনর্মূলধন হিসেবে দেওয়া যায় কি না, তা নিয়েও আলোচনা শুরু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের টানা সাড়ে ১৫ বছরে খেলাপি ঋণ নথিপত্রে যতটা বেড়েছে, তাতে আর্থিক খাতের ভয়ংকর চিত্র প্রতিফলিত হয়েছে। যেমন এই সময়ে শুধু ব্যাংক খাতেই খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১ লাখ ৮৮ হাজার ৯১০ কোটি টাকা।

তথ্যমতে, গত জুন মাসের শেষে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। ফলে দেশের ব্যাংকগুলো থেকে বিতরণ করা ঋণের ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশই এখন খেলাপি হয়ে পড়েছে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করে, তখন মোট খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ব্যাংক খাত সংস্কারে জোর দেয় নতুন অন্তর্বর্তী সরকার। এই প্রক্রিয়ায় ইতোমধ্যে ১০টি ব্যাংক ও ১টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯টির মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ ছিল বহুল আলোচিত এস আলম গ্রুপের হাতে। এসব ব্যাংক থেকে এস আলম গ্রুপ নামে-বেনামে প্রায় দুই লাখ কোটি টাকা বের করে নিয়েছে, যা আদায় করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে পর্ষদ পরিবর্তিত হওয়া ব্যাংকগুলো।

তারল্য–সংকটে পড়ে এসব ব্যাংকের স্বাভাবিক লেনদেন কার্যক্রম ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। এই ব্যাংকগুলোর কর্মকর্তাদের বেতনও অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। এই জন্য ব্যাংক খাত সংস্কারে কমিশন গঠনের পরিবর্তে দ্রুত তিনটি টাস্কফোর্স করার পরিকল্পনা করছে সরকার। কারণ, কমিশন গঠন করে সুপারিশ প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়নে দীর্ঘ সময় লেগে যাবে। এর পরিবর্তে টাস্কফোর্সের মাধ্যমে শিগগিরই সংস্কার শুরু করতে চায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা। টাস্কফোর্সের মধ্যে একটি হবে, খেলাপি ঋণ ব্যবস্থাপনা–সংক্রান্ত, আরেকটি বাংলাদেশ ব্যাংক শক্তিশালীকরণ বিষয়ে। অন্য টাস্কফোর্স হবে পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরত আনা নিয়ে।

ব্যাংক খাত সংস্কারে টাস্কফোর্সগুলো যাতে যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারে, সে জন্য দেশি-বিদেশি সর্বোচ্চ কারিগরি জ্ঞান ও সহায়তা নেওয়ার চেষ্টা করা হবে। এ জন্য যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন, তা–ও কম সুদের বিদেশি উৎস থেকে সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।

অন্তবর্তী সরকারের উদ্যেগে সাড়া দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি ৪০ কোটি ডলার দিতে পারে, যার সুদের হার হবে ৬-৬.৫০ শতাংশের মধ্যে। একই রকম সুদে এডিবি থেকে ১৩০ কোটি ডলার ঋণ পাওয়া নিয়ে এখন আলোচনা হচ্ছে। এডিবি প্রথম বছরে ৫০ কোটি ডলার, দ্বিতীয় বছরে ৫০ কোটি ডলার ও তৃতীয় বছরে ৩০ কোটি ডলার ঋণসহায়তা দিতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বব্যাংকের ঋণে নতুন প্রকল্প নেওয়া হবে। আর এডিবির ঋণের অর্থও এই প্রকল্পে ব্যবহার করা হতে পারে অথবা এডিবির জন্য পৃথক প্রকল্প গঠন করা হতে পারে। এডিবি ঋণ দেবে বাজেট–সহায়তা হিসেবে। আইএমএফ থেকেও কারিগরি জ্ঞান নেওয়ার চেষ্টা চলছে।

মামুন/

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে