ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

দুবাইয়ে কোটি ডলারের বাড়ির প্রতি আকর্ষণ বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের

২০২৪ মে ১৫ ০৯:২৪:৩৫
দুবাইয়ে কোটি ডলারের বাড়ির প্রতি আকর্ষণ বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বের অতিধনীদের কাছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) প্রধান শহরগুলোর প্রতি আকর্ষণ ক্রমেই বাড়ছে। । বিনিয়োগ ও বসবাস দুই ক্ষেত্রে দুবাই ও আবুধাবির চাকচিক্যময় শহর তাদের কাছে প্রাধান্য পাচ্ছে। বিশেষ করে কোটি ডলার বা আরো বেশি দামের বাড়ি কেনার ক্ষেত্রে বেশি এগিয়ে দুবাই।

চলতি বছর বিশেষ করে জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে বিনিয়োগ ও বসবাস উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এখাতে ক্রেতাদের আগ্রহের পেছনে একাধিক প্রভাবককে সামনে আনছেন বিশ্লেষকরা।

অ্যারাবিয়ান বিজনেস ও রয়টার্স জানিয়েছে, ২০২৩ একই সময়ের তুলনায় চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চে দুবাইয়ে ১ কোটি ডলার বা আরো বেশি দামের দামের দামের মূল্য বেড়েছে অন্তত ৬ শতাংশ।

আরব আমিরাতে আবাসন খাতের নেতৃত্বস্থানীয় পরামর্শক নাইট ফ্রাংক জানিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে কোটি ডলারের ১০৫টি বাড়ির ক্ষেত্রে ক্রেতারা খরচ করেছেন ১৭৩ কোটি ডলার। ২০২৩ সালের একই সময়ে এখাতে খরচ হয়েছিল ১৬০ কোটি ডলারের বেশি।

নাইট ফ্রাংক বলেছে, কোটি ডলারের বাড়ি কেনার ক্ষেত্রে নগদ লেনদেনের আধিপত্য ছিল এবং চাহিদার শীর্ষে ছিল পাম গাছের আকৃতির বিখ্যাত কৃত্রিম দ্বীপ পাম জুমেইরাহ। মাল্টি-মিলিয়ন আবাসন বাবদ ৩৬.৩০ শতাংশ খরচ এই দ্বীপেই হয়েছে। তালিকার পরের অবস্থানে জুমেইরাহ বে দ্বীপ ও দুবাই হিলস এস্টেট।

আরব আমিরাত কয়েক বছর ধরে জ্বালানি তেলনির্ভর বাণিজ্য থেকে সরে অর্থনীতি বৈচিত্র্যকরণ নীতি অনুসরণ করছে। এই পরিকল্পনায় বিদেশী বিনিয়োগের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। ব্যবসা, বিনিয়োগ ও বসবাসে আকর্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় নীতি সংস্কার করা হয়েছে।

সব মিলিয়ে অর্থশালীদের জন্য ইউএইতে বসবাস সহজ হয়ে গেছে। এই কারণে বৈশ্বিক পুঁজির বড় একটি অংশ এখন ইউএইর শহরগুলোর দিকে ধাবিত হচ্ছে, যার উল্লেখযোগ্য একটি অংশ অবৈধপথে অর্জিত। এসব শহর এখন ‘সেফ হাভেন’, ‘ট্র্যাক্স হ্যাভেন’ নামেও পরিচিতি।

বিশ্লেষকরা জানান,আরব আমিরাতে বিনিয়োগকারীদের জন্য চালু করা সুবিধার দীর্ঘ তালিকায় রয়েছে সহজ মর্টগেজ রেট ও সরকারের বিভিন্ন নীতি, যা দীর্ঘমেয়াদে সেখানে বসবাস করতে ধনীদের উৎসাহিত করছে।

এছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে বৈশ্বিক নানামুখী সংযোগ শহরটির আবাসিক রিয়েল এস্টেটে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের চাহিদায় প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে।

ফোরমেন ফিফডমের বিজনেস হেড ও ম্যানেজিং পার্টনার শচীন কুমার সিং বলেন, ‘মাল্টি-মিলিয়ন বা কোটি ডলারে আবাসনের জন্য দুবাইয়ের আবেদন বাড়ছে।

তিনি বলেন, এটি শুধু বিলাসবহুল জীবনধারা এবং উচ্চ মানের সম্পত্তির জন্য নয়। বরং অনুকূল করের পরিবেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে ব্যবসা করার সহজ নীতির জন্য শহরটির আবেদন রয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘দুবাই শহরটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থিত। এটি পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে একটি সেতু হিসেবে কাজ করে।’

শচীন সিং বলেন, ‘দুবাইয়ের অবকাঠামো খাতে দ্রুতগতির উন্নয়নগুলোকে বিশেষ করে ২০২৪ সালে শহরের রিয়েল এস্টেট বাজারে বিনিয়োগের জন্য একটি প্রতিশ্রুতিশীল সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।’

নির্মাণাধীন নতুন আল মাকতুম বিমানবন্দর চালু হলে দুবাইয়ের আকাশপথের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এটি বিশ্বব্যাপী বিমান চলাচলের কেন্দ্র হিসেবে শহরের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে।

দুবাইয়ের রোডস অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (আরটিএ) বর্তমানে এমিরেটের পরিবহন নেটওয়ার্ককে আধুনিকীকরণের জন্য একটি বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, যার মধ্যে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে রয়েছে, দুবাই জুড়ে ৭৬২টি নতুন পাবলিক বাস স্টপ নির্মাণ।

দুবাই-ভিত্তিক প্রপটেকের একজন শীর্ষ নির্বাহী বলেন, ‘এই অবকাঠামোগত উন্নয়ন আবাসিক সম্পত্তির চাহিদা আরও বৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এতে সম্পত্তির দাম আরও বাড়বে এবং বিনিয়োগ অবস্থা আরও উচ্চতর পর্যায়ে রাখবে।’

এদিকে, দুবাইয়ের সামগ্রিক আবাসন খাত বছরের প্রথম প্রান্তিকে লেনদেনের ক্ষেত্রে একটি নতুন রেকর্ড তৈরি করেছে। এই সময়ে ৩৪ হাজারের বেশি লেনদেন নিবন্ধিত হয়েছে। মার্চে শেষ হওয়া প্রান্তিকে লেনদেন ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ বেড়েছে।

শেয়ারনিউজ, ১৫ মে ২০২৪

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে