ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

তিন মাসে লিবিয়া থেকে গ্রিক দ্বীপে ১১৮০ অভিবাসনপ্রত্যাশীর প্রবেশ

২০২৪ মার্চ ৩০ ১৩:৩৭:৩৯
তিন মাসে লিবিয়া থেকে গ্রিক দ্বীপে ১১৮০ অভিবাসনপ্রত্যাশীর প্রবেশ

প্রবাস ডেস্ক : তিন মাসে গ্রিসের গাভদোস দ্বীপে পৌঁছেছেন এক হাজার ১৮০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে লিবিয়া উপকূল থেকে তারা গ্রিসের এই উপকুলটিতে পৌঁছান। এদের মধ্যে কেউ কেউ বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও মিশরের নাগরিক বলে নিশ্চিত করেছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর)।

গ্রিসের ক্রিট দ্বীপের দক্ষিণে অবস্থিত ছোট্ট দ্বীপ গাবদোস হঠাৎ করে সমুদ্র পথে আসা অনিয়মিত অভিবাসীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে আসা অভিবাসীদের সংখ্যা হাজার পেরিয়েছে। গত বছরের একই সময়ে দ্বীপটিতে আসা অভিবাসীদের সংখ্যা ছিল ‘শূন্য’।

গাভদোসে বছরজুড়ে বাস করা স্থায়ী বাসিন্দার সংখ্যা মাত্র ৭০ জন। স্থানীয়রা বলছেন, অভিবাসী আগমনের হারে তারা ‘অবাক’।

সইউএনএইচসিআর স্বীকার করেছে, দ্বীপটির ‘প্রধান চ্যালেঞ্জ’ এখানে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য কোনো অভ্যর্থনা অবকাঠামো নেই।

অনেকেই বলছেন এটি হয়ত গ্রিসের লাম্পেদুসা হয়ে উঠতে পারে। লিবিয়ার তব্রুক শহর থেকে এই ইউরোপীয় দ্বীপের দূরত্ব মাত্র ১৮০ কিলোমিটার।

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার দেওয়া তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে এক হাজার ১৮৬ জন মিশরীয়, পাকিস্তানি ও বাংলাদেশি এই ছোট্ট দ্বীপটিতে এসেছেন। বুধবার (১৩ মার্চ) দ্বীপে এসেছে ৯১ জন অনিয়মিত অভিবাসী। আর গেল সপ্তাহান্তে এ সংখ্যা ছিল ২৮০ জন।

গাভদোস দ্বীপের আয়তন ৩০ কিলোমিটার। দ্বীপের ৭০ জন স্থায়ী বাসিন্দার মধ্যে পরিবারের সংখ্যা মাত্র দুটি। দ্বীপের মেয়র লিলিয়ান স্টেফানাকি ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম গার্ডিয়ানকে বলেন, অন্য বাসিন্দাদের সবাই বয়স্ক মানুষ যাদের বেশিরভাগই একা থাকেন।

২০২৩ সালের পুরো সময়ে দ্বীপে আসা মোট অভিবাসীদের সংখ্যা ছিল মাত্র ৮৬০ জন।

গার্ডিয়ান জানিয়েছে, দ্বীপটিতে শুধু একটি স্কুল, একটি বেকারি এবং দুটি মিনি-মার্কেট রয়েছে। সেখানে অভিবাসীদের জন্য কোনো প্রাথমিক অভ্যর্থনা কাঠামো বা আশ্রয়কেন্দ্র নেই।

ইউএনএইচসিআর গ্রিসের মুখপাত্র স্টেলা নানো বৃহস্পতিবার বলেন, একটি আশ্রয়কেন্দ্রের অনুপস্থিতি স্পষ্টতই দ্বীপে বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।

গাভদোসের মেয়র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ৯ মার্চের সাপ্তাহিক ছুটির পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই দ্বীপে অভিবাসীবোঝাই নৌকা আসছে। এটি আমাদের জন্য একটি বড় বোঝা। এটি একটি ছোটো দ্বীপ। আমাদের এখানে কোনো ব্যবস্থা ও উল্লেখযোগ্য দোকানপাট নেই। খাদ্যের জোগান এখানে একটি বড় সমস্যা। আমাদের আর্থিক সক্ষমতা একেবারেই সীমিত।

তবে সমুদ্রের আবহাওয়া খারাপ থাকলে দ্বীপটিতে অভিবাসীদের গ্রিসের অন্য বড় দ্বীপ ও শহরে স্থানান্তর করাও অসম্ভব। ইউএনএইচসিআর নিশ্চিত করেছে, তারা সম্ভাব্য এই সমস্যাটি নিয়ে চিন্তা করছে।

মুখপাত্র স্টেলা নানু বলেন, আমরা এথেন্স ও স্থানীয় গ্রিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। আমরা বর্তমানে প্রাথমিক মৌলিক চাহিদা মেটাতে কম্বল, স্লিপিং ব্যাগ ও হাইজিন কিটসহ প্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ করছি।

এখানে বেশিরভাগ নতুন আগতদের দ্রুত ক্রিট দ্বীপ এবং গ্রিসে মূল ভূখণ্ডে স্থানান্তর করা হয়। ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, স্থানান্তর হওয়া অভিবাসী আপাতত রেথিমনো ও হেরাক্লিয়ন বন্দরের একটি অভ্যর্থনা কেন্দ্রে এবং চানিয়া বন্দরে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

কিন্তু আবহাওয়া খুব খারাপ হলে গাভদোস থেকে অভিবাসী স্থানান্তর করা সম্ভব নয়। তখন মানুষকে দ্বীপে থাকতে এবং ঘুমাতে হয়।

রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, এমন পরিস্থিতিতে অভিবাসীরা গাভদোসের একটি পরিত্যক্ত ভবনে আশ্রয় নিয়েছিল।

দ্বীপটিতে বর্তমানে শুধু একজন স্থায়ী পুলিশ কর্মকর্তা দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধি হিসেবে ভূমিকা রাখেন।

শেয়ারনিউজ, ৩০ মার্চ ২০২৪

পাঠকের মতামত:

প্রবাস এর সর্বশেষ খবর

প্রবাস - এর সব খবর



রে