ঢাকা, শনিবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় গড়াগড়ি করে কান্না প্রার্থীর

২০২৩ ডিসেম্বর ০৪ ১৫:৩১:২০
মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় গড়াগড়ি করে কান্না প্রার্থীর

নিজস্ব প্রতিবেদক : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীতা বাতিল হওয়ায় জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের বারান্দার মেঝে গড়াগড়ি দিয়ে হাউমাউ করে কেঁদেছেন এক প্রার্থী। ওই প্রার্থীর নাম আবদুল আলী বেপারী। তিনি মনিকগঞ্জ-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। রোববার (০৩ ডিসেম্বর) কাগজপত্র গরমিল থাকায় তার প্রার্থীতা বাতিল করে মানিকগঞ্জ জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা।

জানা গেছে, আবদুল আলী বেপারী এবারই প্রথম মানিকগঞ্জ–১ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তবে এটিই তাঁর প্রথম নির্বাচন নয়। এর আগে তিনি ৩ বার ইউনিয়ন পরিষদ (নির্বাচনে) অংশ নিয়েছেন। সেখানেও দুঃখ কম নয় তাঁর। কারণ, ভীষণভাবে মানুষের জন্য কাজ করতে চেয়ে প্রতিবারই জামানত হারিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে নাতিকে নিয়ে মানিকগঞ্জ-১ আসনে (ঘিওর, দৌলতপুর ও শিবালয়) স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন আবদুল আলী বেপারী। রোববার (০৩ ডিসেম্বর) দুপুরে যাচাইবাছাই শেষে তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতার। এরপরই আবদুল আলী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের বারান্দার মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে কাঁদতে থাকেন। পরে সেখানে উপস্থিত আইন–শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাঁকে সান্ত্বনা দেন এবং প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিলের পরার্মশ দেন।

মো. আবদুল আলীর বাড়ি মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার সিংজুরী ইউনিয়নের বেড়াডাঙ্গা গ্রামে। তিনি ইট-বালু সরবরাহের ব্যবসা করতেন। এখন অবসরে গ্রামের বাড়িতে থাকেন। স্বশিক্ষিত আলীর তিন ছেলে ও দুই মেয়ের সবাই শিক্ষিত। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়ে পরিবারের সদস্যদের অমত থাকলেও তিনি ২০১১, ২০১৬ এবং ২০২১ সালে ইউপি নির্বাচন করেন। প্রতিবারই তিনি জামানত হারান। এরপরও নির্বাচনে অংশ নিতে এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা করাই তাঁর শখ।

এ বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি এখন আমার ভোটারদের মুখ দেখাব কেমনে? আমি আর বাঁচুমনা। আমি ভোট দিতে না পারলে মরুম, আমার জীবন রাখুম না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমার আবেদন, আমার ভোট আমাকে দিয়ে যেন মরতে পারি। আমার বিশ্বাস আছে, মানুষ আমাকে ভোট দিবে। আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে সংসদে যাইতে চাইছিলাম। যেকোনো চক্রান্তের মাধ্যমে আমার নমিনেশন (মনোনয়ন) বাদ দেওয়া হইছে। আমি এই চক্রান্ত বিশ্বাস করি না।’

তিনি জানান, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে পরিবারের সদস্যদের অমত আছে। আমার স্ত্রী নির্বাচন করতে নিষেধ করলেও আমার মন চায়। নির্বাচন আইলে আমি ঠিক থাকতে পারি না। আমাদের ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দাঁড়াইছি, তখন মনোনয়নপত্র এক প্রতিবেশীর বাড়িতে রেখে আসি। আমার স্ত্রী জানার পর গলায় দা ধরে। এরপরও আমি নির্বাচন করছি। এখন পরিবারের লোকজন খুব-একটা নির্বাচনে দাঁড়াতে বাধা দেয় না। আমি যতদিন বাঁচি, নির্বাচন করেই যাব।’

তার মনোনয়নপত্র বাতিলের বিষয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা রেহেনা আকতার সাংবাদিকদের বলেন, ‘মনোনয়নপত্রের সঙ্গে আয়কর রিটার্ন ও টিন সার্টিফিকেট এবং স্বতন্ত্র-সমর্থক ভোটারের স্বাক্ষরের গরমিল থাকায় ওই প্রার্থীর (আবদুল আলী বেপারী) মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। তবে আগামী ৫ থেকে ৯ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনে তিনি আপিল করার সুযোগ পাবেন।’

শেয়ারনিউজ, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে