ঢাকা, শনিবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

জবি ভিসি পদে ৫ শিক্ষকের নাম

২০২৩ নভেম্বর ২৬ ১৮:০২:০১
জবি ভিসি পদে ৫ শিক্ষকের নাম

নিজস্ব প্রতিবেদক : অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হকের মৃত্যুর পর খালি রযেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্যের পদটি। এর মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে আলোচনা শুরু হয়েছে পরবর্তী উপাচার্য হবেন কে? রাজধানীর পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হওয়ার জন্য আলোচনায় রয়েছেন ঢাকা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র ৫ শিক্ষক।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা আনুষ্ঠানিক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে চলতি সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয়ের ষষ্ঠ উপাচার্যের নাম ঘোষণা করা হতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, উপাচার্য নিয়োগের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক বা শিক্ষকদের একটি তালিকা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রস্তাবনা আলোকে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ, নির্দেশনা বা অনুশাসনের আলোকে উপাচার্য নিয়োগের প্রস্তাবনা রাষ্ট্রপতি ও আচার্য কার্যালয়ে পাঠানো হয়। এরপর রাষ্ট্রপতি নিয়োগের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়ার পর আচার্যের সাচিবিক দায়িত্বে থাকা শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিয়োগের আদেশ প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করে।

উপাচার্য হওয়ার দৌড়ে ৫ জনের মধ্যে ৪ জনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষক। এছাড়াও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষক রয়েছেন একজন। এরমধ্যে রয়েছেন ঢাবির বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন ও রসায়ন বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক সমিতির বর্তমান সভাপতি ও পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভুঁইয়া, বিশ্ববিদ্যালয়টির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন ও সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, ঢাবি শিক্ষক সমিতির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা ও জবির বর্তমান কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ।

উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে জবি আইনের ১০ (১) বলা হয়েছে, উপাচার্য চার বছর মেয়াদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হবেন। আর ১০ (২) উপ-ধারায় বলা হয়েছে, উপ-ধারা (১) এ যা কিছুই থাকুক না কেন, উপাচার্য আচার্যের সন্তোষ অনুযায়ী স্বপদে বহাল থাকবেন।

তাছাড়া ১০ (৩) উপ-ধারায় বলা হয়েছে, উপাচার্যের পদ শূন্য হইলে কিংবা ছুটি, অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে তিনি তাঁর দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হলে, শূন্য পদে নবনিযুক্ত উপাচার্য কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত কিংবা উপাচার্য পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত আচার্যের ভিন্নরূপ সিদ্ধান্ত না থাকা সাপেক্ষে কোষাধ্যক্ষ উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করবেন। বর্তমানে উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ।

জানা গেছে, ২০০৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ঢাবির অণুজীব বিজ্ঞানের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ. কে. এম. সিরাজুল ইসলাম খান ২০০৮ সাল পর্যন্ত প্রথম উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ঢাবির ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস স্টাডিজ বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক আবু হোসেন সিদ্দিক ২০০৯ সাল এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ ২০১৩ সাল পর্যন্ত দ্বায়িত্ব পালন করেন। চতুর্থ উপাচার্য হিসেবে ২০১৩ সালে ঢাবির মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান যোগদান করেন। ২০১৭ সালের ২০ মার্চ তিনি পুনরায় দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগ পান। এরপর ২০২১ সালের ১ জুন পঞ্চম উপাচার্য হিসেবে চার বছরের জন্য পদে নিয়োগ পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ইমদাদুল হক। তবে তিনি পূর্ণ সময় দায়িত্ব পালন করে যেতে পারেননি।

জবির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর দাবি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্য থেকেই উপাচার্য নিয়োগ দেয়া হোক। তাদের মতে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য অনেক যোগ্য ব্যক্তি আছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে গ্রেড-১ পদমর্যাদায় আছেন ৩৬ জন। তাদের মধ্যে অনেকেই ইতোমধ্যে জবির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষসহ বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন।

গণমাধ্যমকে জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবুল কালাম মো. লুৎফর রহমান বলেন, উপাচার্য হবেন একজন ভালো একাডেমিশিয়ানের পাশাপাশি দক্ষ একজন প্রশাসক। কেননা আমাদের নতুন ক্যাম্পাসের কাজ এখনও বাকি রয়েছে। সেটা ত্বরান্বিত করতে উপাচার্য পদে একজন ডাইনামিক লোক দরকার।

জবির জ্যেষ্ঠ শিক্ষক থেকেই উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের গ্রেড-১ পদমর্যাদায় আছেন ৩৬ জন এবং গ্রেড-২ পদমর্যাদায় আছেন ৫৬ জন। তাদের মধ্যে অনেকেই ইতোমধ্যে জবিসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষসহ বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। আমাদের চাওয়া এসব শিক্ষকদের মধ্য থেকে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হোক।

ঢাবি শিক্ষক সমিতির বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভুঁইয়া বলেন, বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষপদগুলো মূলত অ্যাকাডেমিক এবং প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা দেখে নিয়োগ দেওয়া হয়। পাশাপাশি সাংগঠনিক দক্ষতাটাও জরুরি। এসব বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হয়।

শেয়ারনিউজ, ২৬ নভেম্বর ২০২৩

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে