ঢাকা, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতার হাতছানি

২০২৩ সেপ্টেম্বর ০২ ১৫:০৮:২৮
শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতার হাতছানি

নিজস্ব প্রতিবেদক : গত তিন মাস যাবত শেয়ারবাজারের লেনদেনে নিম্নমুখিতা দেখা গেছে। এর মধ্যে সর্বশেষ আগস্টে আগের মাসের তুলনায় দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ ৪৪ শতাংশ কমেছে।

এদিকে লেনদেনের পাশাপাশি গত তিন মাসে সূচকেরও নিম্নমুখিতা দেখা গেছে। ইবিএল সিকিউরিটিজের মাসিক পর্যালোচনায় এই তথ্য উঠে এসেছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, এই বছরের জুনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দৈনিক গড়ে ৭ কোটি ৬০ লাখ ডলারের লেনদেন হয়েছে। এর পরের মাসে লেনদেনের পরিমাণ কমে দাঁড়ায় ৭ কোটি ২০ লাখ ডলারে। সর্বশেষ গত আগস্টে এটি আরো কমে ৪ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে।

লেনদেনের পাশাপাশি এই সময়ে সূচকও কমেছে। এর মধ্যে ডিএসইর সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স বছরের জুন শেষে ছিল ৬ হাজার ৩৪৪ পয়েন্টে। পরের মাস অর্থাৎ জুলাই শেষে সূচকটি দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৩২৫ পয়েন্টে। আর সর্বশেষ আগস্ট শেষে ডিএসইএক্স ছিল ৬ হাজার ২৯৯ পয়েন্টে।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, গত আগস্টে লেনদেন কমার পাশাপাশি শেয়ারবাজারে অস্থিরতা পরিলক্ষিত হয়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কা, সামষ্টিক অর্থনীতির সংকট ও তারল্য সংকটের মতো বিষয়গুলো শেয়ারবাজারকে প্রভাবিত করেছে।

এদিতে গত সপ্তাহের শেয়ারবাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনায় দেখা যায়, এই সময়ে শেয়ারবাজারে সূচক ও লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। গত সপ্তাহে ডিএসইএক্স আগের সপ্তাহের তুলনায় ০.৩১ শতাংশ বেড়ে ৬ হাজার ২৯৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এআগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ৬ হাজার ২৮০ পয়েন্টে। নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়ে ২ হাজার ১৪২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের সপ্তাহ শেষে ছিল ২ হাজার ১৩০ পয়েন্টে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ০.৫০ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৩৭২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ১ হাজার ৩৬৬ পয়েন্টে।

ডিএসইতে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া মোট ৪০৩টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৯০টির, কমেছে ৬৮টির, অপরিবর্তিত ছিল ২২৪টির। আর লেনদেন হয়নি ২১টির। আগের সপ্তাহে লেনদেন হওয়া ৪০৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছিল ৯৭টির , কমেছিল ৬০টির, অপরিবর্তিত ছিল ২২৫টির। আর লেনদেন হয়নি ২১টির।

গত সপ্তাহের শুরুতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি বাজারে স্টেকহোল্ডার তথা ব্যাংক, মার্চেন্ট ব্যাংক, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান, ব্রোকারেজ হাউজ ও ডিলারদের নিয়ে সভায় বসেছিল। সেখানে বিএসইসি স্টেকহোল্ডারদের বাজারে সক্রিয় হওয়ার অনুরোধ করেছিল। তারই ধারাবাহিকতায় গেল সপ্তাহের বাজারে কিছুটা ইতিবাচক আচরণ দেখা গেছে।

বিএসইসি জানিয়েছে, আগামী ১৬ সেপ্টেম্বরবাজার সংশ্লিষ্টদের নিয়ে কক্সবাজারে সী পার্ল রিসোর্টে আবারও সভায় মিলিত হবে। বাজারে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের আরও সক্রিয় করার উদ্দেশ্যেই বিএসইসি সৈকত নগরী কক্সবাজারে এই ধরনের সভার আয়োজন করছে। আশা করা যায়, ওই সভা থেকে বাজারের জন্য ইতিবাচক কিছু বেরিয়ে আসবে।

এদিকে, সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার বিকালে বাংলাদেশ ব্যাংক শেয়ারবাজারে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সম্পৃক্ততা আরও বাড়ানোর জন্য এক্সপোজার লিমিট আরও উদার করেছে। নতুন উদার নীতি অনুযায়ি, এখন থেকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে বন্ড, ডিবেঞ্চার, মিউচুয়াল ফান্ড ও সুকুক এক্সপোজার লিমিটের বাইরে থাকবে। আগে কেবল বন্ডকে এক্সপোজার লিমিটের বাইরে রাখা হয়েছিল।এরফলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য বড় আকারের সুযোগ তৈরি হবে।

বাজর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান গর্ভণর আবদুর রউফ তালুকদারের ব্যক্তিগত উদ্যোগে শেয়ারবাজারের সংকট উত্তরণে বার বার এমন সহযোগিতা সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। তিনি গর্ভণরের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই শেয়ারাবাজারের প্রতি নমনীয় ও সহযোগী মনোভাব নিয়ে এগুচ্ছেন। এজন্য শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীসহ সবাই আবদুর রউফ তালুকদারের প্রতি কৃতজ্ঞ বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, শেয়ারবাজারের সূচক এমনিতেই তলানিতে অবস্থান করছে। এখন বাজারের সিংহভাগ শেয়ারই বিনিয়োগ উপযোগি। বাাজার আর নিচের দিকে যাওয়ার জায়গা নেই। এখন যদি বাজার সংশ্লিষ্ট স্টকহোল্ডাররা ন্যুনতম সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে আসে, তাহলে বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরানো কেবল সময়ের ব্যাপার মাত্র।

শেয়ারনিউজ, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে