ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
Sharenews24

জাতিসংঘে ভাষণে যা বললেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৭ ১০:৫৬:৩৬
জাতিসংঘে ভাষণে যা বললেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে বাংলাদেশে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। নিউইয়র্কে বাংলায় প্রদত্ত ভাষণে তিনি বলেন, তার সরকার স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় গৃহীত গভীর কাঠামোগত সংস্কারের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

ড. ইউনূস বলেন,“আগামী নির্বাচনে যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন, সংস্কার বাস্তবায়নে আর কোনো অনিশ্চয়তা থাকবে না।”

তিনি জানান, নির্বাহী আদেশে সংস্কার চাপিয়ে না দিয়ে অংশগ্রহণমূলক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ১১টি স্বাধীন সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। এই কমিশনগুলো বিচারব্যবস্থা, নির্বাচন পদ্ধতি, জনপ্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা, দুর্নীতি দমন ও নারী অধিকারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুপারিশ দিয়েছে।

মানবাধিকার ও জবাবদিহি

স্বৈরশাসনকালীন মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্তে জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনারকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলেও ভাষণে উল্লেখ করেন ইউনূস। তিনি জানান, সেই সুপারিশগুলো জাতীয় সংস্কার পরিকল্পনায় যুক্ত করা হয়েছে।বাংলাদেশ ইতোমধ্যে গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক কনভেনশন ,জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী প্রোটোকল এতে স্বাক্ষর করেছে এবং তিন বছরের জন্য জাতিসংঘ মানবাধিকার মিশন শুরু হয়েছে।

অর্থনৈতিক সংস্কার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান

পূর্ববর্তী সরকারের দুর্নীতি নিয়ে কঠোর সমালোচনা করে ড. ইউনূস বলেন,“অর্থনীতিকে ভঙ্গুর করে তোলা হয়েছে জনসম্পদ চুরির মাধ্যমে।”

তিনি আশ্বাস দেন, তার নেতৃত্বাধীন সরকার এমন অর্থনৈতিক সংস্কার বাস্তবায়ন করছে, যাতে উন্নয়নের নামে আর কখনো জনগণের সম্পদ আত্মসাৎ না হয়।

তরুণদের জন্য ভবিষ্যতের রূপরেখা

তরুণদের সমাজ পরিবর্তনের মূল শক্তি হিসেবে তুলে ধরে ড. ইউনূস বলেন,তথ্যপ্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, নবায়নযোগ্য শক্তি ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তিতে দক্ষতা বৃদ্ধিতে সরকার বড় ধরনের বিনিয়োগ করছে। লক্ষ্য — তরুণদের উদ্যোক্তায় পরিণত করা।

রোহিঙ্গা সংকট ও আঞ্চলিক সহযোগিতা

রোহিঙ্গা সমস্যার প্রসঙ্গে তিনি বলেন,“রাখাইনের বৈষম্যমূলক নীতি পরিবর্তন না হলে এই সংকটের সমাধান সম্ভব নয়।”

তিনি রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ও সমান অধিকার নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক সংলাপের আহ্বান জানান। পাশাপাশি জানান, রোহিঙ্গা সমস্যা মিয়ানমারের হলেও ভুক্তভোগী বাংলাদেশ।

এছাড়া আঞ্চলিক সহযোগিতার প্রসঙ্গে বলেন,“প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারে ন্যায্যতা ও সহমর্মিতা চর্চা করতে হবে।”বাংলাদেশ এখন প্রথম দক্ষিণ এশীয় দেশ হিসেবে জাতিসংঘের পানি সংক্রান্ত কনভেনশনে যোগ দিয়েছে।

জাতিসংঘের ৮০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ড. ইউনূস বলেন:“বহুপক্ষীয় কূটনীতি মানবজাতির শেষ ভরসা। আগামী বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।”ভাষণের শেষ দিকে তিনি বলেন,“গত বছর আমার জনগণ প্রমাণ করেছে যে পরিবর্তন সম্ভব এবং অপরিহার্য। কিন্তু একা কেউ তা পারবে না—এখন সময় একসঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার।”

মুসআব/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে