ঢাকা, বুধবার, ২০ আগস্ট ২০২৫
Sharenews24

কলকাতায় ‘রুটিনে’ চলছে আওয়ামী লীগের মিশন!

২০২৫ আগস্ট ২০ ১১:১১:২২
কলকাতায় ‘রুটিনে’ চলছে আওয়ামী লীগের মিশন!

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেখ হাসিনার পতনের পর এক বছর পেরিয়ে গেলেও থেমে নেই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক তৎপরতা। ভারতে অবস্থানরত পলাতক নেতারা কলকাতার নিউ টাউনে গড়ে তুলেছেন নতুন ঘাঁটি—যেখানে চলছে সংগঠিত জীবনযাপন ও দল পুনর্গঠনের পরিকল্পনা।

ভারতের কলকাতার নিউ টাউনের একটি বাণিজ্যিক ভবনের অষ্টম তলায় আওয়ামী লীগের একটি গোপন রাজনৈতিক কার্যালয় গড়ে তোলা হয়েছে বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট, দ্য ডেইলি স্টার ও TBS নিউজ-এর খবরে উঠে এসেছে।

অফিসটিতে নেই কোনো ব্যানার, ফেস্টুন কিংবা রাজনৈতিক চিহ্ন। কক্ষটি ব্যবহৃত হচ্ছে ছোট মিটিং, অনলাইন বৈঠক ও সাংগঠনিক দিকনির্দেশনার কাজে। নেতারা এটিকে 'অফিস' বলতে নারাজ—তারা বলছেন, এটি শুধু একটি “জায়গা”, যেখানে তারা মাঝে মাঝে একত্রিত হন।

নিউ টাউনে অবস্থানরত সাবেক এক এমপি জানান, তাদের প্রতিদিনের রুটিন বেশ ব্যস্ত:

সকালে ফজরের নামাজ,

এরপর হাঁটা বা জিম (ভারোত্তোলন ও পিলাটেস),

দুপুরে নিজেরাই রান্না করে খাওয়া,

সন্ধ্যায় ভার্চুয়াল বৈঠক।

রান্নার অভিজ্ঞতা না থাকায় অনেকে ভিডিও কলে ঢাকায় স্ত্রীর সহায়তায় রান্না শেখার চেষ্টা করছেন। মাসিক ভাড়া ৩০ হাজার টাকার ফ্ল্যাটে তারা এই নতুন জীবনযাত্রার সাথে খাপ খাইয়ে নিচ্ছেন।

ভারতে অবস্থান করছেন শেখ হাসিনা সরকারের সাবেক মন্ত্রিপরিষদের অনেক সদস্য। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য:

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল – নিউ টাউনে পরিবারসহ থাকছেন, প্রতি সপ্তাহে দিল্লিতে দলীয় বৈঠকে অংশ নেন।

সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী এ আর আরাফাত – ‘বাংলাদেশকে পুনরুদ্ধার’ মিশনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

সাবেক কূটনীতিক হারুন আল রশিদ – বর্তমানে কানাডার অটোয়ায় অবস্থান করছেন, লিখছেন একটি ডিসটোপিয়ান উপন্যাস।

আওয়ামী লীগের অন্তত ২০০ নেতা, যার মধ্যে প্রায় ৮০ জন বর্তমান এমপি ও ১০-১২ জন প্রাক্তন এমপি কলকাতা ও আশপাশে অবস্থান করছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কলকাতার নিউ টাউন, সল্ট লেক ও রাজারহাট এলাকায় তারা ছড়িয়ে আছেন। নির্বাচিত হয়েছে এই স্থানগুলো:

অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া সাশ্রয়ী,

উন্নত স্বাস্থ্যসেবা ও ফিটনেস সুবিধা,

আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছাকাছি অবস্থান,

কম জনবহুল এবং নজর এড়ানো সহজ।

এমনকি ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাও এসব কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অবগত, তবে কোনো প্রকাশ্য পদক্ষেপ এখনও নেয়নি।

আসাদুজ্জামান খান কামালের ভাষায়, “আমরা এখানে আরাম করতে আসিনি। এসেছি বাঁচতে ও ভবিষ্যতের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে।”নেতারা প্রতিনিয়ত অনলাইন সভা করছেন দেশ-বিদেশের নেতাকর্মীদের সঙ্গে, হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

বাংলাদেশে রাজনৈতিক পালাবদলের প্রেক্ষাপটে ভারতে আশ্রিত আওয়ামী লীগ নেতাদের সংগঠিত জীবন এবং গোপন রাজনৈতিক তৎপরতা এখন এক নতুন বাস্তবতা। নিউ টাউনের এই “গোপন ঘাঁটি” হয়তো ভবিষ্যতের কোনো বড় পরিবর্তনের সূচনা কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে।

জাহিদ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে