ঢাকা, শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫
Sharenews24

এক মঞ্চে জাপার ৫ অংশের নেতারা, বিরল দৃশ্যের অবতারণা

২০২৫ জুলাই ১৫ ০০:০৭:৫২
এক মঞ্চে জাপার ৫ অংশের নেতারা, বিরল দৃশ্যের অবতারণা

নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকীতে এক বিরল দৃশ্যের অবতারণা হয়েছে। 'পল্লীবন্ধু এরশাদ স্মৃতি সংসদ' আয়োজিত স্মরণসভায় এরশাদের হাতে গড়া দলের একাধিক অংশের নেতারা একই মঞ্চে সমবেত হয়েছেন। এই সভায় সাবেক মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুসহ জাপা ছেড়ে যাওয়া একাধিক নেতা অংশ নেন এবং সবাই জাতীয় পার্টিকে ঐক্যবদ্ধ রাখার জোর তাগিদ দেন।

মূলত জাতীয় পার্টির সদ্য অব্যাহতি পাওয়া সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির বৃহত্তর ঐক্য প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে 'পল্লীবন্ধু এরশাদ স্মৃতি সংসদ' ব্যানারে এই স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। যদিও এই নেতারা জিএম কাদেরের দেওয়া অব্যাহতি মানছেন না এবং এখনো দলে আছেন বলে দাবি করেছেন।

সোমবার (১৪ জুলাই) রাজধানীর গুলশানে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে এরশাদের জাতীয় পার্টির পাশাপাশি, জাতীয় পার্টি (রওশন এরশাদ), জাতীয় পার্টি—জেপি, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) ও জাতীয় পার্টি (মতিন)-এর নেতারা এক মঞ্চে বসেন।

জাপার সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্মরণ সভায় বিভিন্ন অংশের নেতারা বক্তব্য রাখেন।

জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু তার প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, তাকে বলা হয় তিনি জাতীয় পার্টি ভেঙেছেন, কিন্তু তিনি দল ভাঙেননি, দল তাকে বের করে দিয়েছে। তিনি তার নেতৃত্বে আন্দোলন করে এরশাদকে কারাগার থেকে মুক্ত করেছিলেন উল্লেখ করে বলেন, তিনি সব সময় ঐক্যের কথা বলে এসেছেন। আজ এরশাদ সাহেবের স্মরণসভায় এসে বৃহত্তর ঐক্যের যে কথা শোনা যাচ্ছে, তা যদি বাস্তবে কার্যকর করা যায়, তাহলে দেশ ও দেশের মানুষ উপকৃত হবে।

তিনি আরও বলেন, এরশাদকে একসময় স্বৈরাচার বলা হতো, কিন্তু ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগকে স্বৈরাচার বলা হচ্ছে। সময়ের পরিবর্তনে আরও অনেক দলকে স্বৈরাচার বলা হবে। তিনি মনে করেন, সব সরকারই সংস্কার করতে চায় এবং ভালো কাজ করতে চায়, কিন্তু নানা বাধার কারণে সবকিছু করা যায় না। এরশাদ সাহেব যে সংস্কার করে গেছেন, তা কোনো সরকার করতে পারেনি।

ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ তার বক্তব্যে বলেন, ছাত্র-জনতা জুলাই আন্দোলনে যে জন্য জীবন দিয়েছেন, সেই স্বপ্ন এখনো পূরণ হয়নি। দেশে আজ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে এবং সাধারণ মানুষ চরমভাবে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে। দেশের এই অস্থির সময়ে দেশ ও দেশের মানুষের প্রয়োজনে জাতীয় পার্টিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

তিনি বলেন, তাদের ভুলভ্রান্তি থাকতে পারে, তবে শেষ জীবনে তাদের উচিত দেশকে কিছু দেওয়া। তাই যারা আজ এক মঞ্চে উপস্থিত হয়েছেন, তাদের উচিত হবে সবাই মিলে জাতীয় পার্টিকে ঐক্যবদ্ধ করে দেশের বৃহত্তর কল্যাণে কাজ করা। তিনি আরও বলেন, তারা অবশ্যই নির্বাচন চান, তবে তার আগে দেশের স্থিতিশীল পরিবেশ চান। তিনি উল্লেখ করেন, আজ সরকার যে সংস্কার কার্যক্রম শুরু করেছে, সেই সংস্কার এরশাদ সাহেব ৩৫ বছর আগে শুরু করে গেছেন।

স্মরণ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জেপির সাধারণ সম্পাদক শেখ শহিদুল ইসলাম, জাপার কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, জাতীয় পার্টি (রওশন এরশাদ) নির্বাহী সভাপতি কাজী ফিরোজ রশীদ, সাবেক এমপি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, জনতা পার্টি বাংলাদেশ—জেপিবির প্রধান উপদেষ্টা সাবেক এমপি শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর এবং নির্বাহী চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার মিলন, জাতীয় পার্টির (মতিন) মহাসচিব জাফর আহমেদ জয়, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য দিদারুল আলম চৌধুরী, জাপার সংসদ সদস্য নাজমা আক্তার, অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা ও অধ্যাপক নুরুল ইসলাম মিলন, জাপার ঢাকা বিভাগীয় অতিরিক্ত মহাসচিব লিয়াকত হোসেন খোকা, খুলনা বিভাগের সাবেক অতিরিক্ত মহাসচিব সাহিদুর রহমান টেপা, সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তফা আল মাহমুদ, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, জহিরুল ইসলাম জহির, জসিম উদ্দিন ভুঁইয়াসহ প্রমুখ নেতা।

মিজান/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে