ঢাকা, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫
Sharenews24

গোসল না করেও আদায় হবে জুমার নামাজ? হাদিস কী বলে

২০২৫ জুন ২০ ১২:৩৭:২০
গোসল না করেও আদায় হবে জুমার নামাজ? হাদিস কী বলে

নিজস্ব প্রতিবেদক: জুমার দিন বা শুক্রবার সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন। এই দিনের মর্যাদা ও তাৎপর্য অনেক বেশি। ‘জুমা’ শব্দটি আরবি। এর অর্থ একত্র হওয়া বা একত্র করা।

কোরআন মাজিদে জুমা নামে একটি সুরা রয়েছে। এতে বলা হয়েছে-হে ঈমানদারগণ! জুমার দিনে (১) যখন সালাতের জন্য ডাকা হয় (২) তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও (৩)এবং কেনাবেচা ত্যাগ কর, এটাই তোমাদের জন্য সর্বোত্তম, যদি তোমরা জানতে। অতঃপর সালাত শেষ হলে তোমরা জমিনে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করো ও আল্লাহকে খুব বেশি স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। (সুরা জুমা, আয়াত: ৯-১০)।

জুমার দিনে গোসল প্রসঙ্গে আবু সায়ীদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- জুমার দিন প্রত্যেক বালিগের (প্রাপ্তবয়স্ক) জন্য গোসল করা কর্তব্য (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৮৩৫, সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৮৩০)।

এ বিষয়ে আরও কিছু হাদিস পাওয়া যায়। অন্য আরেকটি হাদিসে আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রা.) বলেছেন, উমর (রা.) জুমার দিনে সমবেত লোকদের সামনে খুতবা প্রদান করছিলেন। এমন সময় রাসুল (সা.) এর সাহাবিদের মধ্য থেকে জনৈক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করলেন। উমর (রা.) তাকে জোরে ডেকে বললেন, এটা কোনো সময়? ওই ব্যক্তি বললেন, আমি আজ কাজে ব্যস্ত ছিলাম, ঘরে ফিরে না যেতেই আজান শুনতে পেলাম, তাই আমি অজুর অতিরিক্ত কিছুই করতে পারিনি। উমর (রা.) বললেন, শুধু অজুই করেছ। অথচ তোমার জানা আছে রাসুল (সা.) গোসল করে আসার জন্য আদেশ করতেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১২২৮)

আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রা.) আরেকটি হাদিসে বলেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) একবার মিম্বরে দাঁড়িয়ে বললেন, তোমাদের কেউ জুমায় এলে সে যেন গোসল করে নেয় (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৮২৫)। আবার আওস ইবনু আওস (রা.) আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন- যে জুমার দিনে সকাল সকাল গোসল করল এবং গোসল করালো, তারপর ইমামের কাছে গিয়ে বসে চুপ করে মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনল তার প্রত্যেক কদমের বিনিময়ে আছে এক বছরের সিয়াম (রোজা) ও কিয়ামের (সালাতের) সওয়াব (তিরমিজি, হাদিস: ৪৯৬, ইবনু মাজাহ, হাদিস: ১০৮৭)।

উপরের হাদিসগুলো থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়—জুমার দিনে গোসল করাকে ইসলামে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে গোসল ছাড়া জুমার নামাজ আদায় হবে কি না, সে বিষয়ে আলেমদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে।

অধিকাংশ আলেম মনে করেন, যেহেতু রাসুল (সা.) জুমার দিনে গোসল করতে উৎসাহ দিয়েছেন, তাই নামাজে যাওয়ার আগে গোসল করাই সর্বোত্তম ও সুন্নতসম্মত। অপরপক্ষে কিছু আলেমের মত হলো—রাসুল (সা.) এর যুগে মানুষ সকাল থেকে কাজকর্মে ব্যস্ত থাকত, শরীর ঘামে ভিজে যেত। সেই প্রেক্ষাপটে পরিচ্ছন্নতা রক্ষায় গোসলের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। তাই যদি কারও ওপর গোসল ফরজ না হয়, তবে জুমার দিন গোসল না করেও নামাজ আদায় বৈধ হবে।

মুয়াজ/

পাঠকের মতামত:

লাইফ স্টাইল এর সর্বশেষ খবর

লাইফ স্টাইল - এর সব খবর



রে