ঢাকা, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫
Sharenews24

৩৩০ একর জমি হারাল বাংলাদেশ

২০২৫ জুন ১৮ ১৯:১৮:৩৫
৩৩০ একর জমি হারাল বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক : পঞ্চগড় জেলার সদর, তেতুলিয়া ও বোদা উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় প্রায় ৩৩০ একরের বেশি অমীমাংসিত জমি দীর্ঘদিন ধরে দখল করে রেখেছে ভারত। ভূমি বিশেষজ্ঞদের মতে, উন্নত প্রকৌশল প্রযুক্তি ও নিরপেক্ষ জরিপ পরিচালনার মাধ্যমে এই জমি ফেরত আনা সম্ভব, যা পরে ভূমিহীন ও দরিদ্র পরিবারগুলোর পুনর্বাসনে ব্যবহার করা যেতে পারে।

২০১৫ সালের ৩১ আগস্ট বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সিটমহল বিনিময় চুক্তি বাস্তবায়িত হয়। এই চুক্তির আওতায় ভারতের অভ্যন্তরে থাকা বাংলাদেশের ৫১টি সিটমহল (৭,১১০ একর) এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা ভারতের ১১১টি সিটমহল (১৭,১৬০ একর) বিনিময় হয়। কিন্তু সীমান্তবাসীদের অভিযোগ—ভারত জমির দিক থেকে লাভবান না হওয়ায় পরবর্তীতে নানা কৌশলে জমি দখল করে নেয়।

বিশেষ করে ২০০৮ সালের পর থেকে বিএসএফ ধীরে ধীরে এসব জমি দখলে নেয়, এবং ২০১৫ সালের বিনিময়ের সময় ভারতের পক্ষে পিলার স্থাপন করে দখল চূড়ান্ত করে।

জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্র মতে:

তেতুলিয়া: বাংলাবান্ধা থেকে দর্জিপাড়া পর্যন্ত প্রায় ১৫০ একর

পঞ্চগড় সদর: সিংপাড়া ও ক্ষুদিপাড়ায় ৪৮৭ একর

বোদা: নাওতারি নবাবগঞ্জ এলাকায় ৯৩ একর

ভারতের ফুলবাড়ি, গোয়ালগঞ্জ, নয়াবাড়ি, সিমেট্রি, হাফতিয়াগঞ্জ ও সিঙ্গিমারি বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা এসব জমিতে পিলার স্থাপন, কাঁটাতারের বেড়া ও পোস্ট নির্মাণ করেছে বলেও জানা গেছে।

সীমান্তবর্তী মহানন্দা, করতোয়া ও সুই নদীর তীরবর্তী জমিতে চাষ করতে বাধা দিচ্ছে বিএসএফ। কৃষকদের ধরে নিয়ে যাওয়া, মারধর বা গুলি করে হত্যার অভিযোগও পাওয়া গেছে।

একসময় দখল হওয়া কাসিমগঞ্জ এলাকার ৩৭০ নম্বর পিলারের পাশে ১৫০ একর জমি ৫৬ বছর পর বিডিআর পুনরুদ্ধার করলেও, অনেক জমিই এখনও ভারতের নিয়ন্ত্রণে।

বড়শী ইউনিয়নের ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে—৯৩ একরের মধ্যে ৭০ একর জমি স্থানীয়দের নামে রেকর্ডভুক্ত, তবে বাকি ২০ একরের দলিলপত্র অনুপস্থিত। ভারত সেখানে চা বাগান স্থাপন করে কার্যত দখল নিশ্চিত করেছে।

ভূমি অফিস, বিজিবি, বিএসএফ ও যৌথ বাউন্ডারি ওয়ার্কিং গ্রুপের মাধ্যমে নতুন জরিপ ও জমির সুনির্দিষ্ট সীমারেখা নির্ধারণের দাবি উঠেছে স্থানীয়দের পক্ষ থেকে।

সীমান্তবাসীরা অভিযোগ করছেন, গত ১৫ বছর ধরে সরকার ভারতের পক্ষাবলম্বী অবস্থানে থেকেছে এবং জমি হারানোর পরেও কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি।

তাদের বক্তব্য, "আর নতজানু পররাষ্ট্রনীতি চলবে না। জনগণের ন্যায্য অধিকার রক্ষায় সরকারের দৃঢ় অবস্থান প্রয়োজন।"

মুয়াজ/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে