ঢাকা, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
Sharenews24

সংস্কারের নামে ধর্মে আঘাত, আজহারীর ফেসবুক পোস্টে ঝড়

২০২৫ এপ্রিল ২৩ ০৮:৪৯:০১
সংস্কারের নামে ধর্মে আঘাত, আজহারীর ফেসবুক পোস্টে ঝড়

নিজস্ব প্রতিবেদক: নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত সুপারিশগুলোকে ধর্মীয় অনুশাসন ও সামাজিক মূল্যবোধের প্রতি অবমাননাকর আখ্যা দিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন দেশের প্রখ্যাত ইসলামিক স্কলার মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী। মঙ্গলবার গভীর রাতে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই প্রস্তাবনাগুলোর কঠোর প্রতিবাদ জানিয়ে কমিশনটি অবিলম্বে বিলুপ্ত করার দাবি জানান।

আজহারী বলেন, "নীতি-আদর্শহীন ও ধর্মবিরোধী প্রস্তাবনা এ দেশের কোনো নাগরিক মেনে নেবে না নারী বা পুরুষ নির্বিশেষে। এসব সুপারিশ সামাজিক কাঠামো ও ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত হানার সুপরিকল্পিত প্রচেষ্টা।"

আজহারীর মতে, সংস্কার কমিশনের সুপারিশে বিশেষভাবে আঘাত করা হয়েছে বিয়ে, তালাক, ভরণপোষণ ও উত্তরাধিকার সংক্রান্ত ধর্মভিত্তিক পারিবারিক আইনগুলোর ওপর। তিনি বলেন, "বাংলাদেশে মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান প্রতিটি ধর্মেরই স্বতন্ত্র পারিবারিক আইন রয়েছে। সেই আইনকে এক করে অভিন্ন পারিবারিক আইন তৈরির প্রস্তাব ধর্মীয় স্বাধীনতার পরিপন্থী।"

তিনি আরও বলেন, "সংস্কারের নামে ধর্মীয় মূল্যবোধকে উপেক্ষা করে যে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে, তা সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের বিশ্বাসকে উপহাস করার শামিল। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণকে সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করে কোনো সংস্কার দেশের মানুষের মাঝে গ্রহণযোগ্যতা পাবে না।"

আজহারী ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ বিষয়ক সুপারিশের কড়া সমালোচনা করে বলেন, "বিয়ে একটি পবিত্র সম্পর্ক। এর মাঝে ধর্ষণের গন্ধ খোঁজা কেবল বিভ্রান্তি ছড়ানোই নয়, বরং এটি সমাজের মৌলিক ঐতিহ্যকে ধ্বংস করার অপচেষ্টা। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের স্বাভাবিক খুনসুটিকে ‘ধর্ষণ’ হিসেবে প্রচার করা হাস্যকর এবং বিপজ্জনক।"

আজহারী বলেন, "যেখানে সংবিধানের ১৮(২) অনুচ্ছেদে পতিতাবৃত্তি নিষিদ্ধ, সেখানে এই কমিশন এটিকে পেশা হিসেবে দেখাতে চায়। এটি নারীত্বের চরম অপমান এবং সমাজে অশ্লীলতা ছড়িয়ে দেওয়ার সুগভীর ষড়যন্ত্র।"

নারী-পুরুষের জায়গায় ‘লিঙ্গ পরিচয়’ শব্দের প্রস্তাব নিয়েও তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন। আজহারীর ভাষায়, "এটি মূলত সমকামীতা, উভকামিতা, ট্রান্সজেন্ডার তথা এলজিবিটিকিউ+ মতবাদের অজুহাতে ধর্ম ও সমাজকে অবমূল্যায়ন করার কৌশল।"

তিনি আরও বলেন, "এই কমিশনের উদ্দেশ্য হলো সংবিধানের ২(ক) অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামের স্বীকৃতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। এমন প্রয়াস দেশের ধর্মপ্রাণ জনগণের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।"

আজহারী তার বক্তব্যে স্পষ্টভাবে বলেন, "আমরা দাবি জানাচ্ছি অনতিবিলম্বে এই বিতর্কিত নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন বিলুপ্ত এবং তাদের প্রকাশিত/অপ্রকাশিত প্রতিবেদন সম্পূর্ণভাবে বাতিল করা হোক। পাশাপাশি, ধর্মীয় অনুশাসনকে সম্মান জানিয়ে নারী-পুরুষের ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হোক।"

মুসআব/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে