ঢাকা, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫
Sharenews24

ফিরতে চায় আ.লীগ, তৈরি হচ্ছে গোপন মাস্টারপ্ল্যান

২০২৫ এপ্রিল ২০ ০৯:০৬:৫৮
ফিরতে চায় আ.লীগ, তৈরি হচ্ছে গোপন মাস্টারপ্ল্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগ আবারও রাজনীতির মাঠে সক্রিয় হতে শুরু করেছে। গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আট মাস পর দলটি পুনরায় সংগঠিত হয়ে রাজপথে ফিরছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এটি নিছক কিছু নেতাকর্মীর বিচ্ছিন্ন উদ্যোগ নয়, বরং একটি সুপরিকল্পিত মাস্টারপ্ল্যানের অংশ।

বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিল এবং গোপনে সমাবেশ আয়োজনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের সংগঠিত হওয়ার প্রচেষ্টা এখন অনেকটাই দৃশ্যমান। বিশেষ করে রাজধানীর উত্তরায় সম্প্রতি অনুষ্ঠিত একটি মিছিল নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। উত্তরখান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান মিলনের নেতৃত্বে হওয়া এই মিছিলে অংশ নেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।

গত বছরের ৫ আগস্ট, দেশের ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারায় আওয়ামী লীগ সরকার। শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান, এবং অধিকাংশ শীর্ষনেতা আত্মগোপনে চলে যান বা দেশ ত্যাগ করেন। ওই সময়ই ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়, যদিও মূল দলটি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত ঝুলে আছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রশাসনের কিছু অংশ এবং বিদেশি কিছু চক্র আওয়ামী লীগের পুনরুদ্ধারে কাজ করছে। এসব গোষ্ঠীর সহায়তা, আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা এবং রাজনৈতিক আশ্রয়ে দলটি ফের রাজনীতির মাঠে সক্রিয় হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।

অনেকেই মনে করেন, তৃতীয় রাজনৈতিক বিকল্প শক্তিকে ঠেকাতে দেশের অভ্যন্তরে ও আন্তর্জাতিক মহলে একটি মহল আওয়ামী লীগকে ‘নিয়ন্ত্রিত বিরোধী দল’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চায়। বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, যদি এসব ষড়যন্ত্র সফল হয়, তবে ‘জুলাই গণহত্যা’র বিচারও ঝুলে যেতে পারে রাজনৈতিক মামলার ফাঁদে।

ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেন, “ফ্যাসিজম যেন আবার মাথা না তোলে, সেজন্য আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা জরুরি। এটিই হবে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সংস্কার।”

সম্প্রতি গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ উঠেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়কের ওপর। এছাড়া চট্টগ্রামের ওয়াসা মোড়ে একই সংগঠনের নেতাদের ওপর হামলার অভিযোগ রয়েছে। এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, “আওয়ামী লীগ যেন মিছিল করতে না পারে, সে বিষয়ে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে পুলিশ ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে।”

জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, “আপনারা যদি কম্প্রোমাইজের রাজনীতি করেন, আমি করব শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণ। আমি শুরু করলে সামাল দিতে পারবেন না। সাবধান হোন।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল বলেন, “আমি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের পক্ষে নই। তবে যারা অপরাধ করেছে, তাদের বিচারের আওতায় আনতেই হবে।”

কেএইচ/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে