ঢাকা, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫
Sharenews24

রপ্তানি বাড়লেও যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউতে পোশাকের দাম কমেছে

২০২৫ মার্চ ১৭ ১১:২১:০৭
রপ্তানি বাড়লেও যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউতে পোশাকের দাম কমেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো প্রধান বাজারে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বৃদ্ধি পেলেও প্রতি পোশাকের দাম কমেছে। আন্তর্জাতিক ক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলো অন্যান্য দেশ থেকে পোশাক কিনতে বেশি দাম দিলেও বাংলাদেশের রপ্তানিকারকদের দাম কমানোর চাপ দিচ্ছে।

অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (ওটেক্সা) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের প্রতি পোশাকের দাম ২.২০ শতাংশ কমেছে। তবে একই সময়ে রপ্তানি আগের বছরের তুলনায় ৪৫.৯৩ শতাংশ বেড়ে ৭৯৯.৬৫ মিলিয়ন ডলার হয়েছে।

ওটেক্সার তথ্যমতে, আলোচ্য সময় বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি ৪৯.২১ শতাংশ, ভিয়েতনাম থেকে ১৭.০৫ শতাংশ, চীন থেকে ৯.৩৬ শতাংশ এবং অন্যান্য দেশ থেকে ১৮.৪৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরিসংখ্যান অফিস ইউরোস্ট্যাটের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে ইইউতে বাংলাদেশের প্রতি পোশাকের দাম ৪.৮৪ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

তবে একই বছরে ইইউতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ৪.৮৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১৯.৭৭ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।

আলোচ্য সময়ে চীনের রপ্তানি ১২.৫ শতাংশ, ইইউয়ের মোট পোশাক আমদানি ৮.৯৮ শতাংশ বেড়েছে।

ইইউয়ের আমদানি করা পোশাকের গড় দাম ৬.৮৩ শতাংশ, চীনা পণ্যের দাম ৮.৪৩ শতাংশ, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ার পণ্যের দাম উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ২০২১ সালে কার্যকর হওয়া ইইউ ও ভিয়েতনামের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) ধীরে ধীরে শুল্ক সুবিধা বাড়িয়ে ভিয়েতনামকে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে দিয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা তুলনামূলক কম দাম পাচ্ছেন।

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান জানিয়েছেন, তুলা, সুতা, কাপড়ের দাম এবং জাহাজ ভাড়া কমে যাওয়ায় পোশাকের দাম হ্রাস পেয়েছে। তবে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের ফলে কার্যাদেশ বেড়েছে।

বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা সাধারণত কম ও মাঝারি মূল্যের পোশাক তৈরি করেন, যা ক্রেতারা কম দামে কিনতে চান। তবে অনেক প্রতিষ্ঠান এখন বেশি দামের পোশাক রপ্তানিতে মনোযোগ দিচ্ছে। উচ্চমানের পণ্য উৎপাদন ও সময়মতো সরবরাহ নিশ্চিত করলে ক্রেতারা বেশি মূল্য দিতে আগ্রহী হবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের দর-কষাকষির সক্ষমতা কম, যা পণ্যের দাম কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি ১০.৬৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২৬.৭৯ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।

এর মধ্যে ইইউতে রপ্তানি ১৩.৪২ বিলিয়ন ডলার (৫০.১০%), যুক্তরাষ্ট্রে ৫.০৬ বিলিয়ন ডলার (১৮.৯১%), কানাডায় ৮৪৫ মিলিয়ন ডলার (৩.১৬%), যুক্তরাজ্যে ২.৯৩ বিলিয়ন ডলার (১০.৯৪%) হয়েছে।

ইইউতে রপ্তানি পোশাকের দাম আগের বছরের তুলনায় ১১.৫৩ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ১৬.৩৮ শতাংশ ও কানাডায় ১৪.১২ শতাংশ বেড়েছে। বিজিএমইএর তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যে পোশাক রপ্তানি ৩.৭৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

অন্যান্য দেশে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ৬.২৩ শতাংশ বেড়ে ৪.৫২ বিলিয়ন ডলার হয়েছে, যা মোট রপ্তানির ১৬.৯০ শতাংশ।

ফাহিম/

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে