ঢাকা, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

সংখ্যালঘু নির্যাতন : ভারতীয় প্রপাগান্ডা

২০২৫ ফেব্রুয়ারি ২৩ ১১:১১:০১
সংখ্যালঘু নির্যাতন : ভারতীয় প্রপাগান্ডা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা এবং তাদের ওপর নির্যাতনের সম্পর্কিত ভারতীয় এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়ার অভিযোগের সত্যতা। জালাল উদ্দিন ওমর ভারতের মিডিয়া এবং কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তির দ্বারা বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি নির্যাতন এবং সহিংসতার মিথ্যা প্রচারণা নিয়ে আলোচনা করেছেন।

৫ আগস্ট, ২০২৫ সালে আওয়ামী লীগের সরকারের পতনের পর দেশটিতে একটি ঐতিহাসিক রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটে। তখন শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসন শেষে ক্ষমতাচ্যুত হয় এবং শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। এর পরবর্তীকালে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়, যার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল সংস্কার কার্যক্রম এবং একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করা।

এ সময়ের মধ্যে বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যায় যে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং জনসাধারণ একযোগে কাজ করেছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষ করে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব শ্রেণির জনগণ মন্দির এবং হিন্দুদের বসতবাড়ির নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করে, যেটি বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি সহানুভূতির পরিচায়ক ছিল।

জালাল উদ্দিন ওমর দাবি করেছেন, শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর ভারত এবং কিছু মিডিয়া বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তোলে। তবে তিনি এ বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করার জন্য ভারতকে আহ্বান জানিয়েছেন। তার মতে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কোনো নির্যাতন বা হামলা ঘটলে, সেটা রাজনৈতিক কারণে হতে পারে, ধর্মীয় বিদ্বেষের কারণে নয়। বিশেষত, আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িতে হামলার বিষয়টি রাজনৈতিক প্রতিশোধের ফলস্বরূপ বলে তিনি মনে করেন।

তিনি যুক্তি দিয়েছেন, যদি হিন্দু সম্প্রদায়ের কোন নেতার বাড়িতে হামলা হয়ে থাকে, তবে তা ধর্মীয় কারণে হয়নি, বরং রাজনৈতিক কারণে হয়েছে। এর পাশাপাশি, তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, ইসলাম কখনোই সাম্প্রদায়িকতা বা সংখ্যালঘু নির্যাতনকে সমর্থন করে না। ইসলাম ধর্ম জাতিগত ও ধর্মীয় বৈষম্যের বিরুদ্ধে এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকে উৎসাহিত করে।

বাংলাদেশ একটি বহুজাতিক, বহুধর্মীয় দেশ হিসেবে পরিচিত, যেখানে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান এবং বিভিন্ন আদিবাসী সম্প্রদায় একত্রে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে। এ দেশের ঐতিহাসিক বাস্তবতা হলো—ধর্ম-বর্ণের মধ্যে কোনো বৈষম্য না করে একে অপরকে সমর্থন করা। এই প্রেক্ষাপটে, তিনি ভারতীয় মিডিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন যে, তারা সর্বদা বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি নির্যাতন তুলে ধরে, যা কখনোই প্রমাণিত হয়নি।

ভারতের এমন অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায়, জালাল উদ্দিন ওমর বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের জন্য নিরাপত্তা প্রদান একটি মুসলিম দেশের দায়িত্ব। ভারতকে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের জন্য নির্দিষ্ট কোনো সম্প্রদায় বা রাজনৈতিক দলের স্বার্থ রক্ষা না করে, বরং সাধারণ মানুষের স্বার্থে কথা বলতে হবে।

অতএব, তিনি উল্লেখ করেছেন যে, ভারতীয় মিডিয়ার পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ সমাজে বিভেদ সৃষ্টি করতে পারে এবং তা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার কারণ হতে পারে।

সংখ্যালঘুদের প্রতি সহানুভূতি এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রশ্নে, বাংলাদেশে যথেষ্ট প্রচেষ্টা রয়েছে। তবে, বিদেশি মিডিয়ার মিথ্যা প্রচারণা এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের জন্য বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের মিথ্যা অভিযোগ তুলে সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। এই ধরনের প্রচারণা দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে পারে, যা জাতির শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকে বিঘ্নিত করবে।

এনামুল/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে