ঢাকা, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

প্রবাসে বসে এনআইডি পেতে মানতে হবে তিন শর্ত

২০২৪ মে ০৫ ১২:৫১:৪৫
প্রবাসে বসে এনআইডি পেতে মানতে হবে তিন শর্ত

বিদেশে বসে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) করতে হলে বাধ্যতামূলকভাবে তিনটি শর্ত পূরণ করতে হবে। শর্ত তিনটি হলো- বৈধ পাসপোর্ট, জন্মনিবন্ধন ও রঙিন ছবি। নির্বাচন কমিশন (ইসি) এনআইডি ইস্যু করার ক্ষেত্রে প্রবাসীদের বৈধ পাসপোর্ট, জন্মনিবন্ধন ও রঙিন ছবি বাধ্যতামূলক করেছে ।

নির্বাচন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রবাসীদের এনআইডি সহজীকরণের লক্ষ্যে ছয়টি দেশে দূতাবাসের মাধ্যমে এনআইডি কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাজ্য, ইতালি, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার ও কুয়েত৷

এছাড়াও, প্রবাসীদের আধিক্য রয়েছে ভবিষ্যতে এমন আরো ৪০টি দেশে এই সেবা পর্যায়ক্রমে শুরু করবে নির্বাচন কমিশন।

ইতোমধ্যে যে সকল দেশে কার্যক্রম শুরু হয়েছে সেসকল দেশ থেকে ১০ হাজারের বেশি আবেদন পড়েছে। অনেকের আবেদন তদন্ত শেষে নিষ্পত্তিও করা হয়েছে।

ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, আবেদন যথাযথ না হওয়ায় অনেকের আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়নি। এক্ষেত্রে বৈধ পাসপোর্ট, জন্মনিবন্ধন ও রঙিন ফটো জমা দেয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অনেক প্রবাসী তা পূরণ করতে পারছে না।

সম্প্রতি দূতাবাসে কর্মরত এনআইডি কর্মকর্তাকে এই সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইসির সিস্টেম এনালিস্ট মোহাম্মদ আরিফুল ইসলামের পাঠানো ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বর্তমানে ছয়টি দেশ থেকে প্রবাসীদের ভোটার রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চলমান আছে।

উক্ত দেশের দূতাবাস/কনস্যুলার অফিসসমূহ থেকে যে সকল ভোটারের বায়োমেট্রিক গ্রহণ করা হয়েছে তার তদন্ত প্রতিবেদন দ্রুত সম্পন্ন করে সিস্টেমে তদন্ত প্রতিবেদন আপলোড করার জন্য জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ থেকে উপজেলা/থানা নির্বাচন কর্মকর্তাগণকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

দূতাবাস/কনস্যুলার অফিসে কোন কোন আবেদনকারীর বায়োমেট্রিক গ্রহণ করা হয়েছে এবং কোন কোন আবেদনকারীর বায়োমেট্রিক গ্রহণ করা হয়নি তা উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিস হতে দেখার সুযোগ রয়েছে।

এছাড়াও ছবি, জন্ম নিবন্ধন ও পাসপোর্ট সিএমএস এ অ্যাটাচ করা হয়েছে কিনা তাও দেখার সুযোগ রয়েছে। এই তিনটি ডকুমেন্ট তদন্তের ক্ষেত্রে উপজেলা/থানা নির্বাচন কর্মকর্তার জন্য সহায়ক হবে।

উল্লেখ্য, প্রবাসীদের ভোটার নিবন্ধনের জন্য ছবি, জন্ম নিবন্ধন, পাসপোর্ট এই তিনটি ডকুমেন্ট বায়োমেট্রিক গ্রহণের সময় জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে যা দূতাবাস/কনস্যুলার অফিস হতে কার্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে (সিএমএস) আপলোড করা বাধ্যতামূলক। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে জন্ম নিবন্ধন ও পাসপোর্ট সংযুক্ত করা হলেও কালার ছবি দূতাবাস/কনস্যুলার অফিস হতে সিএমএস এ সংযুক্ত করা হচ্ছে না।

এদিকে বায়োমেট্রিক গ্রহণ করার পর সিস্টেমে বায়োমেট্রিক গ্রহণ করা হয়েছে কিনা এই স্ট্যাটাস আপডেট দিতে দেরি হচ্ছে। বিষয়গুলো সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাস/কনস্যুলার অফিসের জন্য এনআইডি হতে দায়িত্বপ্রাপ্ত টেকনিক্যাল কর্মকর্তাকে নিশ্চিত করতে হবে।

এদিকে ইসি কর্মকর্তারা জানান, কোনো ডকুমেন্ট বাদ পড়লে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আবেদন বাতিল না করতে নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। এক্ষেত্রে আবেদনটি পেন্ডিং রেখে তথ্য চাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে কোনো তথ্য বাদ পড়লে তা পরবর্তীতে দেওয়ার সুযোগ রয়েছে প্রবাসীদের।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রবাসীদের অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসের মাধ্যমে এনআইডি পৌঁছে দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করে ইসি। আবেদনে ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে বলে মনে করছেন ইসি কর্মকর্তারা। তবে সকল কাগজপত্র না থাকায় অনেকেই আবেদন করছেন না বলেও পর্যবেক্ষণ তাদের।

ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, পাসপোর্ট ছাড়া কারও আবেদন আমরা আমলে নিচ্ছি না। এক্ষেত্রে যারা অবৈধভাবে বিদেশে থাকেন তাদের জন্য আমরা কিছু করতে পারি না। কারণ নীতিমালা অনুযায়ী অবৈধভাবে বসবাসকারী বা যাদের বৈধ পাসপোর্ট নেই তাদের আবেদন বিবেচনায় নেয়ার সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, অনেকে আবেদন করলেও তদন্তে সত্যতা পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে তাদের আবেদন খারিজ হয়ে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের দেশে আসার পর আবেদন করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা পেয়ে কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০১৯ সালে প্রবাসে এনআইডি সরবরাহের উদ্যোগটি হাতে নেয়। এরপর ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের অনলাইনের ভোটার করে নেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করে ইসি। এর আগে ২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রবাসীদের মাঝে এ কার্যক্রম শুরু করা হয়।

তার আগে একই বছর ৫ নভেম্বর মালয়েশিয়ায় অবস্থারত বাংলাদেশিদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি এবং স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার অংশ হিসেবে অনলাইনে আবেদন নেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। এরপর সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর ও মালদ্বীপে থাকা বাংলাদেশিদের জন্যও এ সুযোগ চালু করা হয়।

তখন অনলাইনে আবেদন করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উপজেলা থেকে আবেদন যাচাই-বাছাই করে সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাস থেকে এনআইডি দেয়ার পরিকল্পনা ছিল। এরপর দূতাবাসের মাধ্যমে এই কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা করোনা মহামারির কারণে বন্ধ হয়ে যায়।

কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর কার্যক্রম পুনরুজ্জীবিত করে। এক্ষেত্রে তারা আগের আবেদনগুলো বাইপাস করে নতুন কার্যক্রম শুরু করেছে।

শেয়ারনিউজ, ০৫ মে ২০২৪

পাঠকের মতামত:

প্রবাস এর সর্বশেষ খবর

প্রবাস - এর সব খবর



রে