ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

কর্মীসংকট মোকাবেলায় প্রবাসী শিক্ষার্থীদের দিকে তাকিয়ে জার্মানি

২০২৪ এপ্রিল ২৯ ১১:৪৯:২৮
কর্মীসংকট মোকাবেলায় প্রবাসী শিক্ষার্থীদের দিকে তাকিয়ে জার্মানি

প্রবাস ডেস্ক : জার্মানিতে দক্ষ শ্রমিকের ঘাটতি দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পর্যাপ্ত কর্মীর অভাব এবং বয়স্ক জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণেই এই আশঙ্কা করা হচ্ছে।

জার্মানির পরিসংখ্যান অফিসের তথ্য অনুসারে, পর্যাপ্ত শ্রমিকের অভাব এবং বয়স্ক জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে ২০৩৫ সালের মধ্যে জার্মানিতে ৭০ লাখ দক্ষ কর্মী ও শ্রমিকের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।

এই সমস্যা সমাধানে দেশটির শ্রমবাজারে প্রবাসী শিক্ষার্থীদের প্রবেশের বা অন্তর্ভুক্তির বিষয় বিবেচনা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে ভারতীয় শিক্ষার্থীদের প্রবেশের বা অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

জার্মানিতে এই মুহূর্তে প্রায় ৭ লাখ চাকরির সুযোগ থাকলেও তা পূরণ হচ্ছে না। দেশটিতে বর্তমানে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মাত্রা শূন্য দশমিক ৭ শতাংশে নেমে এসেছে।

১৯৮০-এর দশকে এটা ছিল ২ শতাংশ। এ সমস্যার সমাধান না হলে জার্মানির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শূন্য দশমিক ৫ শতাংশে নেমে যেতে পারে।

জার্মানির অর্থমন্ত্রী রবার্ট হ্যাবেক জানিয়েছেন, এই সমস্যা সমাধানে অভিবাসন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এ সমস্যা সমাধানে দেশের শ্রমবাজারে ভারতীয় শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্তির কথা ভাবা হচ্ছে।

প্রবাসী শিক্ষার্থীদের সুযোগ প্রদান

জার্মানির পরিসংখ্যান অফিসের তথ্য বলছে, জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এই মুহূর্তে প্রায় ৪৩ হাজার ভারতীয় শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে।

জার্মান একাডেমিক এক্সচেঞ্জ সার্ভিসের মুখপাত্র মাইকেল ফ্ল্যাকের মতে, দেশটির মোট শিক্ষার্থীর মধ্যে বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১৪ শতাংশ।

তিনি জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক ছাত্ররা প্রায়ই ‘তথাকথিত যোগ্য অভিবাসী’ হয়। কারণ, তাঁরা ইতিমধ্যেই জার্মানিতে বাস করার পাশাপাশি জার্মান ভাষা শিখে ফেলেছেন।

তিনি বলেছেন, ‘একই সময়ে আমরা জানি যে জার্মান ভাষা শেখা, জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের পথ খুঁজে বের করা এবং শ্রমবাজারে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের প্রবেশ বিশেষ চ্যালেঞ্জের সৃষ্টি করবে।’

রেজেনসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসংস্থান গবেষণা বিশেষজ্ঞ এনজো ওয়েবার বলেন, জার্মানির উচিত দক্ষ শ্রমিকের জন্য বিদেশের দিকে নজর দেওয়া। কারণ, ক্রমবর্ধমান প্রবীণদের সংখ্যা এবং দক্ষ কর্মীর অভাবের কারণে দেশটিতে কাজ করার মতো পর্যাপ্ত কর্মী নেই।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সুযোগ প্রদানের মাধ্যমে, রাষ্ট্র শুধুমাত্র দক্ষ লোকদের আকৃষ্ট করছে না বরং ভবিষ্যতের চাকরির জন্য আরও বেশি লোককে প্রশিক্ষণ দেওয়ার লক্ষ্য রাখে।

জার্মানির সাম্প্রতিক ‘স্কিলড ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট’ বা দক্ষ অভিবাসন আইনে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের প্রতি সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা কাজ করার অনুমতি দেবে। এ সময় আগের সময়সীমার দ্বিগুণ।

জার্মানির ড্রেসডেন ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজিতে পিএইচডি করছেন ভারতীয় শিক্ষার্থী সুরিয়ানশ। ৩৫ বছর বয়সী এই শিক্ষার্থী বলেন, নতুন আইনে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করা সহজ হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আপনার যদি সঠিক দক্ষতা থাকে এবং ভালো বেতন পান তবে এ দেশে ভালো জীবন কাটাবেন। এমনকি স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগও পেতে পারেন।’

সুরিয়ানশ বলেন সেমিকন্ডাক্টর এবং কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ আছে। তিনি ও তাঁর বন্ধুরা তাঁদের পড়াশোনা শেষ করার পর দ্রুত চাকরির সুযোগ পেয়েছিলেন। তাঁর ল্যাবে অনেকে দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে চাকরির প্রস্তাব পেয়েছেন বলেও জানান তিনি।

এদিকে, এনজো ওয়েবারের মতে, নতুন অভিবাসন আইন যোগ্যতাকে অগ্রাধিকার দিলেও, জার্মান শিক্ষা ব্যবস্থার জটিলতার কারণে এখনও অনেক সমস্যা রয়ে গেছে।

তিনি মনে করেন, ডিজিটালাইজেশন এবং শিক্ষাব্যবস্থার সাথে ব্যবহারিক জিনিসগুলোর সমন্বয়ের ওপরই এই আইনের সার্থকতা নির্ভর করে।

শেয়ারনিউজ, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

পাঠকের মতামত:

প্রবাস এর সর্বশেষ খবর

প্রবাস - এর সব খবর



রে