ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

কাগজে-কলমে থাকলেও ২৬৯৫ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গায়েব!

২০২৪ এপ্রিল ০৮ ১৫:৫০:২৯
কাগজে-কলমে থাকলেও ২৬৯৫ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গায়েব!

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন দেওয়া হয়। সেগুলোর অনেকগুলো কাগজে কলমে বিদ্যমান। কিন্তু বাস্তবতা বলছে অন্য কথা। এসব ‘অনুমোদন প্রাপ্ত’ স্কুলের কার্যত কোনও অস্তিত্বই নেই। অন্য কারোর নয়, বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) তথ্যেই উঠে এসেছে এই চিত্র।

ব্যানবেইসের তথ্য অনুসারে, এখন বাংলাদেশে মাধ্যমিক স্তরের স্কুল আছে আছে ১৮ হাজারের বেশি। ‘স্কুল অ্যান্ড কলেজ’ আছে প্রায় দেড় হাজার। কলেজ আছে ৩৩৪১ টি, মাদ্রাসা ৯২৫৯ টি, কারিগরি প্রতিষ্ঠান ৫৩৯৫ টি এবং বিশ্ববিদ্যালয় আছে ১৭১টি।

ব্যানবেইসের তথ্য অনুসারে, এর সঙ্গে শিক্ষা বিভাগের অনুমোদন থাকা (এডুকেশনাল ইনস্টিটিউট আইডেনটিফিকেশন নম্বর) ২৬৯৫ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম গত কয়েক বছরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যেগুলিতে এখন পড়াশোনা হচ্ছে না সেগুলি মূলত বেসরকারি স্কুল বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

শিক্ষাদান বন্ধ থাকলেও এখনও সেগুলির ইআইআইএন নম্বর আছে। কর্মকর্তারা জানান, এখনও ওই স্কুলগুলির শিক্ষা বোর্ডের অনুমোদন বাতিল হয়নি। তাই এই প্রতিষ্ঠানগুলিকে কাগজপত্রে এখনও বন্ধের তালিকাভুক্ত করা হয়নি।

ব্যানবেইসের কর্মকর্তারা জানান, ‘বাংলাদেশ শিক্ষা পরিসংখ্যান’ প্রতিবেদনের জন্য তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে এই বিষয়টি জানতে পেরেছেন তাঁরা।

ওই কর্মকর্তারা জানান, যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ হয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিদ্যালয়। গত কয়েক বছরে ১২৭৪টি স্কুলে শিক্ষাদান কার্যক্রম বন্ধ হয়েছে। এই তালিকায় অনেকগুলি কলেজও আছে।

স্কুলের জায়গায় বহুতল

অনুমোদিত স্কুলগুলোর মধ্যে রয়েছে ওয়েস্টার্ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি 2006 সালে ঢাকার কাঁটাবনে প্রতিষ্ঠিত হয়। তবে ব্যানবেইসের তথ্য অনুযায়ী, বাস্তবে এই প্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষা কার্যক্রম নেই। একটি হাউজিং কোম্পানি এখন একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করছে যেখানে বিদ্যালয়টি অনুমোদিত হয়েছিল।

২০২১ থেকেই সেই কাজ চলছে বলেও জানতে পেরেছে ব্যানবেইস। যদিও ওই প্রতিষ্ঠানের তরফে তানভীর হক দাবি করেন, করোনার সময়ে স্কুল বন্ধ হয়। সেখানে পড়াশোনার বিষয়টি আপাতত ‘স্থগিত’ আছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

ঢাকার কলাবাগানের লেক সার্কাস এলাকার একটি ঠিকানায় একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকার তথ্য থাকলেও সেখানে গিয়ে সেটিরও অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

কেন এই অবস্থা?

শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত অনেকেই জানান, নানা রকম ‘ফন্দিফিকির’ করে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনুমোদন পেয়ে যায়। বেশ কিছু লাভের আশায় ওই স্কুল করা হয়। কিন্তু না হওয়ার পরে অনেকেই হাল ছেড়ে দেন।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অধ্যাপক জিয়াউল হক বলেন, 'অপ্রয়োজনীয়ভাবেও অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। কিন্তু সেগুলিতে মানসম্মত শিক্ষক, পরিকাঠামো থাকে না। ফলে একটা সময় পরে ওই প্রতিষ্ঠানগুলি আর চলে না।'

তাঁদের মতে, শিক্ষা বোর্ডগুলির উচিত এই ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনুমোদন বাতিল করে দেওয়া।

শেয়ারনিউজ, ০৮ এপ্রিল ২০২৪

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে