ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর ২০২৫
Sharenews24

বিএনপি নমিনেশনেই হারাইলো ৫০ সিট

২০২৫ নভেম্বর ০৬ ০৮:৫১:০১
বিএনপি নমিনেশনেই হারাইলো ৫০ সিট

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশিষ্ট ব্লগার পিনাকি ভট্টাচার্য সম্প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী কৌশল নিয়ে একটি বিস্তারিত বিশ্লেষণ করেছেন। তিনি বিএনপির প্রার্থী তালিকা ঘোষণার সিদ্ধান্তকে একটি রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে দেখছেন এবং এর মাধ্যমে দলের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে গভীর ধারণা দিয়েছেন।

১. বড় দলগুলোর প্রার্থী ঘোষণার কৌশল

পিনাকি ভট্টাচার্য ব্যাখ্যা করেছেন যে, বড় রাজনৈতিক দলগুলো প্রার্থী তালিকা দেরিতে ঘোষণা করে নানা ধরনের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায়। এর মধ্যে রয়েছে:

স্থানীয় জোট ও দর-কষাকষি: দেরিতে প্রার্থী ঘোষণা করলে দলগুলো স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন জোট গঠন এবং সমঝোতার জন্য সময় পায়। এটি তাদের সহায়তা করে প্রতিপক্ষ দলের থেকে কিছু আসন ছিনিয়ে আনতে বা নিজেদের প্রভাবশালী নেতাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে।

সম্ভাব্য বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ন্ত্রণ: দলগুলো বিলম্বে প্রার্থী ঘোষণা করে যাতে যারা মনোনয়ন থেকে বাদ পড়েন, তাদের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে দল বিরোধী ক্যাম্প গঠন করতে না হয়।

গণমাধ্যমের মনোযোগ ব্যবস্থাপনা: বড় দলগুলি যখন প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে, তখন এটি একটি “media moment” হয়ে দাঁড়ায়। সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে রাজনৈতিক আলোচনা দীর্ঘায়িত করার সুযোগ মেলে, যা দলের প্রচারণাকে আরও শক্তিশালী করে।

২. তিনটি নির্বাচন এবং দেরিতে প্রার্থী ঘোষণা

পিনাকি ভট্টাচার্য বাংলাদেশের নির্বাচনগুলোর ইতিহাস তুলে ধরে জানিয়েছেন কিভাবে বড় দলগুলো নির্বাচনী প্রার্থী তালিকা সময়মতো ঘোষণা করেছিল:

২০০৮ সালের নির্বাচন: তফসিল ঘোষণার ১৫-২০ দিন আগে প্রধান দলগুলো প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছিল।

২০১৪ সালের নির্বাচন: তফসিল ঘোষণার ৩০ দিন আগে আওয়ামী লীগ প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে, কিন্তু বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ নেয়নি।

২০১৮ সালের নির্বাচন: এই নির্বাচনেও প্রার্থী তালিকা প্রায় ৩০-৩৫ দিন আগে ঘোষণা করা হয়।

৩. দেরিতে প্রার্থী ঘোষণার পিছনের কারণ

পিনাকি আরও বিশ্লেষণ করেন যে, বড় দলগুলো কেন দেরিতে প্রার্থী ঘোষণা করে:

স্থানীয় জোট ও সমঝোতা: দেরিতে প্রার্থী ঘোষণার মাধ্যমে দলগুলো স্থানীয়ভাবে জোট গঠন করতে এবং সমঝোতা করতে পারে।

বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ন্ত্রণ: আগেভাগে প্রার্থী ঘোষণা করলে বিদ্রোহী প্রার্থীরা প্রার্থী হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে পারে, যা দলের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

বিপক্ষ দলের কৌশল জানা: বড় দলগুলো আগেভাগে প্রতিপক্ষ দলের প্রার্থী তালিকা পর্যালোচনা করতে পারে, এর ফলে তারা আগাম প্রস্তুতি নিতে পারে এবং নিজেদের কৌশল গড়ে তুলতে পারে।

৪. নির্বাচনের অর্থনীতি

পিনাকি জানান, নির্বাচনের একটি নির্দিষ্ট অর্থনীতি রয়েছে, যেখানে দলের প্রার্থী ঘোষণা করার সময়কাল প্রভাব বিস্তার ও অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বড় দল যত দেরিতে প্রার্থী চূড়ান্ত করে, তত বেশি তারা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব ধরে রাখতে পারে।

৫. বিএনপির প্রার্থী তালিকা এবং ভুল বিশ্লেষণ

বিএনপির প্রার্থী তালিকা নিয়ে পিনাকি ভট্টাচার্য মনে করেন যে, দলের নেতা খালেদা জিয়াকে তিনটি আসনে মনোনয়ন দেওয়া হলো—যা তিনি “মহাভুল” হিসেবে দেখছেন। তার মতে, খালেদা জিয়া এবার তিনটি আসনেই হেরে যাবেন এবং বিএনপি ৪০ থেকে ৫০টি আসন হারাবে। পিনাকি আরও মনে করেন যে, বিদ্রোহী প্রার্থীরা বিএনপি থেকে অন্য দলে চলে যেতে পারেন এবং বিএনপির নির্বাচনী কৌশল এবার এমন থাকবে—"আগে হারবে, পরে জিতবে"।

৬. অন্তর্বর্তীকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতি

পিনাকি ভট্টাচার্য বাংলাদেশের রাজনীতির ভিতরে গোঁজামিল, জোট ও দরকষাকষির কৌশলগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন এবং বিশেষভাবে বিএনপির বর্তমান কৌশল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তার বিশ্লেষণে বিএনপির প্রার্থী তালিকার ঘোষণার সময় এবং কৌশল নিয়ে গভীর চিন্তা-ভাবনার প্রকাশ পায়।

এই বিশ্লেষণের মাধ্যমে পিনাকি ভট্টাচার্য বাংলাদেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়া এবং রাজনৈতিক কৌশলের অন্তর্নিহিত দিকগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দিয়েছেন।

মুসআব/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে