ঢাকা, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫
Sharenews24

সব অভিযোগের জবাব দিলেন জুলকারনাইন সায়ের

২০২৫ মে ২৭ ১২:৩৮:০৮
সব অভিযোগের জবাব দিলেন জুলকারনাইন সায়ের

নিজস্ব প্রতিবেদক: সম্প্রতি আল জাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকার নাইন সায়েকে নিয়ে একটি নেটিজেন মনোয়ার পাটোয়ারি ফেসবুকে একটি চাঞ্চল্যকর ও নেতিবাচক পোস্ট করেছেন। ওই পোস্টে মনোয়ার পাটোয়ারি সাংবাদিক সায়ের বিরুদ্ধে নানা গুরুতর অভিযোগ এনেছেন, যা দেশে এবং আন্তর্জাতিক সাংবাদিক মহলে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে।

মনোয়ার পাটোয়ারি তার পোস্টে উল্লেখ করেন, জুলকার নাইন সায়ের বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন, বিশেষ করে ২০২৩ সালে ইউরো নিউজ হাঙ্গেরিতে তার নিয়ে প্রকাশিত এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন উল্লেখযোগ্য। তিনি বলেন, জুলকার নাইন সায়ের, যিনি জুলকারনাইন সায়ের খান, সায়ের সামি বা তানভীর সাদাত নামে পরিচিত, মাঝে মাঝে নিজেকে বাংলাদেশের অনুসন্ধানী সাংবাদিক ও কাতারের আল জাজিরা নিউজ চ্যানেলের বিশ্লেষক হিসেবেও পরিচয় দেন।

মনোয়ার পাটোয়ারি দাবি করেন, সায়েরের চারটি বাংলাদেশী পাসপোর্ট রয়েছে এবং তার একটি হাঙ্গেরিয়ান আইডি কার্ডও রয়েছে। তিনি হাঙ্গেরির বুদাপেস্ট শহরে ‘কারি হাউস’ নামে একটি ভারতীয় রেস্তোরাঁ পরিচালনা করেছেন। তবে, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুসারে, ওই রেস্তোরাঁ চালানোর আড়ালে সায়ের অবৈধ কার্যকলাপে জড়িত ছিলেন এবং হাঙ্গেরি সরকারের কাছে এর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।

মনোয়ার আরও বলেন, সায়ের আন্তর্জাতিক অস্ত্র পাচার এবং মাদক পাচারসহ বিভিন্ন অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহ রয়েছে। ২০২২ সালের ২০ মে যুক্তরাজ্যে ‘সামস ইনকর্পোরেটেড লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন তিনি, যা মাদক পাচার ও অর্থপাচারের সঙ্গে যুক্ত বলে মনে করা হচ্ছে।

২০১৬ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর বুদাপেস্টে একটি বড় বিস্ফোরণে দুই পুলিশ কর্মকর্তা গুরুতর আহত হন। এই হামলার পরিকল্পনাটি কারি হাউজ রেস্তোরাঁতেই চূড়ান্ত করা হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। উল্লেখ্য, ওই রেস্তোরার মালিক জুলকার নাইন সায়েরই।

মনোয়ার পাটোয়ারি আরও দাবি করেন, সায়েরের ভাই হাঙ্গেরিতে তাজভীর বিয়ার নামে একটি বিয়ার কোম্পানি পরিচালনা করেছেন এবং হাঙ্গেরির ভারতীয় দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।

এইসব গুরুতর অভিযোগের জবাবে জুলকার নাইন সায়ের সরাসরি প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “এইসব বিষয় নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার খুবই বিরক্তিকর। আমি যদি হামাসের সাথে কোনো আর্থিক যোগাযোগ রাখতাম, তাহলে অনেকেই জানত। বুদাপেস্টে আমার ব্যবসা ও ভারতীয় রেস্তোরাঁ ছিল, যার কারণে ভারতীয়দের সঙ্গেও ভালো সম্পর্ক ছিল। আমার শ্বশুর সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার এবং তিনি ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক হতে পারেননি, কিন্তু আমি তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছি—এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন।”

সায়ের আরও জানান, মনোয়ার পাটোয়ারি ও তার অনুসারীরা তার বিরুদ্ধে নানা মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, “আমার শৈশবের ঘটনাবলী এবং আমার পরিবারের বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। আমি কখনো কোনো এজেন্সির হয়ে কাজ করিনি।”

মনোয়ার পাটোয়ারি নিজেও পাল্টা কঠোর আক্রমণ করেন এবং সায়েরের বিভিন্ন কার্যকলাপ ও যোগসাজশের দিক থেকে সন্দেহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “আমরা দেশের স্বার্থে সত্য উদঘাটন করবো এবং কারো ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক স্বার্থের জন্য কখনো মাথা নত করব না।”

এই বিতর্ক নিয়ে সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলে আলোচনা প্রবল হচ্ছে। সংবাদমাধ্যম এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে এই দুই পক্ষের বক্তব্য প্রকাশ পাচ্ছে এবং জনগণ বিভিন্ন রকম মতামত প্রদান করছেন।

মুয়াজ/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে