ঢাকা, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫
Sharenews24

মেট্রোরেলের সচিবালয় স্টেশনে যে কারণে উত্তেজনা

২০২৫ মার্চ ১৭ ১০:৩১:১৩
মেট্রোরেলের সচিবালয় স্টেশনে যে কারণে উত্তেজনা

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা ম্যাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে মেট্রোরেলের চার কর্মীকে মৌখিক এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে মেট্রোরেলের স্টাফরা কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

গত ১৬ মার্চ বিকেলে সচিবালয় মেট্রোস্টেশনে এই ঘটনা ঘটে। জানা যায়, বিকাল ৫:১৫টার দিকে দুজন নারী সিভিল ড্রেসে, কোনো পরিচয়পত্র ছাড়াই এবং বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ করে মেট্রোস্টেশনে আসেন। তারা এক্সেস ফেয়ার অফিসের (ইএফও) পাশে সুইং গেট ব্যবহার করে পেইড জোন থেকে বের হতে চান। এসময় কর্তব্যরত কাস্টমার রিলেশন অ্যাসিস্ট্যান্ট (সিআরএ) তাদের কাছে কারণ জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যরা উত্তেজিত হয়ে তর্কে জড়িয়ে পড়েন এবং পরে এমআরটি পুলিশের কন্ট্রোল রুমে চলে যান।

ওই সময় দায়িত্বে থাকা মেট্রোরেল কর্মীদের অভিযোগ, পরবর্তীতে একইভাবে দুজন এপিবিএন সদস্য সুইং গেট ব্যবহার করে গেট না লাগিয়ে চলে গেলে দায়িত্বরত সিআরএ তাদের কারণ জানতে চান। এসময় তারা আগের ঘটনার জের ধরে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। কিছুক্ষণ পর পুলিশের কন্ট্রোল রুম থেকে আরও কয়েকজন পুলিশ সদস্য এসে দায়িত্বপ্রাপ্ত মেট্রোরেলের সিআরএ-এর সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন এবং এক পর্যায়ে এক পুলিশ সদস্য এক কর্মীর কাঁধে রাইফেল দিয়ে আঘাত করেন। এছাড়া, এক টিকিট মেশিন অপারেটরের (টিএমও) শার্টের কলার ধরে জোরপূর্বক এমআরটি পুলিশ বক্সে নিয়ে গিয়ে মারধর করেন এবং গুলি করার জন্য বন্দুক তাক করেন।

পরে উপস্থিত স্টেশন স্টাফ ও যাত্রীদের হস্তক্ষেপে ওই পুলিশ সদস্যদের হাত থেকে আহত কর্মীকে উদ্ধার করা হয়। উভয়পক্ষই হাতাহাতির ফলে আহত হওয়ার অভিযোগ করেছে।

এই পরিস্থিতি মেট্রোরেল কর্মপরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ। রাইফেল দিয়ে আঘাতপ্রাপ্ত সিআরএ-কে তাৎক্ষণিক চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ কন্ট্রোল রুমে হেনস্তার শিকার টিএমও ঘটনার বিবৃতি দেওয়ার পর বাসায় ফেরার পথে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং জ্ঞান হারান।

মেট্রোরেল স্টাফদের ছয় দফা দাবি

এই ঘটনার পর, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) স্টাফরা ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেছেন:

১. ঘটনার মূল হোতা এসআই মাসুদকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের (কনস্টেবল রেজনুল, ইন্সপেক্টর রঞ্জিত) শাস্তি প্রদান ও প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।

২. মেট্রোরেল, স্টাফ এবং যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলতে হবে।

৩. এমআরটি পুলিশকে অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।

৪. স্টেশনে কর্মরত সিআরএ, টিএমও, স্টেশন কন্ট্রোলারসহ সকল কর্মীদের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

৫. অফিসিয়াল পরিচয়পত্র ও অনুমতি ছাড়া কেউ যেন পেইড জোনে প্রবেশ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে।

৬. আহত কর্মীদের সম্পূর্ণ চিকিৎসার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে।

মেট্রোরেলের সকল স্টাফ কর্মবিরতি পালন করবেন এবং প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন, যদি তাদের দাবি পূরণ না হয়।

আরিফ/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর