ঢাকা, শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

পদত্যাগের কারণ জানালেন রিফাত রশিদ

২০২৫ ফেব্রুয়ারি ২৮ ১২:১৬:৩১
পদত্যাগের কারণ জানালেন রিফাত রশিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক : জুলাই আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক রিফাত রশিদ একদিনের ব্যবধানে পদত্যাগ করেছেন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (ডিএসএস) থেকে। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে সংগঠনটির সিনিয়র সদস্য সচিব পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন তিনি। একই সময় তিনি সংগঠনের আত্মপ্রকাশকে কেন্দ্র করে মধুর ক্যান্টিনে সৃষ্ট বিক্ষোভ এবং হাতাহাতির ঘটনা বিষয়ে নিজের অবস্থানও স্পষ্ট করেন।

রিফাত রশিদ জানিয়েছেন, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ কমিটিতে তার নাম ঘোষণার আগে তার সাথে কোনো প্রকার কনফার্মেশন নেওয়া হয়নি। তিনি জানান, "দফায় দফায় আলোচনা হলেও কোনো ফল হয়নি। এরপর অনুমতি ছাড়াই আমার নাম কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যা আমি মেনে নিতে পারিনি, তাই পদত্যাগ করেছি।"

রিফাত রশিদ আরও বলেন, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ একটি স্বতন্ত্র উদ্যোগ হলেও, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন (বৈছাআ) এর পুরো সাংগঠনিক কাঠামো, লিডারশিপ, এবং বৈছাআর ফেসবুক পেজ নতুন ছাত্রসংগঠনের প্রচারে ব্যবহৃত হয়েছে। তবে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে যারা সংগঠিত করেছে, তাদের কোনো মূল্যায়ন করা হয়নি। এর ফলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, সাত কলেজ, এবং অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরনের ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

রিফাত রশিদ জানান, সাত কলেজ ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অংশ হিসেবে সংগঠনের শীর্ষ পদের জন্য প্রতিনিধিত্ব চেয়েছিলেন। তবে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এবং কেন্দ্রীয় সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের প্রাধান্য দেওয়ায় বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়।

রিফাত রশিদ উল্লেখ করেছেন যে, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ছিল, কারণ তাদের প্রতিনিধিত্ব কমিটিতে সঠিকভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। তিনি বলেন, "অভ্যুত্থানের পর আমরা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংগঠিত করার জন্য কাজ করেছি, কিন্তু তাদের যে প্রত্যাশা ছিল, তা পূর্ণভাবে মেটানো হয়নি।"

রিফাত রশিদ জানান, তাকে প্রথমে সদস্য সচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল, পরে মুখ্য সংগঠক, এবং পরে মুখপাত্র করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তবে, তিনি একে একে সব পদ প্রত্যাখ্যান করেন এবং শেষে সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব পদে তার নাম প্রস্তাব করা হয়, যা তিনি ফের প্রত্যাখ্যান করেন। রিফাত রশিদ উল্লেখ করেন, "এই সংগঠনে আমি থাকবো না, সেটা আমি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছিলাম।"

সংগঠন গঠন প্রক্রিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন (বৈছাআ) সদস্যদের অংশগ্রহণে অসন্তোষ এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। সাত কলেজ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে টপ পদের জন্য একাধিকবার সমঝোতা এবং চুক্তি নিয়ে বিরোধ হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, "যখন আন্দোলনকারীরা টকশো করছে, সচিবালয়ে যাচ্ছে, বিদেশে বক্তৃতা দিচ্ছে, আমি তখন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছি, ঢাকার অলিগলিতে সংগঠন তৈরির কাজ করেছি। এটি ছিল আমার রাজনৈতিক কৌশল।"

রিফাত রশিদ তার পদত্যাগের পর সংগঠন গঠনের প্রক্রিয়ায় অন্যদের সমালোচনা করেন এবং বলেন, "আমাকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার ফলে ছাত্রসংগঠনটির মধ্যে বিভাজন তৈরি হয়েছে।"

এদিকে, রিফাত রশিদের পদত্যাগের পর গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ গঠন প্রক্রিয়ায় নতুন করে শীর্ষ নেতৃত্বের জন্য আলোচনা হতে পারে, তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যে আলোচনা এখনও চলছে।

আদনান/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে