ঢাকা, শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

নতুন রাজনৈতিক পার্টির শীর্ষ ৯ পদের ৮ জনই ঢাবি শিক্ষার্থী

২০২৫ ফেব্রুয়ারি ২৮ ১১:৩৯:১১
নতুন রাজনৈতিক পার্টির শীর্ষ ৯ পদের ৮ জনই ঢাবি শিক্ষার্থী

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের আধিপত্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে নতুন রাজনৈতিক দল 'জাতীয় নাগরিক পার্টি'র শীর্ষ পদের বিষয়ে। ঐতিহাসিক ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া সমন্বয়ক ও শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে এই দলটি আসছে। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৩টায় জাতীয় সংসদের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে এই তারুণ্যনির্ভর রাজনৈতিক দল।

‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ দলের শীর্ষ ৯টি পদের মধ্যে ৮টি পদের নেতৃত্ব ইতিমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এবং বর্তমান শিক্ষার্থীরা পেয়েছেন। দলের আহ্বায়ক হচ্ছেন নাহিদ ইসলাম, যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক ছাত্র। সদস্য সচিব আখতার হোসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ও ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক।

এছাড়া, দলের সিনিয়র নেতাদের মধ্যে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্য বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী সামান্তা শারমিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, এবং ইংরেজি ভাষা শিক্ষা বিভাগের ছাত্র আব্দুল হান্নান মাসউদ।

মুখ্য সংগঠক হিসেবে দক্ষিণাঞ্চলের হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং উত্তরাঞ্চলের সারজিস আলম এই দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। দপ্তর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সালেহ উদ্দিন সিফাত, যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী।

এ বিষয়ে অনেকেই মনে করছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আধিপত্য থাকা সত্ত্বেও দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সরকারের পতন আন্দোলনে সমানভাবে অবদান রেখেছিল। তবে নতুন রাজনৈতিক দলটির শীর্ষ নেতৃত্বে ঢাবি শিক্ষার্থীদের প্রাধান্য নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

এর আগে, ২০১৮ সালের সরকার পতন আন্দোলনে ঢাবি শিক্ষার্থীদের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ, এবং সরকার গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে তিনজনই ঢাবি শিক্ষার্থী ছিলেন, যা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছিল।

এদিকে, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ’ নামের নতুন ছাত্র সংগঠনের আত্মপ্রকাশ হয়। ওই সংগঠনের শীর্ষ পদেও ঢাবি শিক্ষার্থীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। এই সংগঠনের উদ্বোধনী দিনেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সংগঠনের নেতৃত্ব ইস্যু নিয়ে বিক্ষোভ করেন, এবং তাদের বিরুদ্ধে বৈষম্যের অভিযোগ তোলেন। বিক্ষোভের ফলে মারামারি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

এদিকে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, তারা জুলাই আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও এই নতুন ছাত্র সংগঠনে যথাযথ প্রতিনিধিত্ব পাচ্ছেন না। তাদের অভিযোগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজেদের ইস্যু কেন্দ্রিক নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপেক্ষা করা হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৈষম্য নিয়ে নতুন রাজনৈতিক দলের গঠনে এবং ছাত্র সংগঠন গঠনে প্রশ্ন উঠছে। বিশেষ করে, যারা ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তারা কেন নিজেদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করলেন? এই সমস্যা সমাধানের জন্য কি তারা নতুন রাজনৈতিক শৃঙ্খলা বা উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারবে?

এখন দেখা যায়, ঢাবি শিক্ষার্থীদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা এবং রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃত্বে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বঞ্চনার ফলে প্রশ্ন ওঠছে, কীভাবে একটি দল দেশের সব শিক্ষার্থীর জন্য সমান প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করবে।

আদনান/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে