ঢাকা, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

হাসিনার নির্দেশে সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের ষড়যন্ত্রের চাঞ্চল্যকর তথ্য

২০২৫ জানুয়ারি ৩১ ১০:৫২:০৭
হাসিনার নির্দেশে সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের ষড়যন্ত্রের চাঞ্চল্যকর তথ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের কাছে এক চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট জমা পড়েছে, যা বাংলাদেশে গত ১৫ বছরে ঘটে যাওয়া নৃশংস গুমের ঘটনাগুলোর বিস্তারিত উন্মোচন করেছে। রিপোর্টে উঠে এসেছে যে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই এসব গুম ও গুপ্তহত্যার ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন। তার নেতৃত্বে এবং নির্দেশনায় একটি গোপন চক্র সক্রিয় ছিল, যেখানে সেনাবাহিনীর শীর্ষ তিন কর্মকর্তা—তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, ডিজিএফআই (প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা) এর সাবেক মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আকবর হোসেন এবং বরখাস্ত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান—এই চক্রের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিলেন।

প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক নেতাকর্মী, সরকার এবং ভারত বিরোধী যারা ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে এই গুম ও গুপ্তহত্যার নৃশংস পরিকল্পনা তৈরি করা হতো। শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশনায় পরিকল্পনা হতো কাকে অপহরণ করতে হবে, কাকে খুন করতে হবে এবং কিভাবে এসব গুমের ঘটনা আড়াল করা হবে। ভুক্তভোগীদের চোখ বেঁধে নির্জন জায়গায় নিয়ে তাদেরকে গুম করা হতো, আর অনেক ক্ষেত্রেই তাদের লাশও ফেরত দেওয়া হতো না।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা 'হিউম্যান রাইটস ওয়াচ' এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব গুমের ঘটনার পিছনে শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের সরাসরি হাত ছিল। উদাহরণস্বরূপ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমীর গুমের ঘটনার নেপথ্যে শেখ হাসিনার নির্দেশ ছিল বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া, গুম-হত্যার জন্য বরখাস্ত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানের নাম বিশেষভাবে উঠে এসেছে। তিনি ছিলেন এই নৃশংস চক্রের অন্যতম প্রধান।

গুমের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারগুলি এখনও জানে না তাদের প্রিয়জনদের কী হয়েছে। অনেকের মৃতদেহও পাওয়া যায়নি, আর যাদের মৃতদেহ ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে, তাদের অধিকাংশই তখনও শোকের মধ্যে আছেন। গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন ৭৫৮টি গুমের ঘটনা তদন্ত করে তাদের রিপোর্ট জমা দিয়েছে, যেখানে সেনাবাহিনী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বেশ কিছু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার নাম উঠে এসেছে।

এছাড়া, নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের মামলাও এই চক্রের আওতায় ছিল, যেখানে সেনাবাহিনী ও র‍্যাবের কর্মকর্তারা সরাসরি জড়িত ছিলেন। সুমনসহ আট জন নেতাকর্মীকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, এবং তাদের পরিণতি এখনও অজানা।

কমিশন এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এ ব্যাপারে আরও বিস্তারিত তদন্ত চালাচ্ছে, তবে রিপোর্টে থাকা তথ্য অনুযায়ী, শেখ হাসিনা এবং তার সহযোগীরা এই নৃশংস কার্যকলাপে জড়িত থাকার জন্য ভবিষ্যতে আরও বড় দায়ভার নিতে পারেন।

কেএইচ/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে