ঢাকা, শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

বাংলাদেশের বাইরে আমার কোনো ঠিকানা নেই: তারেক রহমান

২০২৪ সেপ্টেম্বর ২৩ ২২:০৭:৫৫
বাংলাদেশের বাইরে আমার কোনো ঠিকানা নেই: তারেক রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া বলেছিলেন, এই দেশের বাইরে তাঁর কোনো ঠিকানা নেই। বাংলাদেশের বাইরে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার কোনো ঠিকানা নেই।

দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সন্তান হিসেবে আজ আপনাদের সামনে একইভাবে আমিও বলতে চাই, ‘বাংলাদেশের বাইরে আমার কোনো ঠিকানা নেই। এই দেশই আমার ঠিকানা। এই দেশই আমার প্রথম ঠিকানা। এই দেশই আমার শেষ ঠিকানা।’

তিনি বলেন, এই দেশের জন্য, এই দেশের মানুষের ভালোবাসার জন্য আমাদের সকল রকমের প্রচেষ্টা থাকবে। এই দেশই আমাদের প্রথম, এই দেশই আমাদের শেষ বাংলাদেশ।

আজ সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের স্মরণে কিশোরগঞ্জের পুরাতন স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশে ভার্চ্যুয়ালি অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘আসুন আমরা সকলে মিলে প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করি যে শত হাজার মানুষ আত্মত্যাগ করেছেন স্বৈরাচারকে বিদায়ের জন্য, যে হাজারো মানুষ নিজেরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েও দমে যায়নি সে মানুষগুলোর আত্মত্যাগকে মূল্যায়ন করে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি। কেউ যেনো আমাদের ঐক্য নষ্ট করতে না পারে। কেউ যেনো আমাদের পিছিয়ে দিতে না পারে। সে ব্যাপারে আমাদের সজাগ ও সর্তক থাকতে হবে।’

তারেক রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশে হাজারো শহীদ আছেন যারা আত্মত্যাগ করেছেন বিগত ১৭ বছরে। বিশেষ করে গত জুলাই আগস্ট মাসেই হাজারো হাজারো মানুষ আছে যাদেরকে হত্যা করা হয়েছে ঢাকা শহরে। এর বাইরে বিভিন্ন মানুষ যারা বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বিএনপিরই ৬০ লাখ মানুষ বিগত স্বৈরাচার সরকারের সময় বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হয়েছেন। বিএনপির বাইরেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা নির্যাতিত হয়েছেন। কেনো তারা নির্যাতিত হয়েছে কারণ একটাই তারা বাংলাদেশের মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে চেয়েছিল।’

তারেক রহমান বলেন, ‘আজকে লাখো জনতার আত্মত্যাগের বিনিময়ে যে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই সরকার জনগণের রাজনৈতিক যে প্রত্যাশা, জনগণের রাজনৈতিক যে অধিকার যার জন্য বিগত ১৭ বছর বাংলাদেশের মানুষ সংগ্রাম করছে সেই অধিকার যেনো সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় তার জন্য তাঁরা পদক্ষেপ গ্রহণ করবে ‘

তিনি বলেন, ‘কিন্তু এটিও সর্তকভাবে খেয়াল রাখতে হবে যে, তাঁরা জনগণের এই কাজটি করতে গিয়ে জনগণের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে এমন কোনো পরিস্থিতির উদ্ভব না হয় যাতে করে স্বৈরাচার আবার কোনো ষড়যন্ত্র করার সুযোগ পায়। স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা বসে নেই।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, শুধুমাত্র রাজনৈতিক মুক্তি হলে, ‘রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা হলেই সকল কিছু হয়ে যায় না। বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক সংগ্রামেও আমাদের জয় পেতে হবে। তাহলেই আমাদের যে আন্দোলন সেটির কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হব।’

তিনি বলেন, ‘স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। আমরা যদি এই দেশের মানুষের হাতে তাদের অধিকার দিতে পারি, তাঁরা নেতৃত্ব নির্বাচিত করলে দায়িত্বপ্রাপ্ত সঠিক ব্যাক্তিগণ এই জাতিকে সঠিকভাবে নেতৃত্ব দিতে পারবে। যে নেতৃত্বের মাধ্যমে রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবে এবং অর্থনৈতিক মুক্তিও সম্ভব।’

তারেক রহমান আরও বলেন, ‘আপনারা কি জানেন, হাওর অঞ্চলে বোরো মৌসুমে যে পরিমাণ ধান হয় তাতে দেশের ১৬ শতাংশ ধান উৎপাদন হয়। ইটনা, মিঠামইন ও অস্টগ্রামে যে বিশাল হাওর আছে, এইখানে মিঠাপানির মাছের বিশাল ভান্ডার। আমরা যদি সঠিক পরিকল্পনা করতে পারি তবে এই অঞ্চলের মাছ দিয়ে দেশের চাহিদা পূরণ করে বাইরেও রপ্তানি করতে পারব।’

তিনি বলেন, ‘গার্মেন্টস শিল্পের মাধ্যমে বিশ্বমানচিত্রে বাংলাদেশের যেমন পরিচিতি একইভাবে মাছ রপ্তানি করে আমরা বাংলাদেশকে পরিচিতি করে দিতে পারব। যার মাধ্যমে যে শুধু বৈদিশিক মুদ্রা অর্জিত হবে তা নয় লাখো মানুষের কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা হবে। অস্টগ্রামের পনির সম্পর্কে মানুষ জানেই না। এই পনিরকে আমরা ছড়িয়ে দিতে পারি এবং বিশ্বে পরিচিত করাতে পারি। এতে বাংলাদেশের যেমন সুনাম অর্জিত হবে তেমনি বহু বেকার ভাই-বোনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘সেই কাজগুলো জনগণ দ্বারা নির্বাচিত একটি সরকার করতে পারবে। কারণ জনগণের সরকারের বাধ্যবাধকতা ও জবাবদিহিতা থাকবে জনগণের কাছে। যেহেতু জনগণের কাছে জবাবদিহিতা থাকবে সেহেতু জনগণের অভাব অভিযোগ তাদের শুনতে হবে। কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা সেই জনগণের সরকারকে দেখতে হবে। সেই জন্যই প্রয়োজন জনগণের সরকার।’

সমাবেশস্থ লোকে লোকারণ হয়ে যায়। যেন তিল ধারণের ঠাঁই নেই। জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলমের সভাপতিত্বে মহাসমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স প্রমুখ। মহাসমাবেশ পরিচালনা করেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম।

মামুন/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে