ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট ২০২৫
Sharenews24

দেশে ছাড়াও বিদেশে ৬ বাড়ি করেছেন পুলিশ কর্তা প্রলয় কুমার

২০২৪ সেপ্টেম্বর ২২ ১১:০৭:৩৪
দেশে ছাড়াও বিদেশে ৬ বাড়ি করেছেন পুলিশ কর্তা প্রলয় কুমার

নিজস্ব প্রতিবেদক : হাসিনা সরকারের পুলিশের অতিরিক্ত উপ মহাপরিদর্শক (অ্যাডিশনাল ডিআইজি) প্রলয় কুমার জোয়ারদার এলাকায় পরিপাটি একটা বাড়ি ও সামান্য সম্পদ করলেও অভিযোগ রয়েছে ক্ষমতার দাপটে শুধু দেশে নয় আমেরিকাসহ বিভিন্ন শহরে ৬টি বাড়ি করেছেন।

প্রলয় কুমার ঢাকার উত্তরায় সাততলা বাড়িসহ একাধিক ফ্ল্যাটও রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন দেশে বাড়ি এবং সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তিনি। এর মধ্যে ভারতের কলকাতা, চেন্নাই ও দিল্লিতে বাড়ি করেছেন। দিল্লিতে ডেভেলপার ব্যবসাও রয়েছে তার।

এই পুলিশ কর্মকর্তা বাড়ি করেছেন সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্যের লন্ডন শহরে ও আমেরিকায়। বিশেষ করে যেখানেই স্ত্রীর চিকিৎসা করেছেন সেখানেই তিনি বাড়ি করেছেন। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন শুরু হলে ছাত্র জনতাকে দমন করার জন্য অন্যতম পরিকল্পনাকারীও ছিলেন তিনি।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পুলিশ কর্মকর্তা অনেকেই আত্মগোপনে চলে যান। এরপর থেকে তারও কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। প্রলয় কুমার জোরদারের সাথে তার পরিবারের কারো কোন যোগাযোগ নেই বলে জানান তার বাবা।

অভিযোগ রয়েছে, প্রলয় কুমার জোয়ারদার নেত্রকোণার বারহাট্টা ঝিতন গ্রামের ধলাই নদী দখল করে করেছেন ফিশারি। জেলার বিভিন্ন এলাকায় ৪-৫’শ জনকে বিভিন্ন দপ্তরে চাকরি দিয়ে কোটি কোটি টাকা বাণিজ্য করেছেন । এছাড়া এলাকায় তৈরি করেছেন আধিপত্যের সাম্রাজ্য। তবে প্রলয় কুমার জোরদারের বাবার দাবি বিনা টাকায় চাকরি দিয়েছেন তার ছেলে।

আটপাড়া উপজেলা পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর পদে চাকরি পাওয়া একজন নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, ২০১০ সালের আগে আমি ৭ লাখ টাকা দিয়ে প্রলয় কুমার জোয়ারদার এর মাধ্যমে চাকরি পেয়েছি।

প্রলয় কুমার জোরদার এর বাবা উপেন্দ্র জোয়ারদার বলেন, আমার ছেলে বারহাট্টাসহ জেলায় প্রায় ৪-৫ শত মানুষের চাকরি দিয়েছে বিনা টাকায়। এজন্য মানুষ তাকে অনেক ভালোবাসে। পুত্রবধূ মারা যাওয়ার পর শ্রাদ্ধের অনুষ্ঠানে ৫-৭ হাজার লোক এসেছে। এটা সব মানুষের ভালোবাসার প্রতিফলন। তবে আন্দোলনের পর থেকে প্রলয়ের সাথে আমাদের আর কোনো যোগাযোগ নেই। এ নিয়ে আমরা খুব টেনশনে আছি।

প্রলয় কুমার জোয়ারদার বারহাট্টা উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঝিতন গ্রামের এক মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। তিনি প্রথমে এনএসআইয়ে চাকরি করেন। পরে চাকরি বিধি লঙ্ঘন করার কারণে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। পরে তথ্য গোপন করে ২৪তম বিসিএসে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হিসেবে যোগদান করেন।

২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তিনি শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত হয়ে ওঠেন। তাকে প্রধানমন্ত্রীর প্রোটোকল অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রটোকল অফিসার হিসেবে যোগদান করার পর থেকে শুরু হয় তার ক্ষমতার আধিপত্য, চাকরি বাণিজ্য। সেই সুবাদে প্রলয় কুমার জোয়ারদার বিজিবি, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, এনএসআই, ডিসি অফিস, জজ কোর্ট এবং স্থানীয় স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন দপ্তরে চাকরি বাণিজ্য শুরু করেন। কয়েক বছরে তিনি কোটি কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্য করেন। এসব চাকরি বাণিজ্য বিষয়টি হ্যান্ডেল করতেন তার ছোট ভাই শ্যামল জোয়ারদার।

প্রধানমন্ত্রী প্রটোকল অফিসার হওয়ার পর তিনি তার চাচা শ্বশুর স্বপন ভট্টাচার্যকে সংসদ নির্বাচনে যশোর-৫ মনিরামপুর আসন থেকে আওয়ামী লীগের এমপি নির্বাচিত করেন। ২০১৮ সালে নির্বাচিত হলে স্বপন ভট্টাচার্যকে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হন। মন্ত্রী হওয়ার পেছনেও সবচেয়ে বড় অবদান রাখেন প্রলয় কুমার জোয়ারদার।

এস/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে