ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

আপিল বিভাগের আদেশের পর কী কোটা আছে, না নেই?

২০২৪ জুলাই ১০ ২১:৫৯:২৭
আপিল বিভাগের আদেশের পর কী কোটা আছে, না নেই?

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগ সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দিয়েছেন।

দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের কোটা বিরোধী আন্দোলন চলছে। আজ বুধবার কোটার বিষয়ে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ আজ স্থিতাবস্থার আদেশ দেন।

এই আদেশের মানে কী, তা জানতে চাইলে রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী বলেন, এই আদেশের ফলে যে অবস্থায় আছে, সে অবস্থায় থাকবে। হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত থাকবে।

মনসুরুল হক চৌধুরী আরও বলেন, আপিল বিভাগ কিন্তু হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেননি। স্থিতাবস্থা দিয়েছেন। এক্ষেত্রে ভুল ব্যাখ্যাও দেখা যাচ্ছে। আপাতত নিয়োগে কোটা অনুসরণ করতে হবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপাতত দরকার হবে না। এদিকে, আপিল বিভাগের এই আদেশের ফলে আপাতত কোটা থাকছে না বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী।

অন্যদিকে একই রকম ব্যাখ্যা দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক। তবে তিনি বলেছেন, আন্দোলনকারীদের দাবি মানার ক্ষেত্রে সরকারের করণীয় আছে।

এর আগে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর কোটা সংস্কার আন্দোলনের মুখে সরকারি চাকরিতে ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত কোটাপদ্ধতি বাতিল করে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

তখন সরকারি চাকরিতে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা, ১০ শতাংশ নারী, ১০ শতাংশ জেলা, ৫ শতাংশ ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী এবং ১ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা ছিল। সব মিলিয়ে কোটা ছিল ৫৬ শতাংশ। মানে হলো, ১০০ জনকে নিয়োগের ক্ষেত্রে ৫৬ জনকে নিতে হতো কোটায়।

কোটা বাতিল করে সরকারের পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে রিট করেন চাকরিপ্রত্যাশী ও বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাতজন।

রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করে গত ৫ জুন রায় দেন হাইকোর্ট।

হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন চেম্বার আদালত হয়ে ৪ জুলাই আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে।

রিট আবেদনকারীপক্ষের সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে সেদিন আপিল বিভাগ নট টুডে (৪ জুলাই নয়) বলে আদেশ দেন। পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলা হয়। এই অবস্থায় কোটা পুনর্বহালসংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে দুই শিক্ষার্থী মঙ্গলবার (০৯ জুন) আবেদন করেন।

হাইকোর্টের রায়ের পর থেকেই শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা কোটা সংস্কারের দাবিতে আবার আন্দোলনে নামেন। তাঁরা আজ বুধবার তৃতীয় দিনের মতো ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করছেন। এতে আজও ঢাকায় অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। প্রধান সড়কগুলোতে যান চলাচল বন্ধ থাকায় পথচলতি মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।

আপিল বিভাগের আদেশের প্রতিক্রিয়ায় আন্দোলনকারীরা বলেছেন, আদালতের সঙ্গে তাঁদের আজকের আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই। তাঁরা সরকারের কাছে কোটা সমস্যার চূড়ান্ত সমাধান চাইছেন। যৌক্তিক সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা রাজপথ ছাড়বেন না।

‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’–এর সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা মূলত সরকারের নির্বাহী বিভাগের কাছেই কোটা সমস্যার চূড়ান্ত সমাধান চাইছি। এক দফা দাবি। এটি আদালতের এখতিয়ার নয়। এটি একমাত্র নির্বাহী বিভাগই পূরণ করতে পারবে। সরকারের কাছ থেকেই আমরা সুস্পষ্ট বক্তব্য আশা করছি।’

কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীরা মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে এক দফা দাবি ঘোষণা করেন। সেটি হলো, সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম মাত্রায় এনে সংসদে আইন পাস করে কোটাপদ্ধতিকে সংস্কার করা। তাঁরা বলছে, এই কাজ সরকারের।

মিজান/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে